ভরাডুবি জেনেই নির্বাচন প্রতিহতের অপচেষ্টায় বিএনপি

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২৩, ০৯:২৫ পিএম

বৃহস্পতিবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের ‘রূপসী বাংলা’ আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধনে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদসহ অন্যরা। ছবি: ভোরের কাগজ

ভরাডুবি হবে জেনেই নির্বাচন প্রতিহতের অপচেষ্টা চালাচ্ছে বিএনপি। নিষিদ্ধ সংগঠনের মতো গুপ্তস্থান থেকে অনলাইনে গাড়ি- ঘোড়া পোড়ানোর নির্দেশ দিচ্ছে, মানুষের ওপর হামলা পরিচালনা করছে, এরপর তো মানুষের কাছে যাওয়ার কোনো সুযোগ তাদের নাই। তারা জানে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তাদের ভরাডুবি হবে। সে জন্য তারা নির্বাচন প্রতিহত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের বার্ষিক আয়োজন ‘রূপসী বাংলা’ আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।
যৌথভাবে শিল্পকলা একাডেমি ও বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন একাডেমির সচিব সালাহ উদ্দিন আহাম্মদ, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি ইন্দ্রজিৎ কুমার ঘোষ ও সাধারণ সম্পাদক কাজী বোরহান উদ্দিন।
তফসিল প্রত্যাখ্যান করে বিএনপি জ্বালাও-পোড়াও করছে, বিএনপি নেতা রিজভী অজ্ঞাত স্থান থেকে বলছেন, তারা নির্বাচন হতে দেবে না -সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালেও নির্বাচন প্রতিহত করার অনেক চেষ্টা হয়েছিলো। নির্বাচন প্রতিহত করে বিএনপি গণতন্ত্রের যাত্রাকে প্রতিহত করতে চেয়েছিলো, তারা পারেনি। ২০১৮ সালেও সেই অপচেষ্টা ছিলো, সেটিও পারেনি। এখন বিএনপির শক্তি, সামর্থ্য, ক্ষমতা ২০১৪ এবং ২০১৮ তুলনায় অনেক কম।
হাছান মাহমুদ বলেন, মাঝেমধ্যে চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে যেভাবে বাস, গাড়ি-ঘোড়া পোড়াচ্ছে এবং মানুষের ওপর হামলা করছে, জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারছে এগুলো কোনো রাজনৈতিক দলের কাজ নয়। এগুলো জঘন্য সন্ত্রাসীদের কাজ। বিএনপি এখন আসলে রাজনৈতিক দলের চরিত্র হারিয়ে ফেলেছে, সন্ত্রাসী সংগঠনে রূপান্তরিত হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতাদের সবার বিরুদ্ধে তো মামলা নাই, সবার বিরুদ্ধে তো ওয়ারেন্ট নাই, কিন্তু কাউকে দেখা যাচ্ছে না। কারণ তারা ২৮ অক্টোবর যে অপরাধ করেছে এবং এর পরবর্তী প্রতিটি দিন যে অপরাধ সংঘঠিত করে যাচ্ছে এ জন্য জনগণের কাছে চেহারা দেখানোর সাহসটা তাদের নাই, প্রকাশ্যে আসার সেই সাহসটা নাই।
দু’টি কারণে আজকে বিএনপির জনপ্রিয়তা তলানিতে গেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, একটি হচ্ছে গাজায় ইসরাইলি বাহিনী যেভাবে মানুষকে হত্যা করেছে, সেটির প্রতিবাদ সারা পৃথিবী জুড়ে হয়েছে, এমন কি অনেক ইহুদিও সেটির প্রতিবাদ করেছে, শুধু বিএনপি এবং জামাত সেটির প্রতিবাদ করেনি। এ দেশের সমস্ত মুসলমানকে তারা আহত করেছে, সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইলের দোসরে পরিণত হয়েছে। আর অপরটি হলো, ইসরাইলি বাহিনীর অনুকরণে তারা নিরীহ মানুষ, সাংবাদিক, পুলিশ, হাসপাতাল, এম্বুলেন্স, গাড়ি-ঘোড়ার ওপর হামলা পরিচালনা করছে, অগ্নিসন্ত্রাস করছে।
আমাদের স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং স্বাধীনতা উত্তরকালে বহু কালজয়ী ছবি ফটোজার্নালিস্টরা তুলেছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, একজন ফটোজার্নালিস্টের ফটো তোলার মুন্সিয়ানার কারণে সংবাদের গুরুত্ব অনেক বেড়ে যায়। ফটোজার্নালিস্টরা অনেক সময় সমাজের অনুন্মোচিত বিষয়গুলো উন্মেচন করে।
লিয়াকত আলী লাকীর বলেন ‘রূপসী বাংলা’য় অসাধারণ কনসেপ্ট নিয়ে কাজ করছে ফটো সাংবাদিকরা। আমি তাদের সাধুবাদ জানাই। ফটো সাংবাদিকরাও শিল্পী এবং শিল্প যোদ্ধা। তাদের ক্যামেরা রাইফেলের ভূমিকা পালন করে। ছবিগুলো এমনভাবে পাই যেন একেকটি শিল্পকর্ম।
শুরুতে নাট্যজন লিয়াকত আলী লাকীর ভাবনা ও পরিকল্পনায় পরিবেশিত হয় যুদ্ধ বিরোধী সমবেত নৃত্য ‘অবহেলায় মৃত্যু আর নয়’। নৃত্য পরিবেশন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিশু-কিশোর নৃত্যশিল্পীবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে আলোকচিত্র প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ ও সম্মাননা দেয়া হয়। এতে প্রথম স্থান অধিকারী রিয়াজ আহমেদ সুজনকে ৪০ হাজার টাকা, ক্রেষ্ট ও সার্টিফিকেট দেয়া হয়। দ্বিতীয় মোহাম্মদ পনির হোসাইনকে ৩০ হাজার টাকা এবং তৃতীয় লুৎফর রহমানকে ২০ হাজার টাকা, ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট দেয়া হয়। যৌথভাবে মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান এবং মাহবুব হোসেন খানকে বিশেষ পুরস্কার দেয়া হয় ৫ হাজার টাকা, ক্রেষ্ট ও সার্টিফিকেট। এছাড়া বরেণ্য শিল্পী সম্মাননা ২০২৩ এবং মরণোত্তর সম্মাননা ২০২৩ দেয়া হয় বরেণ্যশিল্পী স্বপন সরকার এবং এ কে এম মহসীনকে। উভয়কেই দেয়া হয় ২০ হাজার টাকা, ক্রেষ্ট ও সার্টিফিকেট।
মরণোত্তর সম্মাননা পেয়েছেন মুফতী মুনীর এবং মীর মহিউদ্দিন সোহান। উভয়কেই ২০ হাজার টাকা, ক্রেষ্ট ও সার্টিফিকেট দেয়া হয়।
পুরস্কার বিতরণ শেষে লিয়াকত আলী লাকীর ভাবনা ও পরিকল্পনা এবং রীতা নাহারের গ্রন্থনায় পরিবেশিত হয় কোরিগ্রাফি ‘রোহিঙ্গা নামা’ এবং সমবেত নৃত্য ‘আজ যতো যুদ্ধরাজ’ পরিবেশন করে একাডেমির নৃত্য দল।
