বিশাল সোনার খনি বিক্রি করে দিচ্ছে পাকিস্তান!

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:০৩ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
বেশ কয়েক বছর ধরে অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত পরমাণু শক্তিধর দেশ পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং বিভিন্ন মিত্র দেশের কাছ থেকে একাধিকবার আর্থিক সহায়তা নেয়া সত্ত্বেও সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেনি ইসলামাবাদ। তবে, তাদের সম্পদের ভাণ্ডারে রয়েছে এক বিশাল গুপ্তধন, যা দীর্ঘদিন ধরে তাদের আশার আলো দেখিয়ে আসছে।
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে অবস্থিত রেকো ডিক খনি, যা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ তামা ও সোনার খনি হিসেবে বিবেচিত। এই খনিই পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় সম্ভাব্য সমাধান হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে সাম্প্রতিক খবরে জানা গেছে, পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদ এই গুরুত্বপূর্ণ খনির ১৫ শতাংশ শেয়ার সৌদি আরবের কাছে বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, আন্তঃসরকার চুক্তির আওতায় এই শেয়ার বিক্রি করা হবে। চুক্তি অনুযায়ী, পাকিস্তান মোট ৫৪ কোটি ডলার পাবে। প্রথম ধাপে শতকরা ১০ ভাগ শেয়ারের জন্য তারা পাবে ৩৩ কোটি ডলার, আর দ্বিতীয় ধাপে বাকি ৫ ভাগ শেয়ারের জন্য পাবে ২১ কোটি ডলার। এই চুক্তি পাকিস্তানের জন্য তাৎক্ষণিক আর্থিক সহায়তা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হলেও, দেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ ও সম্পদ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এটি কতটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এই নিয়ে বিশ্লেষকরা ভিন্নমত পোষণ করছেন।
জানা গেছে, খনি প্রকল্পের অংশীদারিত্ব পাওয়ার বদলে পাকিস্তানের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য আর্থিক অনুদানের প্রস্তাব দেয় সৌদি, যা পাকিস্তানের অর্থনীতিকে মজবুত করতে পারে বলে আশা করছে ইসলামাবাদ। আর এ থেকেই খনি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয় শাহবাজ শরিফ সরকার। বর্তমানে এ খনির ৫০ শতাংশের মালিকানা যৌথভাবে পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকার ও বেলুচিস্তান সরকারের। বাকি ৫০ শতাংশের মালিক বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা বা কোম্পানি।
১৯৯৫ সালে প্রথম সোনা ও তামা উত্তোলন শুরু হয় বেলুচিস্তানের রেকো ডিক খনি থেকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই খনিতে প্রায় ৪০ কোটি টন সোনা মজুত রয়েছে, যার বর্তমান বাজারমূল্য আনুমানিক ১ লাখ কোটি মার্কিন ডলার। পাশাপাশি, এখানে প্রায় ৬০০ কোটি টন তামার মজুত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা আরো বলেন, এই বিপুল সম্পদ থেকে অন্তত ৪০ বছর ধরে সোনা ও তামা আহরণ সম্ভব। এত বিশাল সম্পদের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও পাকিস্তান এই খনির যথাযথ ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনায় বারবার ব্যর্থ হয়েছে।