×

জাতীয়

সিলেট সিটি নির্বাচন: আ.লীগে ঐক্যের সুর মুখ খোলেননি আরিফ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৩৩ এএম

সিলেট সিটি নির্বাচন: আ.লীগে ঐক্যের সুর মুখ খোলেননি আরিফ
   

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে উত্তেজনা। শুরুতেই দলের মনোনয়ন পেয়ে চমক দেখালেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তবে দিন যত গড়াচ্ছে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর পালে হাওয়া লাগছে। প্রথমদিকে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে অনৈক্যের সুর থাকলেও বর্তমানে সিলেট আওয়ামী লীগে ঐক্যের সুর। তবে প্রধান বিরোধীদল বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচনী তৎপরতা এখনো দেখা যায়নি। বিএনপি সিটি নির্বাচনে না আসার ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই নগরে গুঞ্জন রয়েছে, বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। যদিও এ বিষয়ে আরিফুল এখনো নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেননি।

সিসিক নির্বাচনে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের ১০ নেতা মনোনয়ন চাইলেও তাদের বাদ দিয়ে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। এতে স্থানীয় মনোনয়নবঞ্চিত নেতারা কিছুটা অভিমান করেছিলেন। সেই মান ভাঙিয়ে অবশেষে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করতে জরুরি সভা আহ্বান করে মহানগর আওয়ামী লীগ। সভায় যোগ দেন মনোনয়নবঞ্চিতরা। ঘোষণা দেন ঐক্যবদ্ধভাবে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার। ফলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে দলে ঐক্যের সুর বইতে শুরু করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জরুরি সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মনোনয়নবঞ্চিত নেতা মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ, আজাদুর রহমান আজাদ, এটিএম হাসান জেবুল, ডা. আরমান আহমদ শিপলু প্রমুখ।

সভায় বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে চলছে উন্নয়নের জোয়ার। সেই জোয়ারে সিলেট সিটি করপোরেশনও থাকার কথা। সেজন্য সরকার গত ১০ বছরে প্রচুর বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু কাক্সিক্ষত উন্নয়নের ছিটেফোটাও হয়নি এখানে। দিন দিন জনদুর্ভোগ কেবল বেড়েই চলেছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে আগামী নির্বাচনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে হবে। আওয়ামী লীগের প্রতিটি সদস্যকে একেক জন নৌকার মাঝি হিসেবে মাঠে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।

সভায় সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বিএনপির সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, নির্বাচনে আসুন। দেখুন, জনগণ আপনাকে চায় কিনা। এবার পরিবর্তনের জোয়ার এসেছে। নির্বাচনে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্ধী প্রয়োজন। আমি বিশ্বাস করি, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে আরিফুল হক চৌধুরী সাহেব জিতবে পারবেন না।

এদিকে, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সিসিক নির্বাচন নিয়ে নিয়ে তার অবস্থান এখনো স্পষ্ট করেননি। ঈদের পর নিজের প্রার্থীতার বিষয়টি স্পষ্ট করবেন বলে আগে জানিয়েছিলেন। তবে শুক্রবার পর্যন্ত সেটা জানানো হয়নি। এর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আরিফুল হক চৌধুরী বলেছিলেন, বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না। তবে এই নগরীর জনগণের আশা আকাক্সক্ষার বিষয়ে আমি অবহিত আছি। তাদের এই আশার মূল্যায়ন আমি করব।

বিএনপি দলীয় একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, সিলেট সিটি নির্বাচনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হচ্ছেন বর্তমান মেয়র ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী। আসন্ন সিসিক নির্বাচনে ভোটে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। মেয়র আরিফের ঘনিষ্ঠ বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাই এমন আভাস দিয়েছেন। যদিও আরিফুল হক চৌধুরী এ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

ঈদের আগে যুক্তরাজ্য সফর শেষে দেশে ফিরে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে আরিফুল হক চৌধুরী বলেছেন, সিলেটের মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার মূল্যায়ন করবেন। এই বক্তব্যকে অনেকেই তার নির্বাচনে যাওয়ার ইঙ্গিত বলে ধরে নিয়েছেন।

তবে, আরিফুল হক প্রার্থী হলে এবার তাকে কোনো ধরনের ছাড় দেবেন না বিগত নির্বাচনে তার প্রতিদ্ব›দ্বী সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম। আরিফ স্বতন্ত্র নির্বাচন করলে তিনিও ভোটে নামবেন। বদরুজ্জামান সেলিম বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। আরিফ স্বতন্ত্রপ্রার্থী হচ্ছেন-এমন খবর তিনি পেয়েছেন। নির্বাচনে আরিফের প্রার্থীতা চূড়ান্ত হলেই সেলিম দেশে ফিরে তার প্রার্থিতা ঘোষণা করবেন। আগের নির্বাচনে আরিফকে ছাড় দিতে বাধ্য করা হলেও এবার তাকে নিবৃত্ত করতে পারবেন না দলীয় নেতারা।

২০১৮ সালের ৩০ জুলাই সিলেট সিটি নির্বাচনে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন দলটির তৎকালীন মহানগর সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম। দলের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়ান তিনি। পরে তাকে দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়। তবে শেষ মুহূর্তে দলীয় চাপে আরিফুল হক চৌধুরীকে সমর্থন দিয়ে সরে দাঁড়ান সেলিম।

উল্লেখ্য, ২০০২ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার পর এ পর্যন্ত চারবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিবার আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। প্রথম দুইবার বদরউদ্দিন আহমদ কামরান নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী ৯২ হাজার ৫৮৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরান পান ৮৬ হাজার ৩৯২ ভোট। এর আগে ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আরিফুল হক চৌধুরী ১ লাখ ৭ হাজার ৩৩০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন; ওই সময়ও তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী ছিলেন বদরউদ্দিন আহমেদ কামরান। কামরান পেয়েছিলেন ৭২ হাজার ১৭৩ ভোট।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App