মহাসড়কে যানজট, ধীরগতিতে চলছে গাড়ি

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৫৩ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল, নবীনগর-চন্দ্রা ও ঢাকা আরিচা মহাসড়কের অন্তত ৩০ কিলোমিটার জুড়ে যানজট রয়েছে। যাত্রাপথের সব গাড়ি ধীরগতিতে চলছে বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) এ খবর জানা গেছে। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে এই তিন মহাসড়কে বৃহস্পতিবার সকালেও গাড়ি চলার গতি মোটামুটি স্বাভাবিক ছিল। পরিস্থিতি পাল্টে যায় দুপুরের পর থেকে।
শিল্পনগরী গাজীপুরের প্রায় সব কলকারখানা ও পোশাক কারখানা অর্ধদিবস কাজ শেষে ছুটি হওয়ার পর পরই মানুষজন শেকড়মুখে ছুটতে শুরু করে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মহাসড়ক দুটিতে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে গাড়ির সংখ্যা। দুপুরের পর সড়কে যান চলাচলে একেবারে ধীরগতি চলে আসে। সন্ধ্যায় তা রূপ নেয় ভয়াবহ যানজটে। সন্ধ্যার পর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ময়মনসিংহমুখী লেনে ভোগরা বাইপাস থেকে সালনা পর্যন্ত ও বিপরীততমুখী লেনে পোড়াবাড়ি থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত ভয়াবহ যানজট সৃষ্টি হয়।
একই চিত্র ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কেও। সেখানে মৌচাক থেকে চন্দ্রা ত্রিমোড় পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার এলাকা যানজটে স্থবির হয়ে আছে। দীর্ঘ সময় যানজটে আটকা পড়ে থেকে গরমে নাজেহাল ঘরমুখো যাত্রীরা। বিশেষ করে যানজটে শিশু ও বৃদ্ধদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছে।
অপরদিকে, বাসে সিট না পেয়ে অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে পণ্যবাহী ট্রাক-পিকআপে চড়ে গন্তব্যে রওনা হয়েছেন। এছাড়াও চান্দনা চৌরাস্তা ও টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকার বেশ কয়েকটি বাস কাউন্টারে বাড়তি ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে। বাড়তি ভাড়া আদায় বন্ধে এসব স্থানে পুলিশ কিংবা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নজরদারি চোখে পড়েনি।
এর আগে দুপুরে গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা ও চন্দ্রা এলাকা পরিদর্শন করে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পরিদর্শন করেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি চলে যাওয়ার পর বিকেলের দিকে ধীরে ধীরে সড়কে যানজট পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে থাকে।
হাইওয়ে পুলিশ বলছে, চন্দ্রা ত্রিমোড়ে বাসগুলো ইচ্ছামতো থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করাচ্ছে। যে কারণে পেছনের দিকের গাড়িগুলো স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারছে না। এতে যানবাহনের সারি ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে। পুলিশের পক্ষ থেকে নিয়মিত নজরদারি করা হচ্ছে।
কোনাবাড়ি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘সকালে যানবাহনের কিছুটা চাপ ছিল। তবে দুপুরের পর শিল্প-কলকারখানা ছুটি হলে চাপ কয়েক গুণ বেড়ে যায়। যানজট নিরসনে হাইওয়ে পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দায়িত্ব পালন করছেন।’
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) আলমগীর হোসেন বলেন, ‘মহাসড়কের যান চলাচল পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সার্বক্ষণিকভাবে ৩০০ ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি এপিপিএন সদস্য ও রোভার স্কাউট মোতায়েন রয়েছে। কোথাও ভাড়া বেশি নেয়ার খবর পেলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
সাভারে থেমে থেমে চলছে গাড়ি
সাভারের তিন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে থেমে থেমে চলছে গাড়ি। এতে করে উত্তরবঙ্গ অভিমুখী লেনে দেখা দিয়েছে যানজট।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে ঢাকা-আরিচার মহাসড়কে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে নবীনগর হয়ে চন্দ্রা পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার সড়কে যানবাহন ধীরগতিতে চলছে। এছাড়া টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের বাইপাইল থেকে নরসিংহপুর পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়কে গাড়ির চাপ রয়েছে।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ হিল কাফি বলেন, ‘আজকের দিনটি আমাদের জন্য সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি।
ইতোমধ্যে পোশাক কারখানাগুলো ছুটি হয়েছে। তাই বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে সবাই একযোগে সড়কে চলে এসেছে। এ কারণে কিছু কিছু স্থানে বাস দাঁড়িয়ে সেই যাত্রী তুলছে। এতে করে গাড়ির গতি স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা ধীর হয়েছে। তবে আমরা সড়কে আছি, কোথাও যানজট তীব্র হওয়ার আশঙ্কা নেই।