জাবি ছাত্রীকে হেনস্তা, মৌমিতার ১৭টি বাস আটক

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৪, ০৯:৪৯ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা-সাভারগামী মৌমিতা পরিবহনের বাসের হেলপার কর্তৃক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক ছাত্রী হেনস্তার স্বীকার হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে মৌমিতা পরিবহনের ১৭টি বাস আটকে রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৫ মে) সকাল থেকে বাস আটক শুরু করে শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বাসগুলো আটক রাখে শিক্ষার্থীরা।
এর আগে, মঙ্গলবার (১৪ মে) সন্ধ্যায় সাভারের ব্যাংক টাউন এলাকা থেকে টিউশন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার পথে সাভারের রেডিও কলোনি এলাকায় হেনস্তার শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১ তম ব্যাচের এক ছাত্রী। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী।
অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী উল্লেখ করেন, আমি মঙ্গলবার সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে ব্যাংক টাউন থেকে টিউশন করিয়ে মৌমিতা বাসে করে ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে আসছিলাম। বাস চলাকালে হেলপার ভাড়া চাইলে আমি টাকা দেই। হেলপার বলে তার কাছে ভাংতি নাই, পরবর্তীতে আমাকে ভাংতি টাকা ফেরত দিবে। কিন্তু বাস রেডিও কলোনির কাছাকাছি আসার পর হেলপার জানায় বাস আর সামনে যাবে না। বাসের যাত্রীরা সবাই তখন নেমে চলে যায়। আমি তখন হেলপারকে ভাংতি টাকা ফেরত দেয়ার জন্য বললে হেলপার বলে, আপনাকে ঢাকা নিয়ে যাই।
আরো পড়ুন: ১৮তম নিবন্ধনের প্রিলির ফল প্রকাশ
ভুক্তভোগী তার অভিযোগপত্রে আরো উল্লেখ করেন, বাসে মাত্র তিনজন লোক ছিলো। বাসের চালক, হেলপার এবং ওদের সঙ্গের একজন। ঢাকা নিয়ে যাবে বলেই, তারা আমাকে বাজেভাবে ইঙ্গিত দেয়। আমি খুব ভয় পেয়ে যাই। তাড়াহুড়ো করে বাস থেকে নামতে চেষ্টা করলে বাস ছেড়ে দেয়। আমি কিছু না ভেবে বাস থেকে লাফ দেই এবং হাঁটুতে প্রচুর ব্যথা পাই। এই ঘটনার পরে আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি। আমার ব্যাচমেটদের বিষয়টি জানালে ওরা আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
এদিকে এ ঘটনার জেরে বুধবার সকাল আটটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ঢাক-আরিচা মহাসড়কে মৌমিতা পরিবহনের ১৭টি বাস আটক করে শিক্ষার্থীরা।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সহপাঠী সোহেল রানা বলেন, মঙ্গলবার (১৪ মে) আমাদের বান্ধবীর সঙ্গে একটা খারাপ ঘটনা ঘটেছে। এর প্রতিবাদে আমরা মৌমিতা পরিবহনের বাস আটকে রেখেছি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর স্যার ও আশুলিয়া থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সব সিসিটিভি ফুটেজ থাকলেও ৬.১০ থেকে ৬.১৮ পর্যন্ত সময়ের কোনো ফুটেজ পাওয়া যায়নি। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
আটক মৌমিতা পরিবহনের একটি বাসের চালক বলেন, সকালে ছাত্ররা আটক করতে শুরু করে। ঠিক কোন কারণে আটকানো হয়েছে তা জানি না। তবে বাস ছাড়ানোর বিষয়ে পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আলমগীর কবির এ বিষয়ে বলেন, আমরা আশুলিয়া থানার পুলিশসহ ঘটনাস্থলে গিয়েছি। কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আমরা কিছু শনাক্ত করতে পারিনি। আমরা বাস কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, দ্রুত ওই বাসের হেলপার ও চালককে শনাক্ত করে আমাদের জানাতে। পুলিশও চেষ্টা করছে তাদেরকে শনাক্ত করার জন্য।