জাবিতে ৩১৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকার বাজেট
গুরুত্ব পায়নি শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৪, ০৯:৩৮ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৩১৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকার বাজেট পাস করা হয়েছে। কিন্তু গবেষণা ও উদ্ভাবন ব্যয় ধরা হয়েছে মূল বাজেটের ২ দশমিক ৪৫ শতাংশ। অথচ মূল বাজেটের ৭৫ শতাংশ জুড়ে রয়েছে বেতন ও পেনশন খাত। বিগত বাজেটের মতো এবারেও উপেক্ষা করা হয়েছে শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাতগুলো।
শনিবার (২৯ জুন) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সিনেট হলে ৪১তম সিনেট অধিবেশনে এ বাজেট পাস হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার এ বাজেট উত্থাপন করেন।
এই বছরের বাজেটের আকার গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ২৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা। তবে এবারেও গবেষণা খাতে নামে মাত্র বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা মোট বাজেটের মাত্র ২.৪৫ শতাংশ। এই বাজেট বরাদ্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাবন্ধব হয় নি বলে মনে করছে বাজেট বিশ্লেষকরা। কেননা যে লক্ষ্য নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো, যা বর্তমানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় তার মূল উদ্দেশ্যই ছিলো গবেষণা কেন্দ্রিক। যেখানে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য গবেষণা, সেখানে গবেষণার জন্য ২ শতাংশ বাজেট নিতান্তই কম বলছেন বিশ্লেষকরা!
প্রতিবারের মত এবারের বাজেটেও শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাতগুলো গুরুত্ব পায়নি। শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট খাতগুলোর মধ্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সহায়তায় ধরা হয়েছে মূল বাজেটের শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যয় শূন্য দশমিক ৬৩ শতাংশ।
আরো পড়ুন: জবি শিক্ষকদের পূর্ণদিবস কর্মবিরতি রবিবার

এদিকে মোট বাজেটের ৬৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে বেতন-ভাতা বাবদ এবং পেনশন ও অবসর সুবিধা বাবদ ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ। এ দুইখাতে মোট বাজেটের ৭৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে খেলাধুলা ও পাঠ বহুর্ভূত কার্যক্রমে মাত্র ৩৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
তবে এবারে শিক্ষকদের গবেষণা ও উদ্ভাবনের জন্য বরাদ্দ থাকলেও শিক্ষার্থীদের জন্য রাখা হয়নি আলাদা কোনো বরাদ্দ। শিক্ষকদের গবেষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) পক্ষ থেকে বরাদ্দ দেয়া হয়ে থাকে। বাজেটে শিক্ষার্থীসংশ্লিষ্ট খাতে বরাদ্দ না থাকায় একে শিক্ষার্থীবান্ধব বাজেট বলতে নারাজ শিক্ষার্থীরা।
এবারের বাজেটে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশিন থেকে ২৭৯ কোটি ১২ লাখ টাকা, ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট হতে ৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা, ভর্তি ফরম বিক্রি বাবদ আয় হয়েছে ২৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা পেয়েছে।
বাজেট অধিবেশনে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার বলেন, বর্তমানে রাজস্ব তহবিলে ঘাটতির পরিমাণ ৬৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরে আনুমানিক ১২ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি হতে পারে। ইউজিসির নির্দেশনা অনুযায়ী সুষম বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। এরূপ আর্থিক চাপের মধ্যে বাজেট প্রণয়ন আক্ষরিক অর্থেই অসম্ভব। ঘাটতির পরিমাণ যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে এক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালানো কষ্টকর হয়ে যাবে।
সিনেট অধিবেশনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার, রেজিস্ট্রার (চুক্তিভিত্তিক) রহিমা কানিজ, সিন্ডিকেট সদস্য ও রেজিস্ট্রার গ্রাজুয়েট প্রতিনিধিরা।