আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে দ্বন্দ্বই কাল হয় সোহেল চৌধুরীর

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২২, ০২:৪১ পিএম

মঙ্গলবার রাতে গুলশানের একটি বাসা থেকে বিদেশি মদসহ আশিষ চৌধুরী গ্রেপ্তার করে র্যাব। ছবি: ভোরের কাগজ

মঙ্গলবার রাতে গুলশানের একটি বাসা থেকে বিদেশি মদসহ আশিষ চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের সময় উদ্ধারকৃত কয়েকটি বিদেশি মদের বোতল। ছবি: ভোরের কাগজ
আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীর বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। তাকে উচিত শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করে আজিজ মোহাম্মদ ভাই, আশিষ চৌধুরী ও বান্টি ইসলাম। শিক্ষা দেয়ার দায়িত্বটি দেয়া হয় শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনকে। ইমন ও তার লোকজন মিলে সোহেলকে গুলি করে হত্যা করে।
মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি আশিষ চৌধুরীকে গ্রেপ্তারেরর পর জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানিয়েছে র্যাব। মঙ্গলবার রাতে তাকে গুলশানের একটি বাসা থেকে বিদেশি মদসহ গ্রেপ্তারের বিষয়ে আজ বুধবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে র্যাব আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, বনানী ট্রাম্পস ক্লাব নিয়ে সোহেল চৌধুরীর সঙ্গে ক্লাবটি মালিক বান্টি ইসলাম ও আশিষ চৌধুরীর ঝামেলা ছিল। এছাড়া আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে সোহেল চৌধুরীর বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি নিয়েও মনোমালিন্য ছিল। এরপর তিনজন মিলে সোহেলকে উচিত শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করে। আর সেটার দায়িত্ব দেয়া হয় ইমনকে।
[caption id="attachment_339301" align="aligncenter" width="700"]ঘটনার দিন ইমন, আদনানসহ আরও কয়েকজন মিলে সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে জানিয়েছে আশিষ চৌধুরী।

বনানীর ১৭ নম্বর রোডের আবেদীন টাওয়ারে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারা যান নায়ক সোহেল চৌধুরী। ওই ঘটনায় নিহতের ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
[caption id="attachment_343612" align="aligncenter" width="700"]
মামলার তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- আদনান সিদ্দিকী, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ, তারেক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন, ফারুক আব্বাসী, শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ও আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন। এর দুই বছর পর মামলাটির বিচার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার দুই নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
[caption id="attachment_199740" align="aligncenter" width="700"]
সে বছরই আসামিদের মধ্যে একজন হাইকোর্টে আবেদন আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৩ সাল থেকে দীর্ঘ ১৯ বছর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটি স্থগিত ছিল।
গত ২০ মার্চ ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জাকির হোসেন চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
পরোয়ানা জারি হওয়া অন্য দুই আসামি হলেন- ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম ও সেলিম খান। জামিনে থাকা এ তিন আসামির পক্ষে তাদের আইনজীবীরা কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।