×

ময়মনসিংহ

শেরপুরে ধীর গতিতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি, দুর্ভোগে লাখো মানুষ

Icon

খোরশেদ আলম, শেরপুর থেকে

প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:২২ পিএম

শেরপুরে ধীর গতিতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি, দুর্ভোগে লাখো মানুষ

ছবি: ভোরের কাগজ

   

ইতোমধ্যেই শেরপুরের নদীগুলোর পানি কমে গেছে। তবে বিস্তীর্ণ এলাকার পানিগুলো নামছে ধীর গতিতে। উজান থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রেখে গেছে সর্বনাশা বন্যার ভয়াবহতা। বেড়িয়ে আসছে ক্ষত। পাকা সড়ক থেকে কাঁচা রাস্তা-ঘাট, শতশত কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে শত শত একর আমন ফসল। নদীর পাড় ভেঙ্গে জমিতে বালুর স্তর পড়ে চাষাবাদ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বালুর স্তরে মিলে যেন এক ধ্বংসযজ্ঞ। 

অন্যদিকে জেলার বন্যার ভয়াবহতা কমছে ধীর গতিতে। এখনো জেলার অন্তত ৭-৮টি ইউনিয়ন সম্পূর্ণ এবং আরো ৬-৭টি আংশিক বন্যা কবলিত রয়েছে। চরম দুর্ভোগে রয়েছে বন্যা কবলিত এসব এলাকার মানুষেরা।

সূত্র মতে, বন্যায় শেরপুর সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩টি, শ্রীবরদী উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে ২টি, ঝিনাইগাতি উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬টি, নকলা উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪টি এবং নালিতাবাড়ী উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ১১টি প্লাবিত হয়েছে।

আরো পড়ুন: ৬ দিন বন্ধ থাকবে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি

ইতোমধ্যেই শেরপুর সদরসহ সবক’টি উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে ক্ষত-বিক্ষত ও বিধ্বস্ত ওইসব ইউনিয়নে বেড়েছে দুুর্ভোগ। কাঁদা পানিতে সব একাকার থাকায় এখনো অনেকের চুলা জ্বলছে না। বিধ্বস্ত হওয়া কয়েক’শ ঘরবাড়ির বাসিন্দাদের ঠাঁই হয়েছে রাস্তার ধারে, স্বজনদের বাড়িতে অথবা আশপাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। রাস্তা-ঘাট বিধ্বস্ত হওয়ায় অনেক এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন রয়েছে। আকস্মিক পানির তোড়ে ঘরের আসবাবপত্র থেকে শুরু করে তৈজসপত্র ও ধান-চাল এবং অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী ভেসে গেছে। চরম বিপাকে রয়েছেন শতশত গৃহহীন পরিবার।  

অন্যদিকে ভাটি অঞ্চলগুলোতে এখনো রাস্তা-ঘাট তলিয়ে রয়েছে। সেখানকার ঘরবাড়ি এখনো পানিতে ভাসছে। ঘরবাড়ি ছেড়ে বানভাসীরা আশ্রয় নিয়েছেন অন্যত্র। সরিয়ে নিয়েছেন গবাদিপশু। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, রান্না করা খাবার, শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকটে রয়েছে তারা। সেনাবাহিনী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও অসংখ্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা সার্বক্ষণিক খাবারসহ অন্যান্য জরুরী সামগ্রী বিতরণ করে এলেও সময়মতো সব জায়গায় ত্রাণসামগ্রী পৌছাচ্ছে না। ফলে অনাহারে-অর্ধাহারে অনেকে।

শেরপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রণব কুমার কর্মকার জানান, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী শেরপুর জেলায় ঢলের পানিতে তলিয়ে ৬ হাজার পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাড়িয়েছে ৫৫ কোটি টাকা। 

আরো পড়ুন: সোনামসজিদ স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

শেরপুরের অতিরিক্ত কৃষিবিদ হুমায়ুন কবির জানান, পাহাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে মোট ৯৩ হাজার ৫শ হেক্টর আমন আবাদের প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমি তলিয়ে গেছে।  

শেরপুরের সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাকিরুল ইসলাম জানান,পাহাড়ি ঢলের পানির তোড়ে গড়ে ১০/১৬ কিলোমিটার সড়কের ক্ষতি সাধিত হয়েছে। তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামতের কাজ চলছে।   

এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্থ নদীর বাঁধ ও মহাসড়ক থেকে গ্রামীণ কাঁচা-পাকা সড়ক ও ব্রিজ-কালভার্টের হিসাব এখনো করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে শুক্রবার থেকে সোমবার পর্যন্ত জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে নারীসহ ৫ জন, নকলায় শিশুসহ ৩ জন এবং ঝিনাইগাতি উপজেলায় এক অজ্ঞাতনামা নারী মিলে মোট ৯ জনের প্রাণহানী ঘটেছে। রবিবার দুপুর থেকে বৃষ্টি বন্ধ হলেও মঙ্গলবার ভোররাত থেকে আবারো শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। ফলে দুর্ভোগ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়েছে। 

শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহবুবুর রহমান বলেন, বন্যার পানি দ্রুত কমে যাচ্ছে। দুর্ভোগে রয়েছেন বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ। জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পুলিশ বাহিনী, বিজিবির পক্ষ থেকে ত্রাণ তৎপরতা চালানো হচ্ছে। তিনি আশাবাদী দ্রুতই পানি নেমে যাবে। 

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App