মাইগ্রেন: ভীতি নয় নিয়ন্ত্রণে আনুন

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২০, ০৮:২২ পিএম

মাইগ্রেন

মাইগ্রেনের ব্যথায় কাতর।

মাইগ্রেনের তীব্র ব্যথা
মাইগ্রেন- এক ধরনের মাথাব্যথা। এই ধরনের মাথা ব্যথায় যারা ভুগছেন তারা জানেন জীবন কত দুর্বিষহ হতে পারে। জীবনের প্রতিটি সময় কাটে অজানা আতংকে- কখন ব্যথা উঠে। সামাজিকভাবে তারা অনেক কিছুই পরিকল্পনা অনুযায়ী করতে পারেন না। কিন্তু এই অবস্থা থেকে কি পরিত্রাণ নেই? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে গিয়েই মাইগ্রেনের ব্যথা নিয়ে লেখার চেষ্টা করছি। বরাবরের মতো এবারও এই বিষয়ের সর্বশেষ তথ্য সরবরাহ করার চেষ্টা করব।
মাইগ্রেন মাথা ব্যাথার প্রকৃতি কেমন?
মাইগ্রেনের মাথাব্যথা সাধারণ মাথা ব্যথা থেকে আলাদা। সাধারণত মাথার একদিকে হয়। তবে দুদিকেও হতে দেখা গেছে। যাদের মাইগ্রেন হবার প্রবণতা আছে, তাদের শব্দ, আলো, গন্ধ, বাতাসের চাপের তারতম্য ও কিছু খাবার যেমন চকলেট, আঙুরের রস, পনির ইত্যদির প্রভাবে পুনরায় নতুন করে ভয়ঙ্কর মাথাব্যথা শুরু হতে পারে। তবে মাইগ্রেনে শুধু মাথাব্যথাই হয় না, তার সঙ্গে আরো কয়েকটি স্নায়ুবিক উপসর্গ হয়ে থাকে (যেমন কিছু আলো বা শব্দের অনুভূতি)।
উপসর্গ অনুযায়ী মাইগ্রেনের মধ্যেও অনেক রকমফের আছে। কারো কারো মতে সেরকম কয়েকটি মাইগ্রেনের উপসর্গ থাকলে মাথাব্যথা না থাকলেও মাইগ্রেন হয়েছে বলা যেতে পারে। এগুলোকে এটিপিক্যাল মাইগ্রেন বলে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই ধরনের মাথাব্যথার আগে কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায় যাদের ‘অরা’ বলে। যেমন-চোখে ভিন্ন রকম কিছু দেখতে পাওয়া, কথা বলায় অসংগতি, মুখের একপাশে বা হাতে বা পায়ে ভিন্ন অনুভূতি হওয়া। এগুলোকে ‘অরা’ বলে। মাইগ্রেন মাথাব্যথার সঙ্গে ‘অরা’ থাকলে তাকে ক্ল্যাসিক মাইগ্রেইন বলে।
অন্যান্য মাথাব্যথা থেকে মাইগ্রেনের ব্যথা আলাদা করার উপায়?
কিছু কিছু উপসর্গ জানা থাকলে অন্যান্য মাথাব্যথা থেকে এটিকে আলাদা করা যায় সহজেই।
• ব্যথা ২ ঘণ্টা থেকে ৭২ ঘণ্টা স্থায়ী হতে পারে।
• বমি বমি ভাব হতে পারে।
• আলোর দিকে তাকাতে অসুবিধা হতে পারে।
• অতিরিক্ত শব্দের কারণে ব্যথা বাড়তে পারে।
• ঘন ঘন হাই ওঠা ও কাজে মনোনিবেশ করতে অসুবিধা হতে পারে।
• অরা বা পূর্বলক্ষণ থাকতে পারে।
• পরিবারে অন্য কোনো সদস্যের এই ধরনের ব্যথা থাকতে পারে।
• ৫-৪-৩-২-১ ধরনের লক্ষণ থাকতে পারে। যেমন:
৫ বা তার বেশি বার ব্যথা ৪ ঘণ্টা থেকে ৩ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এর সঙ্গে অন্তত একটি লক্ষণ যেমন বমি বমি ভাব, আলো বা শব্দের প্রতি সংবেদনশীলতা।
মাইগ্রেন মাথাব্যথার কারণ কী?
