শেরপুরের সীমান্তে বিদ্যুৎ ফাঁদে বন্যহাতির মৃত্যু, আটক ১

খোরশেদ আলম, শেরপুর থেকে
প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৪ পিএম

ছবি : ভোরের কাগজ
শেরপুরের নালিতাবাড়ী সীমান্তে বিদ্যুৎ ফাঁদে এক বন্যহাতির মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে পুড়াগাঁও ইউনিয়নের পাহাড়ি গ্রাম বাতকুচি এলাকায় ধান খেতে বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে হাতিটির মৃত্যু ঘটে। এ ঘটনায় শহিদুল ইসলাম নামে এক কৃষককে আটক করা হয়েছে।
সরজমিন জানা গেছে, শেরপুরের সীমান্তবর্তী পাহাড়ি গ্রামগুলোতে আমন ধান পেকে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বন্যহাতির তাণ্ডব আবারো শুরু হয়েছে। নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকায় কৃষকদের জীবিকা নির্বাহের স্বপ্ন আমন ফসলের খেতে হাতির দল আক্রমণ করছে। শতশত হাতির দল উপদলে বিভক্ত হয়ে ৪০ কিলোমিটার পাহাড়ি এলাকায় তাণ্ডব চালাচ্ছে।
বন্যহাতির দল দিনের বেলায় গভীর অরণ্যে আশ্রয় নেয় এবং সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে খাদ্যের সন্ধানে কৃষকদের ফসলি জমি ও লোকালয়ে প্রবেশ করে। কৃষকেরা তাদের খেতের ফসল ও জানমাল রক্ষার্থে রাত জেগে পাহাড়া দিচ্ছেন। ঢাকঢোল, পটকা ফুটিয়ে এবং মশাল জ্বালিয়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করলেও হাতির দল লোকালয়ে তেড়ে আসছে। এতে কৃষকদের ফসল, কলার বাগান ও শাকসবজি বাগানের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে।
কিছু কৃষক নিজেদের ফসল রক্ষায় বৈদ্যুতিক ফাঁদ তৈরি করেছেন। বৈদ্যুতিক সংযোগ দিয়ে আলো জ্বালিয়ে রাখা হচ্ছে, যা হাতি তাড়াতে সহায়ক হয়। কিন্তু এই বৈদ্যুতিক ফাঁদে মাঝে মাঝে বন্য হাতির মৃত্যু হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে প্রায় অর্ধশত বন্যহাতির একটি দল বাতকুচি এলাকায় কৃষকদের আমন ধানের খেতে হানা দেয়। তাণ্ডবের এক পর্যায়ে হাতিটি বৈদ্যুতিক ফাঁদে জড়িয়ে যায় এবং মারা যায়। ঘটনার পর হাতির দল ক্ষিপ্ত হয়ে সেখানে আরও তাণ্ডব চালায় এবং মৃত হাতিটিকে ঘিরে রাখে।
শুক্রবার শেরপুরের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) সাদিকুল ইসলাম খানসহ অন্যান্য বন কর্মকর্তারা থানা পুলিশকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। হাতির মৃত্যুর কারণ জানতে আলামত সংগ্রহ করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়।
মধুটিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মৃত হাতির আলামত সংগ্রহের পর হাতির মৃতদেহটি মাটি চাপা দেয়া হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শহিদুল ইসলাম নামে এক কৃষককে আটক করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।