আজ শুরু হচ্ছে লোকসভার প্রথম অধিবেশন

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৪, ০৯:৫২ এএম

ছবি: সংগৃহীত
ভারতে অষ্টাদশ লোকসভার প্রথম অধিবেশন আজ (সোমবার ২৪ জুন) থেকে শুরু হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ তার নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নেবেন আজ। শপথের পর স্পিকার নির্বাচন এবং উভয় কক্ষের যৌথ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর ভাষণ দেবেন। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত চলা লোকসভা নির্বাচন হওয়ার পর এটিই হবে এ সংসদের প্রথম অধিবেশন। অষ্টাদশ লোকসভায়, এনডিএ ২৯৩টি আসন নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ রয়েছে। বিজেপি একা ২৪০টি আসন পেয়েছে। বিজেপিবিরোধী ইন্ডিয়া জোট ২৩৪টি আসন পেয়েছে। যেখানে কংগ্রেস একা পেয়েছে ৯৯টি আসন। সোমবার সকাল ১১টায় শপথ নেবেন প্রধানমন্ত্রী মোদি ও তার মন্ত্রী পরিষদ। তারপর, বিভিন্ন রাজ্যের সংসদ সদস্যরা পরপর শপথ নেবেন। এদিন প্রধানমন্ত্রী মোদি, তার মন্ত্রী পরিষদসহ ২৮০ নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য শপথ নেবেন, বাকি ২৬৪ নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য পরের দিন (মঙ্গলবার ২৫ জুন) শপথ নেবেন।
তৃতীয় নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণ ও অধিবেশন শুরুর মধ্যেই রেল দুর্ঘটনা, একাধিক সর্বভারতীয় পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা সামনে আসায় উজ্জীবিত বিরোধী শিবির। প্রথম দিন থেকেই কংগ্রেস, তৃণমূল, এসপি বা ডিএমকের মতো দল একজোটে ময়দানে নামতে প্রস্তুত। সংসদের শুরুর দিনে বিরোধীরা কোনো বৈঠক না করলেও, ঠিক হয়েছে বেলা সাড়ে ৯টা নাগাদ ইন্ডিয়া মঞ্চের সাংসদেরা হাতে সংবিধান নিয়ে একত্রে সংসদের দু’নম্বর দরজা দিয়ে প্রবেশ করবেন। এদিকে তৃতীয়বার জিতে এসেও অধিবেশন শুরুর আগে রীতিমতো ব্যাকফুটে বিজেপি নেতৃত্ব।
গত দু’টি লোকসভা নির্বাচনে একার শক্তিতে ম্যাজিক সংখ্যা ছুঁতে সক্ষম হয়েছিলো বিজেপি। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। বিজেপি সরকার এবারে শরিক নির্ভর। প্রতিপক্ষ অপেক্ষাকৃত দুর্বল হওয়ায় গোড়া থেকেই হামলার পথে এগোনোর কৌশল নিয়েছে বিরোধী দলগুলো। আগামী দু’দিন সাংসদদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। তা মিটে যাওয়ার পরেই স্পিকার নির্বাচন।
আরো পড়ুন: ফারাক্কা চুক্তি নবায়নে ক্ষুব্ধ মমতা
আরো পড়ুন: অফিসে ১ মিনিট দেরি হলেই বেতন কাটা
কারো কারো মতে, প্রোটেম স্পিকার নির্বাচন নিয়ে আগামিকালই শুরুতে কিছু হট্টগোল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কেনো সবচেয়ে বেশি বার জিতে আসা সাংসদ কংগ্রেসের কে সুরেশকে ওই দায়িত্ব দেয়া হল না, সেই প্রশ্ন তুলে সরব হতে পারেন বিরোধীরা। তবে অনেকের মতে, মূল সংঘাত লাগবে স্পিকার নির্বাচনের দিন থেকে। অতীতের ১৭টি লোকসভাতে বিনা নির্বাচনে, সর্বসম্মতিক্রমে স্পিকার নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু বিরোধীরা এ বার শাসক দলের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেয়ার কথা ভাবছেন। যার প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। অন্য দিকে শরিকদের গুছিয়ে নিতে পাল্টা তৎপর রয়েছেন বিজেপি নেতৃত্বও।
দিন কয়েক আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন কংগ্রেসের অন্যতম শীর্ষ নেতা পি চিদম্বরম। সেই সাক্ষাতের পরে দুই শিবিরের মধ্যেকার শীতলতা অনেকটাই কেটেছে বলে মনে করা হচ্ছে। অনেকের মতে, নৈকট্য বাড়ছে দুই শিবিরের। যা গত পর্বে সে ভাবে দেখা যায়নি। বিশেষ করে তৃণমূল আসন সংখ্যা বাড়িয়ে লোকসভায় ফেরার পরে কংগ্রেস নেতৃত্বও চাইছেন আগামী দিনে যাতে সংসদে সুষ্ঠু যুগলবন্দি করে শাসক শিবিরকে অস্বস্তিতে ফেলা যায়। উভয়েই যে পরস্পরের প্রতি আস্থা রেখে এগোতে চায়, সেই বার্তা দিয়েছে দুই শিবিরই।
সংবাদপত্রে প্রকাশিত পি চিদম্বরমের প্রবন্ধ টুইট করে তৃণমূল নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন লেখেন,‘‘চিদাম্বরম যে বক্তব্য রেখেছেন, তার সঙ্গে আমরাও একমত। বিশেষ করে ফি বছর একশো দিন সংসদ চলার দাবি নিয়ে তৃণমূলও অতীতে সরব হয়েছে।’’
পাশাপাশি, তৃণমূলের ধাঁচে দণ্ডসংহিতা আইন নিয়ে সরব হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেসও। বিরোধীদের বক্তব্য, গত অধিবেশনে যে ভাবে ১৪৬ সাংসদকে সাসপেন্ড করে ওই আইন পাশ করিয়ে নেয়া হয়েছিলো, তা কোনো ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। শপথ গ্রহণের বিষয়টি শেষ হলেই, অন্য দলগুলোকে পাশে নিয়ে আন্দোলনে নামার পরিকল্পনা নিয়েছে কংগ্রেস। কংগ্রেস নেতৃত্ব জানিয়েছেন, ইন্ডিয়া মঞ্চের সব শরিক দলকে সমান ভাবে গুরুত্ব দিয়ে সংসদে এই সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চান তারা।