বংশগত সমস্যা: আমাদের দেহের অধিকাংশ রোগের ক্ষেত্রে জন্মগত সমস্যা একটি কারণ হয়ে থাকে। মাইগ্রেন এর ব্যতিক্রম নয়। জন্মগত সমস্যা বেশ কয়েকটি কারণে হতে পারে।
১. মানবদেহের সবকিছু জিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এই জিনগত সমস্যার কারণে আমাদের মস্তিষ্কে সেরেটোনিন নিঃসরণের পরিমাণ কমে যায়। যে কারণে মস্তিষ্কে ব্যথা নিয়ন্ত্রণকারী স্নায়ু সক্রিয় হয়ে ব্যথা হয়।
২. গবেষণায় দেখা গেছে মাইগ্রেনের ব্যথার সময় মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বেড়ে যায়। এ সময় মস্তিষ্কের আবরণে রক্ত সরবরাহকারী রক্ত নালী থেকে এক ধরনের প্রোটিন নিঃসরণ হয়। যা ব্যথা নিয়ন্ত্রণকারী স্নায়ুকে সক্রিয় করে ও ব্যথা হয়।
৩. যারা সেনসিটিভ মস্তিষ্কের অধিকারী তাদের ক্ষেত্রে মাইগ্রেনের ব্যথা হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
৪. কিছু কিছু খাবার রয়েছে যা গ্রহণের পর মাইগ্রেনের ব্যথার তীব্রতা বেড়ে যায় বা হালকা ব্যথার ভাব থাকলে তা পরিপূর্ণ মাইগ্রেনের ব্যথায় রূপ লাভ করে। তার মাঝে নিম্নলিখিত খাবার উল্লেখযোগ্য :
(ক) চকোলেট
(খ) পনির
(গ) মদ্যপান
(ঘ) কোলাজাতীয় পানীয়।
[caption id="attachment_237020" align="aligncenter" width="700"]
মাইগ্রেনের তীব্র ব্যথা[/caption]
৫. মাইগ্রেন রোগী কিন্তু পাশাপাশি সাইনাসসমূহের প্রদাহে ভুগছেন বা প্রচণ্ড সর্দি কাশি বা ঠান্ডায় ভুগছেন; তাদের ক্ষেত্রে মাইগ্রেনের ব্যথার প্রকোপ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়।
৬. যখন প্রচন্ড গরম পড়ে এবং পরিবেশের অবস্থা ভ্যাপসা আকার ধারণ করে, তখন মাইগ্রেনের রোগীর মাথাব্যথার প্রকোপ ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। অপরদিকে শীতকালে যদি ঠান্ডা বাতাস বেশি লাগে বা কুয়াশা পরিবেষ্টিত অবস্থা বিরাজ করে তখন এর প্রকোপ আরো বেড়ে যায়।
৭. হরমনের প্রভাব: মাইগ্রেনের মাথাব্যথা সাধারণত মেয়েদের বেশি হয়। যেসব মেয়ের বয়ঃসন্ধিকালে মাসিক শুরু হলে মাসিক নিয়ন্ত্রণকারী হরমনের তারতম্য হয়। যে কারণে মাইগ্রেনের ব্যথা উঠতে পারে। যারা দীর্ঘদিন জন্ম বিরতিকরণ পিল খাচ্ছেন তাদের ক্ষেত্রেও অধিকাংশ সময় ইস্ট্রোজেন বেশি থাকে। তারা মাইগ্রেনের ব্যথার ঝুঁকিতে থাকেন। অনেকের ক্ষেত্রে মাসিকের পূর্বাবস্থায় মাইগ্রেনের ব্যথা উঠতে পারে।
৮. অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপ: যারা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করেন বা মানসিক চাপে থাকেন তাদের শরীরে হরমনের তারতম্য হয়। যে কারণে তারা মাইগ্রেনের ব্যথার ঝুঁকিতে থাকেন। এছাড়াও এসব রুগীর উচ্চ রক্তচাপ, নিদ্রাহীনতা, হতাশা থাকে। যে কারণেও মাইগ্রেনের ব্যথা ট্রিগার হতে পারে।
৯. অতিরিক্ত চিনি জাতীয় খাবার খাওয়া: আমরা যখন অনেক বেশি মিষ্টি খাবার খেয়ে ফেলি তখন আমাদের রক্তের সুগারের মাত্রা বেড়ে যায় যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত ইনসুলিনের উৎপাদন হতে থাকে। যার ফলে রক্তের সুগারের মাত্রা নেমে যায়। এ ভাবে হঠাৎ হঠাৎ রক্তে সুগারের মাত্রার তারতম্যের কারণে মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হতে পারে।
১০. হঠাৎ করে কফি খাওয়া বন্ধ করে দেয়া: সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যারা নিয়মিত ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় খেতে অভ্যস্ত, তারা হঠাৎ করে সেই অভ্যাস ত্যাগ করলে বা বন্ধ করে দিলে মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হতে পারে।
