আবু সাইদ হত্যায় একসঙ্গে চলবে দুই মামলা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১৫ পিএম

নিহত আবু সাইদ
রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ নিহতের ঘটনায় করা দুই মামলা একসঙ্গে চলবে। মামলা দুটির তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে রংপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)। রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) এ সংক্রান্ত আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আইনজীবী সূত্রে জানা গেছে, আবু সাইদ হত্যার ঘটনায় পুলিশ তাজহাট থানায় একটি মামলা করে। পরবর্তী সময়ে আবু সাঈদের ভাই রমজান আলী আরো একটি মামলা করেন। দুটি মামলাই তদন্ত করছে পিবিআই। রংপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার গত ২৭ আগস্ট দুই মামলার করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উভয় মামলা একইসঙ্গে তদন্ত চলবে বলে আদেশ দেন রংপুরের কোতোয়ালি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতের বিচারক।
দুই মামলার তদন্ত একসঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যাডভোকেট রোকনুজ্জামান রোকন বলেন, যেহেতু দুটি মামলাই জিআর, তাই এটির তদন্ত সাংঘর্ষিক হবে না।
আরো পড়ুন: সালমান এফ রহমানসহ ১৭৩ জনের নামে মামলা
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রংপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার জাকির হোসেন বলেন, দুই মামলার তদন্ত কীভাবে চলবে, সে বিষয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছিল। আদালত বলেছেন, দুই মামলার একসঙ্গে তদন্তে বাধা নেই।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে গত ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের ছাত্র ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন তিনি।
আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনায় গত ১৭ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বিভূতিভূষণ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। সে মামলায় আসামি করা হয়েছিল আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের।
পরে গত ১৮ আগস্ট রংপুর মেট্রোপলিটন আমলি আদালতে হত্যা মামলা করেন আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী। ওই মামলায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে ৩০-৩৫ জনকে।
আরো পড়ুন: শেখ হাসিনা-আহকাম উল্লাহসহ ১৯৫ জনের নামে মামলা
উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- তৎকালীন পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, রংপুরের ডিআইজি আব্দুল বাতেন, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মনিরুজ্জামান, উপ-পুলিশ কমিশনার আবু মারুফ হোসেন, সহকারী পুলিশ কমিশনার আরিফুজ্জামান, সহকারী পুলিশ কমিশনার ইমরান হোসেন, থানার ওসি রবিউল ইসলাম, পুলিশের এএসআই সৈয়দ আমীর আলী ও সুজন চন্দ্র রায়।
এছাড়া আরো আসামি করা হয়- বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ সভাপতি পোমেল বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক শামিম মাহফুজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদ মণ্ডল, গণিত বিভাগের শিক্ষক মশিউর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের কর্মকর্তা রাফিউল হাসান রাসেল, বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বিভূতিভূষণ, বেরোবি ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক বাবুল হোসেনকে।
আবু সাঈদ নিহতের ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছিল বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আন্দোলনকারী সমন্বয়ক ও শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর অনাস্থা পোষণ করায় কমিটির সদস্যরা গত ২০ আগস্ট পদত্যাগ করেন।