অবশেষে ঢাকায় পৌঁছলেন নিথর হাদিসুর

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২২, ১২:২২ পিএম

‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মরদেহ ঢাকায় পৌঁছেছে। (বামে নিহত হাদিসুর রহমান)

সোমবার দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মরদেহ ঢাকায় পৌঁছায়। ছবি: ভোরের কাগজ

‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মরদেহ ঢাকায় পৌঁছানোর পর কান্নায় ভেঙে পড়েন তার স্বজনরা। ছবি: ভোরের কাগজ

‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মরদেহ ঢাকায় পৌঁছানোর পর কান্নায় ভেঙে পড়েন তার স্বজনরা। ছবি: ভোরের কাগজ
ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে রকেট হামলায় নিহত বাংলাদেশি জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান আরিফের লাশ আজ ঢাকায় পৌঁছেছে। দুপুর ১২টা ৩ মিনিটে টার্কিশ এয়ারলাইন্স এর টিকে-৭২২ নম্বর ফ্লাইটে মরদেহ শাহজালাল আন্তজার্তিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেছে। নিহত হওয়ার ১২ দিন পর মরদেহ ঢাকায় পৌঁছাল। এর আগে তোর কি সময় রাত আড়াইটায় এই ফ্লাইটটি হাদিসের মরদেহ নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
বিমানবন্দরের কার্গো গেট এলাকায় হাদিসুরের মরদেহ নেয়ার জন্য উপস্থিত ছিলেন হাদিসুর রহমানের খালা এবং খালাতো ভাই মোরশেদ। তাদের কান্নায় কার্গো ভিলেজ এর গেটের সামনে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা ঘটে। হাদীসের খালা বারবার চিৎকার করে কান্নাকাটি করছিলেন এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন। এবার জাহাজ বাংলাদেশে আসার পর হাদিসের বিয়ে করার কথা ছিলো। বিয়ের জন্য খালাকে মেয়েও দেখতে বলেছিলেন। জাহাজ ইউক্রেনে আটকা পড়ার পরেও ফোনে কথা হয়েছে একাধিকবার। হাদিসুর তখন তার খালাকে জানিয়েছিল, জাহাজে এক মাসের খাবার আছে। কোন সমস্যা নেই। যুদ্ধ একটু থামলেই আমরা ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের চলে আসব।
[caption id="attachment_339864" align="aligncenter" width="700"]
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফির্সাস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) সভাপতি ক্যাপ্টেন মো. আনাম চৌধুরী জানান, হাদিসুরের লাশ দুপুর ১২টার দিকে ঢাকায় এসে পৌঁছে। সেখান থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে মরদেহ হাদিসের গ্রামের বাড়ি বরগুনায় পাঠানোর সব ব্যবস্থা প্রস্তুত রয়েছে। এরপর সেখানে জানাজার পর পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে। বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলায় তার গ্রামের বাড়ি।
নিহত ক্যাপ্টেন হাদিসুর রহমানের খালাতো ভাই মোরশেদ বলেন, বিমানবন্দর থেকেই ভাইয়ের লাশ সরাসরি গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে নেওয়ার পর বাড়ির পাশের স্কুল মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। পরিবারের অন্য সদস্যরা সবাই এখন বাড়িতেই অবস্থান করছে।
[caption id="attachment_339865" align="aligncenter" width="700"]
‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজটি গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে জলসীমায় নোঙর করে। ২৩ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরু হলে অলভিয়া বন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। জাহাজটি ২৯ জন নাবিক-ক্রু নিয়ে ওখান আটকা পড়ে। ২ মার্চ রাত সাড়ে ৯টা জাহাজে রকেট হামলার ঘটনা ঘটে। এতে বিস্ফোরণে মারা যান জাহাজটির থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান। ঘটনার পর জাহাজে আটকা পড়ে ২৮ নাবিক-ক্রু। পরে ৫ মার্চ তাদেরকে বিশেষ ব্যবস্থায় উদ্ধার করা হয় এবং রোমানিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়।