পশ্চিম তীরে আমিই পুলিশ, আমিই সেনাবাহিনী: ফিলান্ত ইয়াকভ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:১২ পিএম

অভিযুক্ত ফিলান্ত ইয়াকভ। ছবি: সংগৃহীত
পশ্চিম তীরের জাবাল সালমান উপত্যকায় নিজেকে সেখানকার একজন ক্ষমতাধর নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন ইয়িতঝাক লেভি ফিলান্ত। তিনি ‘ইয়াকভ’ নামে বেশি পরিচিত। দ্য গার্ডিয়ানকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, পশ্চিম তীরে আমিই পুলিশ, আমিই সেনাবাহিনী। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ফিলান্তের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। ফিলান্ত ইয়িতঝার বসতির নিরাপত্তা সমন্বয়কারী হিসেবে পরিচিত হলেও, বাস্তবে তিনি পুরো উপত্যকার একজন শাসক হয়ে উঠেছেন বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ফিলান্তের কর্মকাণ্ডকে ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে ফিলান্ত এবং তার অনুগত লোকজন সশস্ত্র অবস্থায় ফিলিস্তিনিদের জমিতে হামলা চালিয়েছে। এসময় নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদেরকে তাদের নিজেদের জায়গা থেকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করেছে ফিলান্ত গ্যাং। এ ঘটনার পর থেকেই সে বারবার স্থানীয়দের ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছেন।
স্থানীয় বুরিন গ্রামের কৃষি সমবায় প্রধান গাসান নাজ্জার বলেন, ইয়াকভের নেতৃত্বাধীন গ্যাংটি তাদের স্কুল মাঠে টিয়ার গ্যাস ছুঁড়ে মারে। ওই মুহূর্তে সেখানে ফিলিস্তিনি শিশুরা ফুটবল খেলছিল। ফিলান্ত এবং তার বাহিনী এলাকাটিতে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। তারা বিভিন্ন আরব গ্রামের রাস্তায় চেকপোস্ট স্থাপন করে ফিলিস্তিনি চালকদের হয়রানি করছে। ইয়াকভের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে ওইসব চালকদের কাছ থেকে প্রায়ই অর্থ লুট করে নেয়ার।
এর আগে ২০২৩ সারের মার্চে ফিলান্ত ও তার গ্যাং এক ফিলিস্তিনি পরিবারের ওপর হামলা চালায়। এসময় তারা ভুক্তভোগী ওই পরিবারের একটি গাড়ির জানালা ভেঙ্গে তাদের ওপর পিপার স্প্রে নিক্ষেপ করে। এসময় ওই পরিবারটি বিপদ আঁচ করতে পেরে পালানোর চেষ্টা করলে তাদের ওপর গুলি চালায় ফিলান্ত। সৌভাগ্যক্রমে পরিবারটির সবাই প্রাণে বেঁচে যান।
অঞ্চলটিতে ফিলিস্তিনি গ্রামবাসীরা ফিলান্তের নৃশংসতার শিকার হলেও, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তার বিরুদ্ধে কোন প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। বরং অভিযোগ আছে তারা ফিলান্তের গ্যাংকে ফিলিস্তিনি আরবদের ওপর লেলিয়ে দেয় এবং তাকে সবধরনের সহায়তা করে।
ইসরায়েলের মানবাধিকার সংস্থা ইয়েশ দীন বহু বছর ধরে ফিলান্তের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে আসছে। তবে এখনো তার বিরুদ্ধে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পরেও ফিলিস্তিনিদের বিশ্বাস, খুব শীঘ্রই ইয়াকভের শাসনের অবসান হবে না।
আরো পড়ুন: ইসরাইলের ১২ জাহাজে হামলা চালিয়েছে ইরান
গাসান নাজ্জার আরো বলেন, আমরা ইয়াকভের শাস্তি চাই না, তবে তার এই অত্যাচার বন্ধ হওয়া উচিত।