১১. অতিরিক্ত আওয়াজ: অতিরিক্ত আওয়াজ, খুব জোরে গান শোনা ইত্যাদির কারণেও মাইগ্রেনের সমস্যা শুরু হয়ে যেতে পারে।
মাইগ্রেন নিয়ন্ত্রণে এক্সারসাইজ বা ব্যায়ামের উপকারিতা
১. ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীর অনেকদিক থেকেই নিয়ন্ত্রণে থাকে। শরীরের সব জায়গায় রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে। হার্টের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
২. মাথা ও ঘাড়ের কিছু চমৎকার এক্সারসাইজ আছে যেগুলো মাথায় ও ঘাড়ে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে। ভালো ঘুম হতে দারুণভাবে সাহায্য করে।
৩. এক্সারসাইজ ও সঠিক ঘুমের মাধ্যমে শরীরের হরমন নিয়ন্ত্রণে থাকে। এঙ্কেফালিন নামক পদার্থ নিঃসরণ বাড়ায় যাতে মানসিক চাপ কমে ও বিভিন্ন স্ট্রেসে স্বাভাবিক থাকার প্রবণতা তৈরি হয়।
৪. গবেষণায় দেখা গেছে যারা নিয়োমিত ব্যায়াম করেন তাদের ক্ষেত্রে মাইগ্রেনের এটাক কমে যায়। ধীরে ধীরে অনেক নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
৫. এক্সারসাইজের মাধ্যমে শরীর থেকে এন্ডরফিন নামক পদার্থ নিঃসরণ বেড়ে যায়। যা শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যথা কমাতে পারে। আমরা মরফিন বা প্যাথেডিন ঔষধের মাধ্যমে ব্যথা নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যাবহার করি এই এন্ডরফিন এদের সমগোত্রিয় ও শরীরের আভ্যন্তরীণ পদার্থ।
মাইগ্রেনের ব্যথায় এক্সারসাইজ বা ব্যায়াম করার নিয়ম:
১. আপনি যদি হঠাৎ করে ব্যায়াম শুরু করেন, তাহলে আপনার শরীরে হঠাৎ অতিরিক্ত অক্সিজেনের প্রয়োজন হবে যেটা ভালো নয়।
২. ব্যায়মের সময় আপনার রক্তের গ্লুকোজের সংকট হতে পারে। সেক্ষেত্রে হালকা কিছু খেয়ে নিতে পারেন।
৩. ব্যায়ামের সময় আপনার পানি শূন্যতা তৈরি হতে পারে। তাই ব্যায়ামের পূর্বে পরিমাণ মতো পানি পান করে নিলে ভালো হয়।
৪. প্রথমেই অতিরিক্ত চাপের এক্সারসাইজ না করা ভালো।
৫. একটি ডায়রি সংরক্ষণ করুন। সেখানে লিখে রাখুন আপনার মাইগ্রেনের এটাক ব্যায়ামের সাথে সাথে পরিবর্তিত হচ্ছে কিনা।
৬. ব্যায়াম শুরুর আগে প্রস্তুতি নিন। পানি ও হালকা খাবার সাথে রাখুন।
৭. ব্যায়ামের ক্ষেত্রে নিচের স্টেপগুলো ফলো করা যায়-
* খাওয়া
* পান করা
* ওয়ার্ম আপ
* হালকা ঢিলেঢালা পোশাক পরা।
* পরিকল্পনা করুন
* মনে রাখুন- শরীরের উপর চাপ হয় এমন কিছু করা যাবে না।
কোন ব্যায়াম মাইগ্রেনের জন্য উপকারী?
• ঘাড় ও মাথার ব্যায়ম
• জগিং
• সুইমিং
• সাইকেলিং
[caption id="attachment_237019" align="aligncenter" width="700"]
মাইগ্রেনের ব্যথায় কাতর।[/caption]
ঘাড় ও মাথার ব্যায়াম
ঘাড় ও মাথার ব্যায়াম মাইগ্রেন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকারী। এতে মাথা ও ঘাড়ের মাংশ পেশি সচল থাকে, রক্ত চলাচল ভালো থাকে, মাথা ও ঘাড়ের জয়েন্টসগুলো সচল থাকে। ঘুম ভালো হবে। ঘাড় ও মাথার সাধারন ব্যথা গুলো ধীরে ধীরে চলে যাবে। আপনি স্ট্রেস ফ্রি অনুভব করবেন।
* চিন টাগঃ ঘাড়ের একটি খুবই কার্যকারী ব্যায়াম। মাথা ও ঘাড় সোজা রেখে এক আঙ্গুল দিয়ে নিজের থুতনি স্পর্শ করুন। এবার ঘাড় শক্ত করুন একই সাথে থুতনি পেছনের দিকে একটু সরে আসবে। এভাবে ৫-১০ সেকেন্ড থাকুন। পদ্ধতি টি ৫-১০ বার করুন।
