মাঠে থানা ভবন নির্মাণের প্রতিবাদ করায় মা-ছেলে আটক

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২২, ০৭:৪২ পিএম

সৈয়দা রত্না। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর পান্থপথে কনকর্ড টাওয়ারের সামনে কলাবাগান তেঁতুলতলা মাঠের চারপাশের জমিতে চলছে পুলিশের দেয়াল নির্মাণ কাজ। এর প্রতিবাদ করায় মাাঠ রক্ষার অন্যতম আন্দোলনকারী ও সমাজকর্মী সৈয়দা রত্নাকে রবিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে প্রিজন ভ্যানে করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এক পর্যায়ে তার ছেলে এইচএসসি পরীর্ক্ষী আব্দুল্লাহ পিয়াংসুকে আটক করে কলাবাগান থানা পুলিশ। এর আগে মাঠে অর্ধশতাধিক পুলিশ মোতায়েন করে সেখানে অবকাঠামো নির্মাণ শুরু হয়। কলাবাগান থানা ভবন নির্মাণ হওয়ার কথা রয়েছে সেখানে। রবিবার সকালে তেঁতুলতলা মাঠ থেকে তাকে ২০-২৫ জন নারী পুলিশ রত্নাকে ধরে একটি একটি পুলিশের ভ্যানে তোলে নেয়। পরে তাকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় সৈয়দা রত্না ফেসবুকে নির্মাণের প্রতিবাদে লাইভ করছিলেন।
এ প্রসঙ্গে পুলিশের নিউমার্কেট অঞ্চলের সহকারী কমিশনার শরিফ মো. ফারুকুজ্জামান বিকেলে বলেন, স্থানীয় লোকজন ও শিশুদের এনে কাজে বাধা দেয়ার কারণে দুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে কোনো অপরাধ পেলে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। সরকারি কাজে বাঁধা ও সোশ্যাল মিডিয়ায় পুলিশকে নিয়ে মিথ্যা প্রচারে তাদের নামে মামলা হতে পারে। সোস্যাল মিডিয়ায় তার কার্যক্রম যাচাই করা হচ্ছে। পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। কলাবাগান থানার ডিউটি অফিসার এসআই মিজান দুপুরে জানান, এক নারীকে থানা আনা হয়েছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবেন।
জানা গেছে, গত বছরের ২৪ আগস্ট ঢাকা জেলা প্রশাসনের এক নোটিসে বলা হয়, ডিএমপির কলাবাগান থানার নিজস্ব ভবন নির্মাণের জন্য এই সম্পত্তি সরকার কর্তৃক অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের ওই নোটিশে এই জমিকে পতিত জমি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে কলাবাগানের বাসিন্দা, পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন, সমাজকর্মী, উন্নয়নকর্মী, সাংস্কৃতিককর্মী ও শিশু-কিশোররা এই নোটিশের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন।
গত ৩১ জানুয়ারি সেখানে তারকাঁটার বেড়া দিয়ে বেষ্টনী তৈরি করে পুলিশ। খেলার মাঠ হিসেবে পরিচিত জায়গাটিতে কলাবাগান থানার ভবন হওয়ার কথা রয়েছে। তবে থানা ভবন নির্মাণের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী আন্দোলন করছে। মাঠটির চারদিকে কয়েকটি রেইনট্রি ও মেহগনি গাছ, এক পাশে আবর্জনার ভাগাড়। এছাড়াও মাঠের এক কোণায় স্থানীয়দের লাশ গোসল করানোর ঘর রয়েছে। জায়গাটি খোলা হওয়ায় সেখানে স্থানীয় শিশুরা সুযোগ পেলেই খেলাধুলা করে। নানা বয়সি মানুষ সেখানে নিয়মিত হাঁটেন, আড্ডা দেন। এটিই ঢাকার কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠ নামে পরিচিত। তবে প্রস্তাবিত কলাবাগানের থানা ভবন হওয়ায় এটি এভাবে ব্যবহারের সুযোগ থাকছে না। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বলছে, এটি সিটি করপোরেশনের তালিকাভুক্ত কোনো মাঠ নয়। স্থানীয় লোকজন মাঠের মতো করে ব্যবহার করে আসছেন।