আসাদের বাসভবনে লুটপাট-ভাঙচুর

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৫ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের দুই দশকের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকার অবসান ঘটেছে। বিদ্রোহীদের তড়িৎগতির আক্রমণের পর রবিবার (৮ ডিসেম্বর) সকালেই রাজধানী দামেস্ক দখল করে আসাদের স্বৈরশাসনের পতন ঘটে। আসাদের পতনের পরপরই দেশজুড়ে লাখ লাখ সিরীয় নাগরিক উল্লাসে মেতে ওঠেন। বেশ কিছু সিরীয় দামেস্কের কেন্দ্রে আসাদের বিলাসবহুল বাসভবনে ঢুকে লুটপাট চালান।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির একজন প্রতিনিধি জানান, দামেস্কের পতনের পরপরই আসাদের বিলাসবহুল বাড়িতে লুটপাট চালিয়েছে কয়েক ডজন সিরীয়। এ সময় বিভিন্ন বয়সী নারী, শিশু এবং পুরুষদের আসাদের বাড়ি ও বিশাল বাগানে ঘুরতে দেখা যায়। যদিও প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের কক্ষগুলো একেবারে খালি ছিল, তবুও কিছু আসবাবপত্র মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখা যায়। এছাড়া, প্রাসাদে সংরক্ষিত আসাদ এবং তার বাবার বেশ কিছু প্রতিকৃতি ভেঙে ফেলা হয়।
দামেস্কের বাসিন্দা ৪৪ বছর বয়সি আবু ওমর বলেন, আমি প্রতিশোধ নেয়ার জন্য এখানে এসেছি। তারা অবিশ্বাস্য উপায়ে আমাদের ওপর নিপীড়ন চালিয়েছে। তিনি নিজের মোবাইলফোনে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে তোলা ছবি দেখিয়ে বলেন, আমি এখানে এসে ছবি তুলছি। কারণ আসাদের বাড়ির মাঝখানে এসে অত্যন্ত খুশি।
রবিবার সকালে সিরীয় নাগরিকরা ঘুম থেকে উঠেই একটি পরিবর্তিত পরিস্থিতি দেখতে পান। একদিনের মধ্যে সিরিয়ায় এসেছে বিশাল পরিবর্তন। মাত্র ১১ দিনের তড়িৎগতির বিদ্রোহী অভিযানে আসাদের ক্ষমতা উল্টে যায় এবং সকালের দিকেই ব্যক্তিগত বিমানে করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান তিনি। তবে তার গন্তব্য এখন পর্যন্ত অজানাই রয়েছে।
এদিকে, সিরিয়ার একাধিক নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ বিমান দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ তাকে বহনকারী বিমানটি উড্ডয়ন পরপরই উপকূলীয় এলাকায় পৌঁছানোর পর আকস্মিকভাবে ইউটার্ন নেয় এবং কিছু মিনিট পর বিমানটি সিরিয়ার আকাশ থেকে উধাও হয়ে যায়।
প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বাসভবনটি দামেস্কের আল-মালিকি অভিজাত এলাকায় অবস্থিত। তিনটি ছয় তলা ভবন নিয়ে গঠিত এই বাসভবনে সাধারণ নাগরিকদের প্রবেশাধিকার ছিল সীমিত। এএফপির এক সংবাদদাতা জানান, দামেস্কের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে পুড়ে যাওয়া একটি অভ্যর্থনা হলও তিনি দেখেছেন।
পতনের আগ পর্যন্ত আসাদের বাসভবন এবং প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে সাধারণ নাগরিকদের প্রবেশ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ছিল। তবে আবু ওমর বলেন, আমি আর ভয় করছি না। এখন আমার একমাত্র উদ্বেগ, আমরা সিরিয়ান নাগরিক হিসেবে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে একসাথে এই দেশটি গড়ে তুলবো।