মেরি ক্রিসমাস
ভিন্নরকম এক থ্রিলার

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:০৭ এএম

বলিউডে ক্যাটরিনা কাইফের গ্লামার নিয়ে যতটা আলোচনা হয় ততটাই সমালোচনা হয় তার অভিনয় নিয়ে। কিন্তু সম্প্রতি পরিচালক শ্রীরাম রাঘবন ক্যাটরিনাকে দিয়েই দুর্দান্ত অভিনয় করিয়েছেন তার সদ্য মুক্তি পাওয়া ‘মেরি ক্রিসমাস’ সিনেমায়।
ফরাসি কাহিনী ‘বার্ড ইন অ্যা কেজ’ অবলম্বনে মুম্বাই শহরের এক রাতের গল্প বলেছেন পরিচালক। ক্রিসমাস ইভে ঘটনাচক্রে দেখা হয় মারিয়া (ক্যাটরিনা কাইফ) ও অ্যালবার্টের (বিজয় সেতুপতি)। মারিয়ার সঙ্গে তার ৫ বছরের মেয়ে অ্যানি। প্রেমে-ভালোবাসায় হেরে যাওয়া দুটো মানুষ মেতে ওঠে সুখ-দুঃখের গল্পে। স্বামীর সঙ্গে মারিয়ার হাসিখুশি ছবি দেখে অ্যালবার্ট প্রশ্ন করে, ‘কখনও কাউকে দেখেছ, দুঃখের দিনের ছবি সাজিয়ে রাখতে?’
রহস্যের মূলস্থরে ঢুকতে দর্শককে অপেক্ষা করতে হবে। মারিয়ার সুসজ্জিত ফ্ল্যাটের চেয়ারে আবিষ্কৃত হয় তার স্বামীর মৃতদেহ। খুন হোক বা সুইসাইড, ঘটনাটা ঘটল কখন? মারিয়া, অ্যালবার্ট তো কিছুক্ষণ আগেও সেখানেই ছিল। একাধিক প্রশ্নে আলোড়ন ওঠে সিনেমায়।
ছোট ছোট চরিত্র কাহিনীতে সূক্ষ্ম মোচড় আনে। অ্যালবার্ট, মারিয়ার মধ্যে তৃতীয় কোণ হিসেবে ঢুকে পড়ে রনি (সঞ্জয় কাপুর)। দর্শকের মতো পুলিশও বুঝতে পারে ব্যাপারটা মোটেই সোজাসাপ্টা আত্মহত্যা নয়। কিন্তু সাজানো ঘটনার মধ্যে ছিদ্র খুঁজে পায় না কেউই। কিছু কিছু থ্রিলারে ঘটনার ঘনঘটা অত্যন্ত বেশি হয়। ‘মেরি ক্রিসমাস’ ধীর লয়ে চলতে থাকে। পুরনো মুম্বাইয়ের আমেজ, সত্তরের দশকের বলিউড সিনেমার গান অন্য রকম জগৎ তৈরি করে। ছবির সিনেমাটোগ্রাফি, আবহসঙ্গীত যেন পুরনো দিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। সিনেমার শুরুটা গুছিয়ে হলেও, শেষটা অতটা মসৃণ হয়নি।
তবে সিনেমার সব ত্রুটিই সারিয়ে দিতে পারেন বিজয় সেতুপতি। তার তামিল একসেন্টে হিন্দিটা বাদদিলে অভিনয়ে তিনি বুদ করে রাখেন সবাইকে। সেতুপতির চরিত্রের ছোট ছোট সংলাপের মধ্য দিয়ে কাহিনীতে হিউমারও বজায় রেখেছেন পরিচালক। সেতুপতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছেন ক্যাটরিনা। বিনয় পাঠক, প্রতিমা কাজমি, রাধিকা আপটে এবং সঞ্জয় কাপুরও ভাল অভিনয় করেছেন।
গড়পড়তা থ্রিলারর সিনেমার ভিড়ে ‘মেরি ক্রিসমাস’ একটু বেশিই স্বতন্ত্র। পরিচালক বেশ সচেতনভাবেই থ্রিলারের মলাটে বলতে চেয়েছেন একটি প্রেমের গল্প। এখানেই পরিচালকের সার্থকতা।