* দুই হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে থুতনিকে নিচের দিক থেকে উপরের দিকে চাপ দিন ও থুতনিকে নিচের দিকে চাপ দিন যাতে ঘাড় ও মাথা সোজা থাকে।
* মাথার ডান পাশে ডান হাত দিয়ে চাপ দিন ও একই সাথে মাথা দিয়ে হাতের উপর চাপ দিন যাতে মাথা সোজা থাকে.৫-১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। একই ভাবে বাম পাশে করুন।
* যে কোনো এক হাতের তালু দিয়ে কপালে চাপ দিন ও একই সাথে কপাল দিয়ে হাতের উপর চাপ দিন যাতে মাথা ও ঘাড় সোজা থাকে।এভাবে ৫-১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন।
* দুই হাতের আঙ্গুলগুলো লক করে তালুর দিকের অংশ দিয়ে মাথার পেছনের দিকে চাপ দিন ও একই সাথে মাথার পেছন দিক দিয়ে হাতের উপর চাপ দিন যাতে মাথা ও ঘাড় সোজা থাকে। এভাবে ৫-১০ সেকেন্ড ধরে রাখুন।
* পুরো পদ্ধতিগুলো সকালে ও বিকালে করার চেষ্টা করুন।
মাথাব্যথার সাথে যে সকল লক্ষণ থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাবেন:
* মাথাব্যথার সাথে চোখে দেখতে সমস্যা হওয়া সব সময়ের জন্য
* মাথাব্যথার সাথে খিঁচুনি থাকলে।
* মাথাব্যথার সাথে শরীরের কোন অংশ অবশ অনুভব করা।
* মাথা ব্যথার সাথে জ্বর ও ঘাড় শক্ত হওয়া থাকলে।
* মাথা ব্যথার সাথে স্মরণ শক্তি কমে যাওয়া শরীরের ব্যালেন্স না থাকা।
মাইগ্রেন ব্যথার চিকিৎসা কী?
মাইগ্রেন ব্যথার আজ পর্যন্ত কোনো অনুমোদিত মেডিকেল চিকিৎসা নেই। বিভিন্ন ধরনের পেইন কিলার ব্যাবহার করা হয়। এসকল পেইন কিলার দীর্ঘদিন ব্যাবহারের ফলে পেটে আলসার, উচ্চরক্তচাপ ও কিডনি সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই চিকিৎসক পরামর্শ ছাড়া এগুলো দীর্ঘদিন ব্যবহার মোটেই ভালো সিদ্ধান্ত নয়।
টিএমএস: মাইগ্রেনে ব্যথার একটি আধুনিক চিকিৎস। উন্নত দেশগুলোতে এটা ব্যবহার করা হয়। এটি কীভাবে কাজ করে এটা পরিষ্কার না। তবে গবেষণায় দেখা গেছে এটি কাজ করে।
মাইগ্রেন ব্যথার রুগীদের করণীয়
* মাইগ্রেনের ব্যথার উদ্রেককারী বিষয়গুলো এড়িয়ে চলুন।
* চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করুন। যে কোনো বিষয় পরিবারের সাথে শেয়ার করুন। পরামর্শ নিয়ে কাজ করুন।
* নিয়মিত দেখানো ব্যায়ামগুলো করার চেস্টা করুন।
* নিয়মিত সঠিক সময় ঘুমাতে যান ও সঠিক সময় ঘুম থেকে উঠার চেষ্টা করুন।
* সঠিক নিয়মে ঘুমের অভ্যাস করুন। ঘুমের সময় ঘাড়, মাথা স্বাভাবিক পজিশনে রাখার অভ্যাস করুন। শুধু মাথার নিচে বালিশ না দিয়ে ঘাড়ের নিচে বালিশ ব্যাবহার করুন। সোফা বা চেয়ারে ঘুম পরিহার করুন।
* খাদ্যাভ্যাস মেনে চলুন। যে সকল খাদ্যে মাইগ্রেন ট্রিগার হতে পারে সেগুলো পরিহার করুন।
* অবসর সময়কে আপনার প্রিয় জিনিসের সাথে উপভোগ করুন যেমন- বাগান করা, গান, কবিতা, লেখালেখি।
* অতিরিক্ত বা অধিক্ষণ টিভি বা স্ক্রিন দেখা থেকে বিরত থাকুন।
মনে রাখতে হবে মাইগ্রেনকে শত্রু ভাবা যাবে না। বরং একে মেনে নিয়ে একে ভালো বন্ধুতে রূপান্তর করুন। আপনার নিয়ম নয় বরং মাইগ্রেনের নিয়মে অভ্যস্ত হওয়ার চেষ্টা করুন। তাহলে মাইগ্রেন সমস্যা আপনাকে কোনো ক্ষতি করবে না বরং নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ধীরে ধীরে মাইগ্রেন ব্যথার চক্র পরিবর্তিত হবে। মাইগ্রেন আপনার নিয়ন্ত্রণে আসবে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
লেখক: কনসালটেন্ট ও পেইন ফিজিশিয়ান। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা।

