বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হলো সাবেক এমপি হানিফের বাড়ি

নুুর আলম দুলাল, কুষ্টিয়া থেকে
প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:০৬ পিএম

বাড়িতে কোনো জিনিসপত্র বা লোকজন ছিল না। ছবি : ভোরের কাগজ
কুষ্টিয়ায় বুলডোজার দিয়ে ভাঙা হয়েছে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফের বাড়ি।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে শহরের পিটিআই সড়কে তিনতলা বাড়িটি ভাঙা শুরু করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে নেতাকর্মীরা।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এই বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধ জনগণ। তারপর থেকে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল বাড়িটি। বুধবার রাতে ফের ভাঙচুর করা হলো সেই ভাঙা বাড়িতে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ৯টার দিকে দুই শতাধিক বিক্ষুব্ধ জনতা বুলডোজার নিয়ে এসে বাড়ির সামনের গেটসহ বাড়ির দেওয়াল ভাঙচুর করে। বাঁশের বেড়ায় আগুন ধরিয়ে দেয়। তবে বাড়িতে কোনো জিনিসপত্র বা লোকজন ছিল না।
এসময় বলতে শোনা যায়, ‘স্বৈরাচার শেখ হাসিনা আজকে ছাত্রলীগের ব্যানারে জাতির সামনে ভাষণ দেবেন। যে আমাদের ভাইদের গুলি করে দেশ থেকে পালিয়েছেন, তিনি কী করে কর্মসূচি ঘোষণা করেন। আমরা আওয়ামী লীগের দোষরদের কোনো অস্তিত্ব রাখতে চাই না’।
আরো পড়ুন : ওবায়দুল কাদেরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
এদিকে হানিফের বাড়ি ভাঙচুরের পরে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খানের কুষ্টিয়া শহরের কদমতলা মোড়ের বাড়িতে ভাঙচুর করতে গেলে ওই ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে বসবাসকারীদের প্রবল বাধার মুখে পেড়ে। এরপর বিক্ষুব্ধ জনতা নব নির্মিত বিলাসবহুল ৭ তলা বাড়ির সামনে মশাল মিছিল বের করে। এসময় রাস্তায় টায়ার জালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা।
শহর জুড়ে এই ভাঙচুর বা অগ্নি সংযোগের ঘটনাস্থলে কোনো আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের দেখা যায়নি। এ বিষয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কোনো কর্মকর্তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তা জানান, দেখুন আপনিও যা শুনেছেন আমিও তাই শুনছি। আমার কাছে মনে হচ্ছে নতুন করে একটা ভীতিকর পরিস্থিতি বা আতঙ্ক সৃষ্টির জন্যই তারা এই কাজ করছে। তারা হানিফের বাড়ি ছাড়াও জেলা আ. লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খানসহ অন্যান্য নেতাদের বাড়িতেও ভাঙচুর চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, যেখানে তাদের সঙ্গে মিনিমাইজ হয়েছে সেখান থেকে ফিরে এসেছে। এরা কারা বা এদের সাংগঠনিক পরিচয় কি সেটাও স্পষ্ট নয়। তাদের কাছে কোনো ব্যানার বা সাংগঠনিক পরিচয়ও ছিল না। হিট অব দ্যা মোমেন্টে এদের যে ভাবমুর্তি তাতে আইনশৃংখলা বাহিনী এদের কবল থেকে ভাঙচুর ঠেকানোর চেষ্টা করলে পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠতো।
তিনি আরো বলেন, এসব ঘটনায় এখনো কেউ কোনো অভিযোগ নিয়ে পুলিশের কাছে আসেনি। তবুও পুলিশ তদন্ত করে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।