বিমান-হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন যেসব বিশ্ব নেতা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ মে ২০২৪, ১২:৪৩ এএম

ছবি: সংগৃহীত
ইতোমধ্যেই ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি আজারবাইজান সীমান্তের কাছে পার্বত্য অঞ্চলে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার খবরে শোক প্রকাশ করেছেন বিশ্ব নেতারা। ইরানজুড়ে চলছে শোকের মাতম। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার রহস্য উদঘাটনে নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ।
সোমবার (২০ মে) রাইসি ও ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসাইন আমিরাবদুল্লাহিয়ানকে বহনকারী ওই হেলিকপ্টারটির ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম ও কর্মকর্তারা।
অতীতেও বিশ্বের বেশ কয়েকজন নেতা আকাশযান দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন। এর মধ্যে শীর্ষ কয়েক নেতার মৃত্যুর ঘটনাসমূহ উল্লেখ করা হলো।
চিলির সাবেক প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান পিনেরা (২০২৪)

চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি এক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হন চিলির সাবেক প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ান পিনেরা।
৭৪ বছর বয়সী পিনেরা ও আরও তিন যাত্রীসহ হেলিকপ্টারটি দক্ষিণ চিলির একটি হৃদে বিধ্বস্ত হয়। উদ্ধারকারীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পরই সাবেক এ প্রেসিডেন্টকে মৃত ঘোষণা করা হয়। বাকি তিন যাত্রী বেঁচে যান।
বিলিয়নিয়ার ও রক্ষণশীল পিনেরা ২০১০ থেকে ২০১৪ এবং ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত চিলির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। তবে দুই মেয়াদেই তাকে বিভিন্ন প্রতিবাদ-বিক্ষোভ সামাল দিতে হয়েছিলো।
পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট লেক কাজিন্সকি (২০১০)

২০১০ সালের ১০ এপ্রিল রাশিয়ায় এক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন পোল্যান্ডের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট লেক কাজিন্সকি।
ওই দুর্ঘটনায় বিমানে থাকা তার স্ত্রীসহ আরও ৯৬ জন নিহত হন। ঘন কুয়াশার মাঝে রাশিয়ার স্মলেনস্ক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে ব্যর্থ হয়ে বিধ্বস্ত হয় বিমানটি।
ভারতীয় রাজনীতিবিদ মাধবরাও সিন্ধিয়া (২০০১)

প্রখ্যাত ভারতীয় রাজনীতিবিদ ও কংগ্রেস পার্টির সদস্য মাধবরাও সিন্ধিয়া ২০০১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন। উত্তর প্রদেশের মনিপুরের কাছে মাঝ-আকাশে তার ব্যক্তিগত বিচক্রাফট কিং এয়ার সি৯০ বিমানে আগুন ধরে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ জিয়া-উল-হক (১৯৮৮)

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ও সেনাপ্রধান মুহাম্মদ জিয়া-উল-হক ১৯৮৮ সালের ১৭ আগস্ট বাহাওয়ালপুরের কাছে বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান।
দুর্ঘটনায় তার সঙ্গে আরও নিহত হন মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্নল্ড লুইস রাফেল এবং কয়েকজন শীর্ষ পাকিস্তানি সামরিক কর্মকর্তা।
আনাদোলু এজেন্সির খবর অনুযায়ী, ৩২ বছর পর এখন জিয়া-উল-হকের সন্তান ও পাকিস্তানের সাবেক মন্ত্রী মুহাম্মদ ইজাজ-উল-হক দাবি করেছেন, ককপিটে নার্ভ গ্যাস ছড়িয়ে পাইলটদের অসুস্থ করিয়ে বিমানটিকে ভূপাতিত করা হয় বলে তার কাছে প্রমাণ রয়েছে।
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী রাশিদ কারামি (১৯৮৭)

লেবানিজ প্রধানমন্ত্রী রাশিদ কারামি রেকর্ড আটবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৮৭ সালের ১ জুন তিনি গুপ্তহত্যার শিকার হন। তাকে বহনকারী সামরিক হেলিকপ্টারটিতে বোমা রাখা ছিল।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল-রাসিসহ আরও তিন ডজনের মতো যাত্রী ও ক্রু বিস্ফোরণে আহত হয়েছিলেন বলে জানা যায়।
সঞ্জয় গান্ধী (১৯৮০)

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সন্তান সঞ্জয় গান্ধী ১৯৮০ সালের ২৩ জুন উইলিংডন ক্রিসেন্টের কাছে এক বিমান দুর্ঘটনায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
পিটস মডেলের একটি দুই আসনের বিমানে তার সঙ্গে ছিলেন দিল্লি ফ্লাইয়িং ক্লাবের সাবেক প্রধান ইনস্ট্রাকটর ক্যাপ্টেন সুভাষ সাক্সেনা। তিনিও দুর্ঘটনায় মারা যান।
একটি গাছে আঘাত করার পর বিমানটি মাটিতে পড়ে যায়। দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল সঞ্জয় গান্ধীর বাড়ি ১২ উইলিংডন ক্রিসেন্ট থেকে কাছেই।
ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ম্যাগসাইসাই (১৯৫৭)

ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট র্যামন ম্যাগসাইসাই তাকে বহনকারী রাষ্ট্রীয় ডগলাস সি-৪৭ বিমান দুর্ঘটনায় ১৯৫৭ সালের ১৭ মার্চ নিহত হন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ম্যাগসাইসাইয়ের অন্যতম বড় অর্জন ছিলো হাক বিদ্রোহ দমানো।