অর্থ উপদেষ্টা
বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ছবি : সংগৃহীত
দেশে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, সরকার চেষ্টা করছে বিদ্যুতের ঘাটতি মেটাতে। এজন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জ্বালানি ও কয়লা আমদানি করা হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান উপদেষ্টা।
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আরো জানান, আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের স্মরণ সভায় প্রায় পাঁচ কোটি টাকার মতো খরচ হবে। তার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এই স্মরণ সভায় শহীদ পরিবারসহ সংশ্লিষ্ট সবাই উপস্থিত থাকবেন। ওই অনুষ্ঠানে বিদেশি অতিথিদেরও আমন্ত্রণ জানানো হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনুষ্ঠানে কারা অতিথি হবেন, তা ঠিক করবেন উপদেষ্টা পরিষদের দুই ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ।
ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী উল্লেখ করে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, তাদের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে। অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিষয়সহ বেশ কয়েকটি প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়েছে। চলমান প্রকল্প নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো সংকট নেই। অর্থ উপদেষ্টা আরো বলেন, বিজ্ঞান প্রযুক্তিসহ আরো বড় প্রকল্পে দিল্লি আগ্রহ দেখিয়েছে। বিনিয়োগের ভালো জায়গা বাংলাদেশ। এ সময় বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
২১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৫ হাজার টন সার কেনার অনুমোদন : সাইপ্রাসভিত্তিক মিড গালফ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড থেকে ২৫ হাজার মেট্রিক টন রক ফসফেট এবং কানাডার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান থেকে ৪০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই ৬৫ হাজার মেট্রিক টন সার কিনতে ব্যয় হবে ২১৬ কোটি ৬৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এ সংক্রান্ত পৃথক দুটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) থেকে ফসফেট ক্রয়ের প্রস্তাব পাঠানো হয়। বিসিআইসির অধীন টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেড টিএসপি সার উৎপাদনকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান। টিএসপি সার উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল ফসফরিক এসিড ও ফসফেট বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ১ লাখ ৯০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য সর্বমোট ১ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন ফসফেট প্রয়োজন হবে।
আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী, একটি কমিটির মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত প্রতি মেট্রিক টন ফসফেটের দাপ্তরিক প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ৩৪৩ দমমিক ৪৮৬ মার্কিন ডলার। দুটি দরদাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সাইপ্রাসভিত্তিক মেসার্স মিডগালফ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড সর্বনি¤œ দর উল্লেখ করে। প্রতি মেট্রিক টন ২৭৪ দশমিক ৫০ মার্কিন ডলার প্রস্তাব করেছে প্রতিষ্ঠানটি। যা সর্বশেষ ক্রয় দর ৩৪২ দশমিক ৬৯ মার্কিন ডলার থেকে প্রতি মেট্রিক টনে ৬৮ দশমিক ৯৮৬ বা ২০ দশমিক ০৫ শতাংশ কম।
সে হিসেবে ২৫ হাজার মেট্রিক টন ফসফেট ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ৬৮ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮০ কোটি ৯৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা)।
অন্যদিকে ফসল উৎপাদনে মিউরেট-অব-পটাশ (এমওপি) সার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ। দেশের কৃষি উৎপাদনে এমওপি সারের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে বিএডিসির মাধ্যমে কানাডার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির আওতায় ২০১৪-২০১৫ অর্থবছর থেকে এমওপি সার আমদানি করা হচ্ছে। প্রতি মেট্রিক টন এমওপি সারের দাম ২৮২ দশমিক ৬২৫ মার্কিন ডলার হিসেবে ৪০ হাজার মেট্রিক টন সার আমদানিতে বাংলাদেশি মুদ্রায় ব্যয় হবে ১৩৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা।