মাকসুদ কামাল প্রশাসনের প্রতি শিক্ষার্থীদের ধিক্ সমাবেশ

ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৪৩ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
জুলাই বিপ্লবের সময় কোটা সংস্কার আন্দোলনের এক পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতাদের হামলা ও ১৭ জুলাই ক্যাম্পাসে পুলিশি আক্রমণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা ও শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক হল ত্যাগে বাধ্য করার প্রতিবাদে সাবেক উপাচার্য মাকসুদ কামাল প্রশাসনের প্রতি ধিক্ সমাবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘অথর্ব প্রশাসন, ধিক্কার ধিক্কার’, ‘মাকসুদ কামাল প্রশাসন, ধিক্কার ধিক্কার’, ‘নির্লজ্জ প্রশাসন, ধিক্কার ধিক্কার’ ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদ জানান।
বক্তব্য প্রদানকালে শিক্ষার্থীরা বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন যখন তুঙ্গে, যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছিল পুরো দেশব্যাপী তখন ১৭ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এদিন সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় সিন্ডিকেট। এই আদেশের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে স্তিমিত করার অপচেষ্টা চালানোর দায়ে ঢাবির তৎকালীন ভিসি প্রফেসর ড. মাকসুদ কামালসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের বিচার দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।
তারা আরো বলেন, গত ১৭ জুলাই মাকসুদ কামাল প্রশাসনের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের রক্তাক্ত করেছে স্বৈরাচারের পেটুয়া বাহিনী। অথচ এখন পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
এসময় বঙ্গবন্ধু হলের শিক্ষার্থী আবিদ হাসান রাফি বলেন, আন্দোলনের এক পর্যায়ে ১৫ জুলাই যখন ছাত্রলীগ তাদের গুন্ডাপান্ডা নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকে নারীশিক্ষার্থীসহ আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে তখন আমরা বিশ্ববিদ্যালয় নির্লজ্জ প্রশাসনকে নিরব ভূমিকায় দেখেছি। যখন আমাদের নারী শিক্ষার্থীরা রক্তাক্ত হয়েছিল তখন মাকসুদ কামালের মতো নির্লজ্জ প্রশাসকরা দরজা লাগিয়ে বসে ছিল।
তিনি আরো বলেন, ১৭ জুলাই ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি কলঙ্কিত দিন। এদিন পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর টিয়ারগ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে শিক্ষার্থীদের রক্তাক্ত করেছিল। যখন হল থেকে ছাত্রলীগকে বের করে দিয়ে হলগুলোকে কলঙ্কমুক্ত করেছিলাম তার বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল। নতুন প্রশাসনের কাছে দাবি থাকবে তৎকালীন স্বৈরাচার অথর্ব প্রশাসন যেন কোনোভাবেই আর প্রশাসনে ফিরে না আসতে পারে।
এসময় মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মেফতাহুল মারুফ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাকসুদ কামাল প্রশাসন ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা ইতিহাসের এক কলঙ্কিত ঘটনা উপহার দিয়েছিল সেই ১৭ জুলাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায় রচনা করার পরও এখন পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের দৃশ্যমান পদক্ষেপ আমরা দেখছি না। এটি আমাদের জন্য লজ্জার। এই স্বাধীন দেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো স্বৈরাচারী প্রশাসককে আর দেখতে চাই না।