বিদ্রোহী গোষ্ঠী ঠেকাতে সিরিয়ায় ২ হাজার হিজবুল্লাহ যোদ্ধা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০৭ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
সিরিয়ায় একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ শহর দখল করছে বিদ্রোগী গোষ্ঠী। এতে আসাদ সরকারের অবস্থা টালমাটাল। আসাদকে রক্ষায় রাশিয়া ও ইরানের নেতাদের কপালে চিন্তার ভাজ। এমতাবস্থায় ইরান সমর্থিত লেবানিজ সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ সিরিয়ায় দুই হাজার যোদ্ধা পাঠিয়েছে।
গোষ্ঠীটির ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের বরাত দিয়ে শনিবার (৭ ডিসেম্বর) এএফপি এ তথ্য জানিয়েছে। একটি অভিযানে বিদ্রোহীরা সিরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ শহর দখলে নেয়ার পর মিত্র সিরিয়া সংকটে পড়ায় এই পদক্ষেপ নেয়া হলো। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের মিত্র হিজবুল্লাহ। এই গোষ্ঠী ২০১১ সাল থেকে সিরিয়ার যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে জড়িত। নাম না প্রকাশের শর্তে সূত্রটি জানিয়েছে, লেবাননের সীমান্তবর্তী কুসাইর এলাকায় হিজবুল্লাহর যোদ্ধাদের মোতায়েন করা হয়েছে। ইসলামপন্থী নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহী জোট গত সপ্তাহে অভিযান শুরু করার পর থেকে এই গোষ্ঠী মূলত তাদের অবস্থান রক্ষার জন্য সেখানে রয়েছে এবং কোনো সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেয়নি।
এদিকে বিদ্রোহী জোট ইতিমধ্যে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর আলেপ্পো ও কেন্দ্রীয় শহর হামা করায়ত্ত করেছে। বিদ্রোহী বাহিনী শনিবার (৭ ডিসেম্বের) হোমস শহরের প্রবেশদ্বার অবধি পৌঁছে গেছে এবং রাজধানী দামেস্কের দিকে এগুচ্ছে বলে সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে। তারা ২৭ নভেম্বর থেকে তাদের অভিযান শুরু করে। একই দিনে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়, যা লেবাননের গোষ্ঠীটিকে দুর্বল করে দিয়েছে। সূত্রটি আরো জানিয়েছে, হোমস শহরে ১৫০ জন সামরিক উপদেষ্টা পাঠিয়েছে হিজবুল্লাহ। যদি সিরীয় সেনাবাহিনী শহরটি রক্ষার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে এই উপদেষ্টারা সহায়তা করবে।
হিজবুল্লাহ ২০১৩ সাল থেকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদের বাহিনীকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়ে আসছে। ওই বছর বিদ্রোহীদের কাছ থেকে কুসাইর শহর পুনরুদ্ধারে হিজবুল্লাহ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। সেখানে একটি সামরিক ঘাঁটি ও প্রশিক্ষণ শিবিরও স্থাপন করেছিল তারা। যুদ্ধ কার্যত গত কয়েক বছর ধরে থমকে যাওয়ায় হিজবুল্লাহ বিগত দুই বছরে তাদের বেশির ভাগ যোদ্ধা প্রত্যাহার করে নেয়। কিন্তু আলেপ্পো ও হামা শহরে সামরিক উপদেষ্টা মোতায়েন রাখা হয়েছিল।
সূত্রটি জানিয়েছে, বিদ্রোহীদের সাম্প্রতিক অগ্রগতির আগে এই উপদেষ্টারা শহরগুলো ছেড়েছিল কিনা, তা নিশ্চিত নয়। আসাদের শাসন টিকিয়ে রাখতে রাশিয়া ও ইরানও সিরিয়ার যুদ্ধে হস্তক্ষেপ করেছে। গত ২৮ নভেম্বর ইরান জানায়, তাদের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর একজন জেনারেল আলেপ্পোতে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন। হিজবুল্লাহ ও তাদের মিত্রদের পক্ষে এই পরিস্থিতি নতুন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। বিদ্রোহী বাহিনীর সাম্প্রতিক সফল অগ্রযাত্রা আসাদ সরকারকে কোথায় নিয়ে ঠেকাবে তা নিয়ে ধুয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।