×

আন্তর্জাতিক

মার্কিন নির্বাচনে যে কারণে কমলা হ্যারিস এগিয়ে থাকবেন

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৫ পিএম

মার্কিন নির্বাচনে যে কারণে কমলা হ্যারিস এগিয়ে থাকবেন

মার্কিন নির্বাচনে যে কারণে কমলা হ্যারিস এগিয়ে থাকবেন

   

এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কমলা হ্যারিস বিজয়ের ক্ষেত্রে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর রয়েছে যা নির্বাচন ফলাফলে প্রভাব ফেলবে। তবে একটি সামগ্রিক বিশ্লেষণে কমলা হ্যারিস একধাপ এগিয়ে থাকতে পারেন, তার কিছু কারণ নিচে দেওয়া হলো:

১. জনপ্রিয়তা ও নির্বাচনী ব্যাকগ্রাউন্ড:

• কমলা হ্যারিস: কমলা হ্যারিস বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, যা তাকে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক অবস্থান দেয়। তার পেছনে শক্তিশালী ডেমোক্রেটিক মঞ্চ ও বহুমুখী নির্বাচনী অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি একজন নারী, আফ্রিকান-আমেরিকান এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত, যা তাকে যুক্তরাষ্ট্রের বহু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বকারী হিসাবে তুলে ধরতে সহায়তা করতে পারে।

• ডোনাল্ড ট্রাম্প: ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কিছুটা কমেছে ২০২০ সালের পর, বিশেষ করে তার প্রেসিডেন্সির শেষ সময়ের অস্থিরতা এবং ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল হামলাসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের পর। তার বিরুদ্ধে আইনগত সমস্যা এবং আদালতের মামলা চলমান থাকা সত্ত্বেও, রিপাবলিকান দলের মধ্যে ট্রাম্পের প্রবল সমর্থন আছে, তবে সার্বিক জনগণের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা কমে গেছে।

২. পার্থক্যপূর্ণ রাজনৈতিক অবস্থান:

• কমলা হ্যারিস: তিনি প্রগতিশীল চিন্তাধারার একজন নেতা, যিনি সামাজিক ন্যায়বিচার, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদি বিষয়ে দৃঢ় অবস্থান নেন। ডেমোক্রেটিক নির্বাচনী মঞ্চে প্রগতিশীলদের কাছে তিনি একটি শক্তিশালী সমর্থন পেতে পারেন। তবে, তার কিছু নীতি যেমন স্বাস্থ্যসেবা রিফর্ম বা অর্থনৈতিক সমাধানগুলি বেশ চ্যালেঞ্জিং হতে পারে, বিশেষ করে মধ্যপন্থী ভোটারদের কাছে।

• ডোনাল্ড ট্রাম্প: ট্রাম্প সাধারণত ডানপন্থী নীতির পক্ষে, যেগুলোর মধ্যে অভিবাসন বিরোধিতা, অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদ এবং শক্তিশালী সেনাবাহিনীর পক্ষে অবস্থান রয়েছে। তার সমর্থকরা তাকে "প্রতিরোধের প্রতীক" হিসেবে দেখতে পারেন, যিনি ওয়াশিংটনে প্রতিষ্ঠিত "গঠনমূলক রাজনীতি"কে চ্যালেঞ্জ করেছেন। তবে তার অনেক নীতি বেশ বিভক্তি সৃষ্টি করতে পারে এবং আমেরিকার কেন্দ্রীভূত ভোটারদের কাছে অগ্রহণযোগ্য হতে পারে।

৩. প্রেসিডেন্সির সময়কাল ও প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা:

• কমলা হ্যারিস: তার বর্তমানে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে ৪ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং তিনি বাইডেন প্রশাসনের নেতৃত্বে কাজ করেছেন। তাই তার কাছে নির্বাহী ক্ষমতা ও নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা আছে, যা তাকে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।

• ডোনাল্ড ট্রাম্প: তিনি একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট, যার কাছে প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা আছে, কিন্তু তার প্রথম ম্যান্ডেটের পর তিনি অনেক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, যার মধ্যে কিছু বিভক্তির সৃষ্টি হয়েছিল। তার বিরোধীরা তাকে "অক্ষম" বা "অন্যথায় অপ্রত্যাশিত" হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন, তবে তার সমর্থকরা তাকে একটি "বাহ্যিক" নেতা হিসেবে দেখতে পারেন।

