সঞ্জয়ের মৃত্যুদণ্ড চান মমতা, কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ সরকার

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:১৩ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
আরজি করকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত সঞ্জয় রায়ের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্যটির সরকার। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সকালে হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন রাজ্য সরকারের আইনজীবী।
শাস্তি ঘোষণার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, তিনি এখনো ফাঁসির দাবিতে অনড়। সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে রাজ্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবে বলেও তখন তিনি জানান। সে অনুযায়ী আরজি করকাণ্ডে দোষী সঞ্জয় রায়ের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। সোমবার (২০ জানুয়ারি) শিয়ালদহ আদালত দোষীর আমৃত্যু কারাবাসের শাস্তি ঘোষণা করে।
মঙ্গলবার সকালে বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি)। মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছে দুই বিচারপতির বেঞ্চ।
শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস নির্দেশনায় লিখেছেন, আরজি করের ঘটনাকে বিরলের মধ্যে বিরলতম হিসেবে বিবেচনা করছেন না তিনি। যদিও মুখ্যমন্ত্রী এটিকে বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা বলেই মনে করছেন। মুখ্যমন্ত্রী শুরু থেকেই আরজি করকাণ্ডে দোষীর সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়ে এসেছেন। গত বছরের ৯ আগস্ট আরজি করের মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর দোষীর ফাঁসির দাবিতে রাস্তায় নেমেছিলেন তিনি। সোমবার শিয়ালদহ আদালত দোষীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়ার পরই মুখ্যমন্ত্রী আবারো দোষীর ফাঁসির দাবিতে সরব হয়েছেন।
মমতার কথায়, তিনি দোষীর ‘চরমতম শাস্তি’ চেয়েছিলেন। শিয়ালদহ আদালত যে শাস্তি দিয়েছেন, তাতে যে তিনি সন্তুষ্ট নন, তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘ফাঁসির সাজা হলে অন্তত মনকে সান্ত্বনা দিতে পারতাম।’
এই মামলায় প্রথমে তদন্ত চালাচ্ছিল কলকাতা পুলিশ। পরে তদন্তভার যায় সিবিআইর হাতে। সম্প্রতি গুড়াপ, ফরাক্কা, জয়নগরের ঘটনাগুলোতে দোষীদের ফাঁসি দিয়েছেন নিম্ন আদালত। এই মামলাগুলোর তদন্তভার রাজ্য পুলিশের হাতেই ছিল। সোমবার সিবিআইর তদন্ত নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার কথায়, ‘আমাদের হাতে এই মামলা থাকলে, আমরা অনেক আগেই ফাঁসির রায় করিয়ে দিতে পারতাম।’
তবে দোষীকে কেন ফাঁসি না দিয়ে আমৃত্যু কারাবাসের শাস্তি দেয়া হয়েছে, সে কথা নির্দেশনামায় ব্যাখ্যা করেছেন বিচারক দাস। নির্দেশনামায় তিনি লিখেছেন, ‘যাবজ্জীবন হলো নিয়ম। আর মৃত্যুদণ্ড হলো ব্যতিক্রম’। তিনি মনে করছেন, ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে ‘চোখের বদলে চোখ’ বা ‘দাঁতের বদলে দাঁত’ বা ‘নখের বদলের নখ’ বা ‘প্রাণের বদলে প্রাণ’-এর মতো প্রতিশোধমূলক প্রবৃত্তিগুলো থেকে সরে আসা উচিত। বর্বরতাকে বর্বরতা দিয়ে বিচার করা উচিত নয় বলে লিখেছেন বিচারক।