×

জাতীয়

এসআই গৌতম রায় হত্যাকাণ্ড: ১৩ বছরে বিচার না পেয়ে হতাশ পরিবার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৪৬ এএম

এসআই গৌতম রায় হত্যাকাণ্ড: ১৩ বছরে বিচার না পেয়ে হতাশ পরিবার

ছবি: রাজধানী ঢাকার বংশাল থানার অপারেশন অফিসার এসআই গৌতম রায়। ছবি: ভোরের কাগজ

   

আজ ১৯ এপ্রিল। রাজধানী ঢাকার বংশাল থানার অপারেশন অফিসার এসআই গৌতম রায়ের ১৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ বুধবার। ২০১০ সালের এই দিনে পেশাগত দাযিত্ব পালন শেষে রাতে ওয়ারীর বাসায় ফেরার পথে সূত্রাপুর থানার লাল মোহন সাহা স্ট্রিট এলাকায় একদল চিহ্নিত সন্ত্রাসী অত্যান্ত সুপরিকল্পিত ভাবে তাকে গুলি করে হত্যা করে।

এসআই গৌতম রায়ের হত্যাকাণ্ডের ১৩ বছর পরেও কোনো বিচার পায়নি তার পরিবার। সুষ্ঠু বিচার ও বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তার পরিবার। কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না।

এসআই গৌতম রায় জীবিত অবস্থায় অনেক মামলার তদন্ত করে রহস্য উদঘাটন করে পুরস্কারও পেয়েছেন বেশ কয়েকবার। সেই মানুষটিকে দায়িত্বরত অবস্থায় হত্যা করে পালিয়ে গেছে খুনিরা, অথচ ১৩ বছর পরেও পুলিশ তার হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত আসামিদের খুঁজে বের করতে পারেনি। নিহত গৌতম রায় আজ নিজেই সংবাদের শিরোনাম।

গৌতম রায়ের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলার শ্যামগঞ্জ বাজারে। তিনি চাকরি করতেন রাজধানী ঢাকার বংশাল থানায়। অপারেশন অফিসার (এসআই) হিসাবে কর্মরত ছিলেন তিনি।

২০১০ সালের ১৯ এপ্রিল তিনি পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে রাতে ওয়ারীর বাসায় ফেরার সময় সূত্রাপুর থানার লাল মোহন সাহা স্ট্রিট এলাকায় একদল চিহ্নিত সন্ত্রাসী অত্যান্ত সুপরিকল্পিতভাবে তাকে গুলি করে হত্যা করে পালিয়ে যায়। পরে রাতেই তাকে মুমূর্ষ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

হত্যাকাণ্ডের পরদিন তৎকালীন স্বরাস্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, পুলিশের ভারপ্রাপ্ত আইজিপি নব বিক্রম ত্রিপুরা, র‌্যাবের ডিজি হাসান মাহামুদ খন্দকার ও পুলিশের উধ্বতর্ন কর্মকর্তারা হাসপাতালে ছুটে যান এবং অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের আশ্বাসও দেন।

এ ব্যাপারে সূত্রাপুর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলাও দায়ের করা হয়। এর পর র‌্যাব ও পুলিশের মধ্যে আসামি ধরা নিয়ে চলে প্রতিযোগিতা। হত্যাকাণ্ডটি নিয়ে সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে মামলাটি চাঞ্চল্যকর মামলা হিসাবে ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে ক্ষোভ ও হতাশা তুলে ধরে নিহত পুলিশ কর্মকর্তার পরিবারের প্রশ্ন, মোট ৪৭ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ২ জনের সাখ্য গ্রহণ নিতেই যদি ১০ বছর লেগে যায, তবে বাকি সাক্ষীদের সাক্ষ্য নিতে কত বছর সময় লাগবে? তাছাড়া হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার না হওযায় খুনি কারা বা খুনিদের শাস্তিই বা কিভাবে নিশ্চিত হবে তা নিয়েই আশ্বস্ত হতে পারছে না নিহত গৌতমের পরিবার।

ঘটনার একমাস পর তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার দাবি করেছিলেন হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত পিস্তল দুটি ইতিমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু সিআইডির ল্যাবে করা আলামত পরীক্ষার ফল বলছে পুলিশ বিস্ফোরক পরীক্ষার জন্য যে দুটি অস্ত্র, গুলি (তিনটি) ও গুলির খোসা (তিনটি) পাঠিয়েছেন সেগুলি পরীক্ষা করে দেখা গেছে এই সব গুলি ও দুটি অস্ত্র (উদ্ধার করা) থেকে ছোড়া হয়নি।

এসআই গৌতম রায়ের ছোট ভাই সাংবাদিক তিলক রায় জানান, আমার দাদার হত্যাকাণ্ড একটি পরিকল্পিত ঘটনা। যে পিস্তল দিয়ে দাদাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে সেই পিস্তল পুলিশ আজও উদ্ধার করতে পারেনি। দুজন প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষী থাকার পরও আসল অপরাধীচক্রকে পুলিশ চিহ্নিত করতে পারেনি। তাই আমরা বারবার অভিযোগপত্র নিয়ে আপত্তি তুলেছিলাম। যেহেতু আমরা মামলার বাদী নই, তাই পত্রিকার মাধ্যমে এ আপত্তি দিয়েছিলাম।

প্রসঙ্গত, গৌতম রায় গৌরীপুর প্রেসকাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও নেত্রকোনার পূর্বধলা প্রেসকাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও ভোরের কাগজ পত্রিকার সাংবাদিক ছিলেন। তার এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে মিছিল, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু বিচার না পাওয়ায় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এসআই গৌতম রায়ের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার গ্রামের বাড়ি শ্যামগঞ্জে গীতা পাঠ, নাম কীর্তন ও প্রসাদ বিতরণের আয়োজন করা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App