×

জাতীয়

মৌলবাদের বিস্তার রুখতে জোরালো অঙ্গীকার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৪:৩৮ পিএম

   

সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদের বিস্তার রুখতে ভারত ও বাংলাদেশের দুই সরকারপ্রধান নরেন্দ্র মোদী ও শেখ হাসিনা জোরালো অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন বলে এক যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। দুই শীর্ষ নেতা দক্ষিণ এশিয়া এবং এর বাইরে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদের বিস্তার রুখতে তাদের জোরালো অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। সীমান্তে প্রাণহানির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় দুই শীর্ষ নেতা সন্তোষ প্রকাশ করেন। দুই পক্ষ সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন।

৩৩ অনুচ্ছেদের ওই বিবৃতিতে রাজনীতি, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য, সংযুক্তি, পানিসম্পদ, উন্নয়ন–সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক, জনগণের মেলবন্ধনসহ দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার সব বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির শীর্ষ বৈঠক নিয়ে আজ বুধবার (৭ আগস্ট) যৌথ বিবৃতি প্রচার করা হয়। এতে দুই শীর্ষ নেতা পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন, অন্তর্জাল নিরাপত্তা, তথ্য যোগাযোগ, মহাকাশপ্রযুক্তি, পরিবেশবান্ধব ও সুনীল অর্থনীতির মতো নতুন ক্ষেত্রে সহযোগিতা এগিয়ে নিতে রাজি হয়েছেন।

দুই শীর্ষ নেতা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনা করেছেন। কোভিড-১৯ মহামারি ও বৈশ্বিক পরিস্থিতির দরুন সরবরাহব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে তাঁরা এ অঞ্চলের সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের স্বার্থে বন্ধুত্ব ও অংশীদারত্বে ব্যাপকতর সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

চার দিনের সফরে প্রধানমন্ত্রী গত সোমবার দিল্লিতে এসেছেন। এ সফরে গতকাল মঙ্গলবার নয়াদিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতি দেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফর চলাকালে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও ভাইস প্রেসিডেন্ট শ্রী জগদীপ ধনখারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস. জয়শঙ্কর এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন মন্ত্রী শ্রী জি কিষাণ রেড্ডি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় শহীদ ও গুরুতর আহত ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ২০০ জন সদস্যের জন্য “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্র বৃত্তি” চালু করা। ৭ সেপ্টেম্বর তিনি বাংলাদেশ ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন।

দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী ৬ সেপ্টেম্বর একান্তে বৈঠক করেন। এছাড়াও দুই দেশের প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে ৭টি সমঝোতা স্মারক সই হয়। দুই দেশের ঐতিহাসিক ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্কের বিষয়টি বৈঠকে উঠে আসে। গণতন্ত্র ও মূল্যবোধের ভিত্তিতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের চমৎকার অবস্থা বজায় রয়েছে বলে বৈঠকে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন উভয় দেশের নেতৃবৃন্দ। সার্বভৌমত্ব, সাম্য, আস্থা ও বোঝাপড়ার উপর ভিত্তি করে সর্বব্যাপী দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্বে প্রতিফলন ঘটানোর বিষয়ে উভয় দেশই একমত পোষণ করেন। এমনকি একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব সৃষ্টি করার বিষয়েও আলোচনা হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর উদযাপনে যোগ দিতে ২০২১ সালের মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাষ্ট্রীয় সফরের কথা স্মরণ করেন। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ভারতের রাষ্ট্রপতির রাষ্ট্রীয় সফর এবং বাংলাদেশের বিজয় দিবসের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে, সম্মানিত অতিথি হিসাবে যোগদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা, প্রতিরক্ষা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য ও সংযোগ, জলসম্পদ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, উন্নয়ন সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্কসহ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সম্পূর্ণ ধারা নিয়ে আলোচনা করেছেন। উভয় দেশের শীর্ষ নেতা পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন, সাইবার নিরাপত্তা, আইসিটি, মহাকাশ প্রযুক্তি, সবুজ শক্তি এবং নীল অর্থনীতির মতো নতুন ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছেন।

আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক স্বার্থের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের কারণে কোভিড-১৯ মহামারীর প্রভাব এবং সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধার কথা মাথায় রেখে দুই দেশের নেতারা এই অঞ্চলের সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য বন্ধুত্ব ও অংশীদারিত্বের চেতনায় বৃহত্তর সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

দুই দেশের সরকারপ্রধানই দ্বিপাক্ষিক এবং উপ-আঞ্চলিক রেল, সড়ক এবং অন্যান্য সংযোগ উদ্যোগ বাস্তবায়নের গুরুত্বের ওপর জোর দেন। উভয় পক্ষই চলমান দ্বিপাক্ষিক উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে, যেমন টঙ্গী-আখাউড়া লাইনের ডুয়েল-গেজে রূপান্তর, রেলওয়ে রোলিং স্টক সরবরাহ, বাংলাদেশ রেলওয়ের কর্মীদের জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধি, বাংলাদেশ রেলওয়ের উন্নত পরিষেবার জন্য আইটি সমাধান ভাগাভাগি ইত্যাদি। কাউনিয়া-লালমনিরহাট-মোগলঘাট-নিউ গীতালদহ সংযোগ, হিলি ও বিরামপুরের মধ্যে একটি সংযোগ স্থাপন, বেনাপোল-যশোর লাইন বরাবর ট্র্যাক ও সিগন্যালিং সিস্টেম এবং রেলওয়ে স্টেশনগুলোর উন্নীতকরণ, বুড়িমারী ও চ্যাংরাবান্ধার মধ্যে সংযোগ পুনঃস্থাপন, এই নতুন উদ্যোগকেও উভয়পক্ষ স্বাগত জানিয়েছে। সিরাজগঞ্জে একটি কনটেইনার ডিপো নির্মাণ ইত্যাদি এবং উভয়পক্ষ দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগিতার অধীনে বিভিন্ন আর্থিক উপকরণের মাধ্যমে এই প্রকল্পগুলোর অর্থায়নের জন্য সম্মত হয়েছে। বাংলাদেশ পক্ষ অনুদানে ২০টি ব্রড-গেজ ডিজেল লোকোমোটিভ দেয়ার জন্য ভারতকে স্বাগত জানিয়েছে।

দুই দেশের শীর্ষ নেতা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রশংসা করেন। যেখানে ভারত এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের জন্য বৃহত্তম রপ্তানির গন্তব্য হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে বলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এছাড়াও ভারত থেকে চাল, গম, চিনি, পেঁয়াজ, আদা এবং রসুনের মতো প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের সরবরাহের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ভারতের বিদ্যমান সরবরাহের অবস্থার উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের অনুরোধগুলো বিবেচনা করা হবে এবং এই বিষয়ে সমস্ত প্রচেষ্টা করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App