সিইসিকে মেরুদণ্ড শক্ত রেখে কাজ করার আহ্বান জাফরুল্লাহর

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২২, ০৩:৪৮ পিএম
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে মেরুদণ্ড শক্ত রেখে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। আর জনস্বার্থ বিরোধী কিছু হলে মেরুদণ্ড শক্ত রেখেই সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল পদত্যাগ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বুধবার (২৪ জুলাই) সিইসির সঙ্গে নির্বাচন ভবনে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের কাছে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
সার্চ কমিটির কাছে সিইসির কাজী হাবিবুল আউয়ালের নাম প্রস্তাবকারী বলেন, আমার কাছে মনে হলো এখনো ওনারা (সিইসি ও চার নির্বাচন কমিশনার) শুনতে চান। আউয়াল সাহেবের একটা গুণ হলো উনিতো জজ ছিলেন, অপর পক্ষের বক্তব্য শুনতে চান। আমি আশাহত হবো না, উনি নিশ্চয় সফল হবেন। শক্ত থাকবেন। আমি মনে করি, জনস্বার্থ বিরোধী কিছু হলে মেরুদণ্ড শক্ত রেখে উনি পদত্যাগ করবেন।
তিনি বলেন, কমিশন খুব কঠিন অবস্থার মধ্যে চলছে। সরকারের উচিত হবে কিছুটা গিভ অ্যান্ড টেক করে সুষ্ঠু নির্বাচন করা। এটা করতে হলে আগ বাড়িয়ে কথা বলা বন্ধ করতে হবে সিইসিকে। আজকেও হানিফ (আওয়ামী লীগ নেতা) বলেছেন দেড়শ নয়, ৩শ আসনেই ইভিএম চাই। ওনাদের জন্য ভালো হবে চুপ করে থাকা। এখন ইভিএমের কারণে যদি নির্বাচনটাই বন্ধ হয়ে যায়, ইলেকশনটা যদি বয়কট হয়, তাহলে এটা জাতির জন্য খুব দুর্ভাগ্যজনক হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, সবাইকে নির্বাচনে নেয়া ইসির মূল দায়িত্ব। ১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত ভুল হয়েছে। এমন কিছু করবেন না যাতে নির্বাচনই না হয়। এজন্য আমার প্রস্তাব হলো ১৫০টির পরিবর্তে ৩শ আসনের পাঁচটি করে কেন্দ্র ব্যবহার করার।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, না ভোটের কথা প্রবর্তনের কথা বলেছি। না ভোটের ব্যাপারে মত আছে। ইভিএম নিয়ে হটকারিতা করতে না করেছি। বলেছি, আপনাদের ওপর ধীরে ধীরে আস্থা বেড়েছে। সেই সুনামটা অক্ষুণ্ন রাখার চেষ্টা করেন। সিইসি বলেছেন, আমরা ভেবে দেখি কি কি করা যায়।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপিসহ অন্য দল যদি ইভিএমের কারণে বয়কট করে দায়টা ইসির ঘাড়ে চাপবে। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। সরকার যেমন দায়ী হবে, ইসিও তেমন দায়ী হবে। আমার কাছে মনে হয়েছে ওনারা যে শতভাগ একমত হয়েছেন তা না। উনারা সরকারের চাপে আছেন, ওনারা ভাবছেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ইভিএম আরেকটা ভোটের চক্রান্ত। কেন দায়িত্বটা আপনি নেবেন? সেজন্য বলেছি উল্টা কাজ করতে পারেন কিনা। দেড়শটাতেই না করে ৩শ’টাতেই পাঁচটা করে কেন্দ্র হবে। তাহলে আমরা দেখতে পারবো, জানতে পারবো। আমাদের জন্য দরকার সুষ্ঠু নির্বাচন, শেখ হাসিনার জন্যও দরকার। গণতন্ত্র না হলে দেশে যে কিছু ভুল সিদ্ধান্ত চলছে, এই ওষুধের দোকান রাত ১২টা পর্যন্ত খোলা, এটা পাগলামি ছাড়া কী হতে পারে! এতে কয়টাবাতি জ্বলবে বা ইয়ে.. হবে। সরকার যেহেতু জনগণ বিচ্ছিন্ন, সেজন্যই এই এসব নৈরাজ্যগুলো হচ্ছে।
তিনি বলেন, ইভিএমের পক্ষে তো আওয়ামী লীগ জোরেশোরে ছিল। তাদের হয়তো ব্যাক দেওয়ার মাইন্ড, কিছু না করলে বোধহয় উল্টাপাল্টা কিছু করে দেবে, উল্টাপাল্টা যে কিছু করে দেবে তা নয়। আস্থার অভাব। এটা বুঝতে হবে। ইভিএমের মাধ্যমে প্রতারণার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে। সেজন্য গ্রহণ করা যাবে না।
জাফরুল্লাহ আরও বলেন, গণসংহতি আন্দোলনের নিবন্ধন দিতে জোনায়েদ সাকীর পক্ষে হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন। এই বিষয়ে সিইসিকে বলেছি, আপনি এটা শেষ (নিবন্ধন) করে দেন। তাহলে লোকে আপনাকে ভুল বুঝবে না।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে জাফরউল্লাহ চৌধুরী রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের কিছু দাবি নিয়ে দলটির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ইসিতে এসেছিলেন।