গঙ্গা যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসবে দর্শকের জমজমাট উপস্থিতি

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২২, ০৮:৩৬ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ


মেঘলা আকাশ। তবে গরমের হাসফাস নেই। প্রকৃতি ছিল অনেকটাই শান্ত। কার্তিকের এমন ফুরফুরে মিষ্টি বিকেলে শিল্পকলার মাঠজুড়ে সবুজ ঘাসের বিছানায় গুচ্ছ গুচ্ছ হয়ে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন অনেকে। কেউবা নাট্যশালার সিঁড়ি আর রেলিংয়ে হাঁটুভেঙে বসেছিলেন অনুষ্ঠান দেখার অপেক্ষায়, কেউ কেউ ছোট টংঘরে চায়ের কাপে ঝড় তুলেছেন সদ্য ঝড়তোলা সিত্রাংয়ের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে। দূর থেকে শিল্পকলার বিভিন্ন মিলনায়তন থেকে কথার গুঞ্জরণ আর নূপুরের রিনিঝিনি শব্দ ভেসে আসছিল অন্যরকম ছন্দে। দর্শকের গুঞ্জরিত উপস্থিতি ছিল জমজমাট। যে আয়োজনের জন্য এতো অপেক্ষা।
বিকাল ৪টায় উন্মুক্তমঞ্চের ঢোলের বাদ্যে সবারই দৃষ্টি নিবদ্ধ হলো সেদিকেই। মঙ্গলবার মুক্তমঞ্চে উত্তরীয় থিয়েটারের পথনাটক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় গঙ্গা যমুনা সাংস্কৃতিক উৎসবের পঞ্চম দিনের অনুষ্ঠানমালা। এরপর শিশু সংগঠন কিংবদন্তী আবৃত্তি পরিষদ ও অচিন পাখির দলীয় পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়। রোদের ইসকূল পরিবেশন করে দলীয় আবৃত্তি। সুরতাল পরিবেশন করে দলীয় সংগীত। ভোরের পাখি নৃত্যকলা কেন্দ্রের দলীয় নৃত্যের ছন্দে যেন পুরো প্রাঙ্গন মুখর হয়ে উঠল। বিমান চন্দ্র বিশ্বাস আর সানজিদা মঞ্জুরুল হ্যাপীর একক সংগীত পরিবেশনায় তুমুল করতালিতে উচ্ছ্বসিত ছিল দর্শক। মাসুদ আহমেদ, মাহমুদা সিদ্দিকা সুমি আর নুসরাত ইয়াসমিন রুম্পার একক আবৃত্তি পরিবেশনা মুগ্ধ হয়ে শুনতে শুনতে দর্শক করতালি দিতেই যেন ভুলে গেছেন!

মুক্ত মঞ্চের পরিবেশনা শেষে সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনের অনুষ্ঠান শুরু হয় সন্ধ্যায়। অনুষ্ঠানে দর্শনীর বিনিময়ে পরিবেশিত হয় জলার্ক-এর আবৃত্তি প্রযোজনা কাঁটাতারে প্রজাপতি। উদ্ভাসন-এর আবৃত্তি পরিবেশনা আগমনী।
এ ছাড়া জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে দর্শনীর বিনিময়ে মঞ্চস্থ হয় বাতিঘর এর প্রযোজনা মাংকি ট্রায়াল। মূল রচনা জেরম লরেন্স ও রবার্ট এডউইন লী, মঞ্চরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন মুক্তনীল।
স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয় মৈত্রী থিয়েটারের প্রযোজনা চা অথবা কফি। এর গল্প রমানাথ রায়, গল্প বিন্যাস সূচনা তিশা, নাট্যরূপ দিয়েছেন মেরাজ আহমেদ, নির্দেশনায় ছিলেন নিয়াজ আহমেদ।

বাংলাদেশ মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হয় ঢাকা থিয়েটার মঞ্চের প্রযোজনা বহিপীর। রচনা সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, বিনির্মাণ ও নির্দেশনায় ছিলেন আফরিন হুদা তোড়া।
আজ উৎসবের ষষ্ঠদিনের আসরে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে আমন্ত্রিত নাট্যদল হিসেবে ভারতের অনীক নাট্যদল মঞ্চায়ন করবে নাটক ‘পিরানদেল্লো ও পাপেটিয়ার’, পরীক্ষণ থিয়েটার হলে দেশ নাটক মঞ্চায়ন করবে নাটক ‘নিত্যপুরাণ’, ঊৎস নাট্যদল মঞ্চায়ন করবে নাটক ‘স্বর্ণজননী’। ৩১ অক্টোবর শেষ হবে এগারোদিনের এই উৎসব।