৪. আইনগত সমস্যা এবং বিতর্ক:

• কমলা হ্যারিস: কমলা হ্যারিসের বিরুদ্ধে কোনো গুরুতর আইনগত বা বিচারিক সমস্যা নেই, যা তার নির্বাচনী প্রচারণাকে বাধাগ্রস্ত করবে। তিনি তার রাজনৈতিক কেরিয়ারে বেশ পরিচ্ছন্ন একটি ইমেজ বজায় রেখেছেন, যা তাকে বড় ধরনের বিতর্ক থেকে বাঁচায়।

• ডোনাল্ড ট্রাম্প: ট্রাম্প বর্তমানে একাধিক আইনি তদন্তের মুখোমুখি, যার মধ্যে রয়েছে তার ২০২০ সালের নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে প্রতারণা বা অবৈধ কাজ করার অভিযোগ। এসব আইনি ঝামেলা তার উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে পারে। এর ফলে, তার নির্বাচনী প্রচারণায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

৫. ভোটার বেস এবং মধ্যপন্থী ভোটারদের প্রতি আবেদন:

• কমলা হ্যারিস: তিনি বিভিন্ন প্রগতিশীল এবং উদারনৈতিক ভোটারদের মধ্যে সমর্থন পেতে পারেন। এছাড়া, তার পারিবারিক এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য তাকে অনেক জাতিগত ও নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর মধ্যে জনপ্রিয় করতে পারে।

• ডোনাল্ড ট্রাম্প: রিপাবলিকান ভোটারদের মধ্যে তিনি শক্তিশালী, কিন্তু তার জনপ্রিয়তা এবং সমর্থন কেন্দ্রীভূত ভোটারদের (মধ্যপন্থী বা স্বাধীন ভোটার) মধ্যে বেশি নয়। তার সমর্থকরা তাকে "অদ্ভুত" ও "অদম্য" নেতা হিসেবে দেখতে পারেন, তবে তার বিরোধীরা তাকে অনেক বেশি বিভক্তিকর এবং অগ্রহণযোগ্য মনে করেন।

৬. সামাজিক মিডিয়া এবং প্রচারণা:

• কমলা হ্যারিস: কমলা হ্যারিস সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রভাবশালী এবং কৌশলগতভাবে জনমত সংগ্রহে দক্ষ। তিনি তরুণ ভোটারদের মধ্যে জনপ্রিয় এবং নেটিজেনদের কাছে তার বার্তা পৌঁছাতে পারেন।

• ডোনাল্ড ট্রাম্প: ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়া, বিশেষত টুইটার (এখন 'এক্স') এর মাধ্যমে ব্যাপক সমর্থন সংগ্রহ করেছেন। তবে তার টুইট এবং মন্তব্যের কারণে অনেক সময় বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, যা তার নির্বাচনী প্রচারণাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

সম্ভাব্য ফলাফল:

কমলা হ্যারিসের পক্ষে কিছু বড় সুবিধা রয়েছে, বিশেষ করে তার প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক অবস্থান, সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রতি তার দৃঢ় মনোভাব এবং জনগণের কাছে তার পরিষ্কার ও পেশাদারী ইমেজ। তবে ট্রাম্পের সমর্থক বেসও শক্তিশালী এবং নির্বাচনী মঞ্চে তার উপস্থিতি এবং মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করার ক্ষমতা তাকে বিপদে ফেলবে না।

তবে যদি শুধুমাত্র প্রাথমিক দৃষ্টিকোণ থেকে মূল্যায়ন করা হয়, তাহলে কমলা হ্যারিস নির্বাচনে কিছুটা এগিয়ে থাকতে পারেন, কারণ তিনি বর্তমানে একটি প্রশাসন পরিচালনা করছেন এবং তার প্রতি দলের মধ্যে সমর্থন যথেষ্ট দৃঢ়।

টাইমলাইন: মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ২০২৪

আরো পড়ুন

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App