ইউক্রেন সেনাবাহিনীকে সে দেশের সরকার উৎখাতের আহ্বান পুতিনের

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯:১৯ পিএম
ইউক্রেনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ভলোদমির জেলেনস্কি ও তার সরকারকে উৎখাত করে সেনা ক্যু-এর মাধ্যমে নিজ দেশের ক্ষমতা গ্রহনের আহ্বান জানালেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ও দেশটির সরকারী কর্মকর্তাদের প্রতি সরাসরি এক ভাষণে শুক্রবার (২৫ ফেব্রয়ারি) সন্ধ্যার পর এই আহ্বান জানান। খবর বিবিসির
পুতিন মনে করেন ইউক্রেন নয় বরং প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ও তার সরকারই রাশিয়ার জন্য বড় সমস্যা।
টেলিভিশন ভাষণে পুতিন ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, জেলেনস্কি ও তার সরকার ‘মাদকাসক্তের দল, এই নয়া-নাজিরা কিভেয়ে আবাস গেড়েছে এবং গোটা ইউক্রেনকেই জিম্মি করে বসে আছে। দেশটির সেনাবাহিনীর উচিত নিজের হাতে ক্ষমতা নিয়ে নেয়া। জেলেনস্কি ও তার সরকারের মতো মাদকাসক্ত ও নয়া-নাজিদের সঙ্গে কথা বলার চেয়ে ইউক্রেন সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলোচনায় কোনো বিষয়ে সহমত হওয়া অনেক বেশি সহজ বলে বলেই মনে করেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন।
পূর্ব-ইউক্রেনের ডনবাসে ‘গণহত্যা চালিয়ে আসছে ইউক্রেনের বর্তমান সরকার।
এদিকে যুদ্ধ ঘোষণার ৪৮ ঘণ্টা পর ইউক্রেনকে আলোচনায় বসার বার্তা দিল মস্কো। শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী শর্তসাপেক্ষ আলোচনায় বসার এই ঘোষণা দেন। এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদেমির জেলেনস্কি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আলোচনার টেবিলে আসার আহ্বান জানান। খবর এএফপি ও বিবিসির।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ জানিয়েছেন, ইউক্রেন যদি অস্ত্র ত্যাগ করে তাহলে তারা আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।
রুশ সংবাদ সংস্থা আরআইএ নভোস্তি খবর দিচ্ছে যে, ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন রাশিয়া, বেলারুসের রাজধানী মিনস্কে ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা বসতে রাজি আছে।
তবে তিনি বলেছেন তার আগে ইউক্রেনকে একটা ‘নিরপেক্ষ অবস্থান’ ঘোষণা করতে হবে – যার অন্তর্ভুক্ত থাকবে ‘বেসামরিকীকরণ’। রাশিয়া বরাবরই বলে আসছে তারা চায় না, ইউক্রেন কখনই নেটোতে যোগদান করে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন, কিন্তু রাশিয়ার শর্তে তিনি আলোচনায় বসতে সম্মত হবেন কিনা সে বিষয়ে কোন ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
আলোচনার ভেন্যু হিসাবে মিনস্ক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ২০১৪ সালে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল নিয়ে সংঘাত অবসানের চেষ্টায় এই মিনস্কেই একটা চুক্তি সই হয়েছিল।
ইউক্রেন আক্রমণের মধ্যে দিয়ে রুশ নেতা সেই চুক্তিপত্র কার্যত ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছেন।
এর আগে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন, ইউক্রেনের সৈন্যরা যতক্ষণ না অস্ত্র নামিয়ে নিচ্ছে, ততক্ষণ কোনরকম আলোচনা হবে না।
বৃহস্পতিবার ভোরে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সেনা অভিযানের ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তারপর থেকে ইউক্রেনের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ করতে শুরু করে রুশ সেনাবাহিনী।
বৃহস্পতিবার প্রথম দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় শহর খারকিভ এবং পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র চেরনোবিলের দখল নেয় রুশ বাহিনী। যুদ্ধের দ্বিতীয় দিনে পুতিন বাহিনী রাজধানী কিয়েভের রাস্তায় ট্যাংকসহ প্রবেশ করে।