পরিবারকে সময় দিন, মানসিক চাপ কমবে: ফিলিপা পেরি

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:১০ পিএম

ছবি: দ্য গার্ডিয়ান
আমরা অনেকেই জীবনের নানা ক্ষেত্রে শতভাগ দেয়ার চেষ্টা করি, কিন্তু সফল হতে পারি না। ফলে ব্যবসা, সম্পর্ক, পরিবার কিংবা বন্ধুদের প্রতি দায়িত্ব পালনেও উদাসীন হয়ে পড়ি। সম্প্রতি এমন সমস্যায় ভোগা এক ব্যক্তি প্রখ্যাত মনোবিদ ফিলিপা পেরির কাছে পরামর্শের জন্য আসেন। এর জবাবে ফিলিপা বলেন, জীবনে সব ক্ষেত্রে শতভাগ দেয়ার চাপে না থেকে ৭০ শতাংশ দিয়ে চলাটাই যথেষ্ট। এতে কাজও হবে, মানসিক চাপও কমবে। খবর দ্যা গার্ডিয়ানের।
বাদ দিন নিখুঁত হওয়ার চাপ
ফিলিপা পেরি জানান, জীবনে সবকিছুতে নিখুঁত হওয়ার চেষ্টা মানুষের সৃজনশীলতা এবং সম্পর্কের ক্ষতি করে। তিনি বলেন, আপনি যেভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছেন, সেটা অসাধারণ। আপনি নিজের ব্যবসার ৬টি শাখা পরিচালনা করছেন এবং ব্যবসা ঠিকঠাক চলছে। কিন্তু আপনার মনে হচ্ছে, আপনি যথেষ্ট দায়িত্ব নিচ্ছেন না। নিখুঁত হওয়ার চেষ্টাই এই সমস্যার মূল কারণ। ৭০ শতাংশ দিয়ে কাজ চালান। তাতে আপনার জীবন সহজ হবে এবং আপনি মানসিকভাবে চাপমুক্ত থাকবেন।
তিনি বলেন, অনেকেই নিজেদের জীবনে ‘আমার এটা করা উচিত’ ধরনের চাপ অনুভব করেন। এটি আপনার মনস্তাত্ত্বিক চাপ বাড়ায় এবং কাজে গতি আনতে পারে না। এর পরিবর্তে, আপনি আসলে কী করতে চান, সেই অনুভূতিগুলোর প্রতি মনোযোগ দিন।
নিজের অনুভূতির গুরুত্ব
ফিলিপা পেরি বলেন, জীবনের প্রতিটি সিদ্ধান্ত খুব বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে নেয়ার চেষ্টা করবেন না। কখনো কখনো যা ভালো লাগে তা-ও করতে হয়, নয়তো আপনি পুরোপুরি ক্লান্ত হয়ে পড়বেন এবং জীবনের সবকিছু থেকে দূরে সরে যাবেন।
পেরি বলেন, প্রতিটি মানুষের মনে এক ধরনের ‘অভ্যন্তরীণ শাসক’ থাকে, যাকে আমরা ‘টপ ডগ’ বলতে পারি। এই টপ ডগ আপনাকে বলে, ‘আপনার এই কাজটি করা উচিত’। কিন্তু আমাদের ভিতরে আরো একটি সত্তা আছে, যাকে আমরা ‘আন্ডারডগ’ বলতে পারি। এই সত্তা বলে, ‘আমি এটা করব না’। যখন আপনি সবকিছু নিখুঁতভাবে করার চেষ্টা করবেন, তখন এই আন্ডারডগ আপনার বিরুদ্ধে কাজ করতে শুরু করবে।
পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো জরুরি
ফিলিপা বলেন, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার ছোট মেয়ের সাথে খেলুন, তাকে প্রতিদিন হাসানোর চেষ্টা করুন। সময় নিয়ে তার সাথে মজা করুন এবং তাকে শুধু দায়িত্ব নয়, একজন মানুষ হিসেবে দেখুন। এতে করে তার সাথে আপনার বন্ধন শক্তিশালী হবে। এক্ষেত্রে কখনোই তাড়াহুড়ো করে করা উচিত নয় বরং উপভোগের বিষয় হিসেবে নিন।
স্ত্রী এবং পরিবারের সাথে সম্পর্ক মজবুত করুন
স্ত্রীর সঙ্গে আপনার সমস্যার সমাধানে খোলামেলা কথা বলার পরামর্শ দেন ফিলিপা। তিনি বলেন, আপনার বর্তমান মানসিক অবস্থার কথা স্ত্রীকে জানিয়ে তার সঙ্গে সম্পর্ক আরো দৃঢ় করুন। ছোট ছোট কাজের মাধ্যমে পরিবারের সাথে সম্পর্ক মজবুত করতে পারেন, যেমন—বারবিকিউ করা বা একসাথে আনন্দের সময় কাটানো।
জীবনের শেষ সময়ে আফসোস করবেন না
ফিলিপা আরো বলেন, বয়স হলে মানুষ মৃত্যুশয্যায় এসে সবচেয়ে বেশি আফসোস করে, পরিবারের সঙ্গে পর্যাপ্ত সময় কাটায়নি। এই ধরনের আফসোস থেকে বাঁচতে এখন থেকেই পরিবারের সঙ্গে বেশি সময় কাটান, তাদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি করুন।