ইরানিদের ‘ভাই’ সম্বোধন এমবিএসের
গাজা-লেবাননে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান পেজেশকিয়ানের

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৬ এএম

ছবি : সংগৃহীত
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস) রবিবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে একটি ঐতিহাসিক টেলিফোনে কথা বলেন, সৌদি আরব এবং ইরানের মধ্যে সম্পর্কের নতুন দিগন্তের সূচনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এই আলাপ। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ইরানি জনগণকে "ভাই" বলে সম্বোধন করেন এবং তাদের সাফল্য কামনা করেন। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উষ্ণতা ও ঐক্যের প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ইরানি প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান এই ফোনালাপে গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করার গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে, সৌদি আরবের নেতৃত্বে একটি কার্যকর সমাধান আসবে। যুদ্ধ এবং রক্তপাতের ইতি ঘটাতে সহায়ক হবে। পেজেশকিয়ান আরো বলেন, এই সংকটের সমাধানে সৌদি আরবের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং আশা করি, সৌদি নেতৃত্বে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান বের হবে।
এ সময়, আল-মায়েদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরব ও ইরান ভবিষ্যতে নিজেদের মধ্যে সহযোগিতা আরও জোরদার করার ব্যাপারে আলোচনা করেছে এবং দুই দেশই তাদের সম্পর্ক আরও গভীর করার জন্য আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট জানান, তিনি আসন্ন আরব লীগ এবং ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) যৌথ সম্মেলনে অংশ নিতে পারবেন না, কারণ তিনি রাষ্ট্রীয় কাজ নিয়ে ব্যস্ত। তবে, তিনি জানিয়েছেন যে, ইরানের প্রতিনিধি হিসেবে ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজা আরেফ সম্মেলনে যোগ দেবেন।
ইরানি প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, সৌদি যুবরাজ এমবিএসের নেতৃত্বে এই সম্মেলন সফল হবে এবং গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। পেজেশকিয়ান সৌদি যুবরাজকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আপনার অনুপস্থিতি আমি বুঝতে পারছি, তবে সম্মেলনটি শান্তির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এর সফলতা আমরা প্রত্যাশা করি।
এদিকে, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এই ফোনালাপকে 'ঐতিহাসিক বাঁক বদল' হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে, সৌদি আরব এবং ইরান তাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি ইরান সফরের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে জানান, ইরান সফর আমার জন্য গর্বের হবে।
অন্যদিকে, পেজেশকিয়ান সৌদি যুবরাজকে ইরান সফরের জন্য আবারো আমন্ত্রণ জানান। এমবিএস বলেন, ইরান সফরের জন্য আমি প্রস্তুত, এবং এটি আমার জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়।
এদিকে, আজ সোমবার থেকে সৌদি আরবে আরব লীগ ও ওআইসি সম্মেলনে অংশ নিতে আরব ও মুসলিম দেশগুলোর কর্মকর্তারা পৌঁছাতে শুরু করেছেন। সম্মেলনে গাজা ও লেবাননে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের বিষয়ে আলোচনা হবে এবং এর মাধ্যমে ফিলিস্তিন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান করার লক্ষ্যে একটি আন্তর্জাতিক জোট গঠনের উদ্যোগ নেয়া হবে।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অক্টোবর মাসের শেষদিকে এই সম্মেলন আয়োজনের ঘোষণা দেয়। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী নেতারা ফিলিস্তিন এবং লেবাননে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন নিয়ে আলোচনা করবেন এবং এ বিষয়ে একটি স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন।