×

জাতীয়

একাত্তরের গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৩, ১০:০৮ এএম

একাত্তরের গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন
একাত্তরের গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন

ছবি: ভোরের কাগজ

   

একাত্তরের গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার “১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী কর্তৃক পরিচালিত গণহত্যা” সম্পর্কে আলোচনা ও সচেতনতা বৃদ্ধির উপলক্ষ্যে সোমবার আমরা একাত্তর, প্রজন্ম ৭১, ইবিএফ এবং অন্যান্য সমমনা সহযোগি সংগঠন “বাংলাদেশ জেনোসাইড রিকগনিশন সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক সম্মেলন” –এর আয়োজন করে।

সম্মেলনে বক্তারা “কেন একাত্তরের গণহত্যা বিশ্ব সম্প্রদায় বা জাতিসংঘ কর্তৃক অস্বীকৃত এবং কিভাবে একাত্তরের গণহত্যা সম্পর্কে বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়”- সে বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা করেন।

বক্তাদের মধ্যে ছিলেন জনাব বিকাশ চৌধুরী বড়ুয়া, ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ ফোরামের সভাপতি, গণহত্যা সম্পর্কে বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নৃশংসতার শিকার মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি গণহত্যার স্বীকৃতি অর্জনের ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ ফোরামের অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডক্টর আকতারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল গণহত্যার কেন্দ্রবিন্দু এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকরা গণহত্যার প্রথম শিকার হন। সম্মেলনের আয়োজক ও অবদানকারীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি আন্তরিকভাবে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সর্বদা তাদের পাশে থাকবে এবং একাত্তরের গণহত্যার স্বীকৃতি অর্জনে সহযোগিতা করবে। গণহত্যা গবেষক ও প্রজন্ম ৭১ এর প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি জনাব তাওহীদ রেজা নূর বলেন, গণহত্যার স্বীকৃতি আদায় এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য প্রজন্ম ৭১ কাজ করছে, করে যাবে।

১৯৪৮ সালের জেনোসাইড কনভেনশন অনুযায়ী- গণহত্যা মানে পদ্ধতিগত পরিকল্পনার মাধ্যমে একটি গোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো, তাদের ক্ষতি করা বা নির্মূল করার পরিকল্পনা করা অথবা করা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী যে গণহত্যা চালিয়েছিল তা ছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত ইচ্ছাকৃতভাবে বাঙালিদের গণহত্যা, বলেছেন জনাব প্রদীপ কুমার দত্ত, একজন জেনোসাইড গবেষক। একাত্তর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি জনাব শাহরিয়ার কবির বলেন, গণহত্যায় রাজনীতি ছিল এবং কিছু স্থানীয় ধর্মভিত্তিক দল বিশেষ করে জামায়াত ইসলামী এবং নেজাম-ই ইসলামী পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর সহযোগীর ভূমিকা পালন করে বাংলাদেশের মাটতে জেনোসাইডমূলক নৃশংসতা চালায়।

তিনি আরও বলেন, একাত্তরের গণহত্যাকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি দিতে হবে যাতে ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা যায়। তিনি আরও বলেন, অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা না হলে গণহত্যার পুনরাবৃত্তি ঘটবে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি জনাব মফিদুল হক বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে বিশ্ব সম্প্রদায় একাত্তরের গণহত্যা ভুলে গেছে এবং এটি এখনও জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃত নয়। ১৯৭১ সালের গণহত্যার স্বীকৃতি পেতে, বিশেষ করে মার্কিন পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে সাহায্য করার জন্য ইউরোপীয় সম্প্রদায়কে আরও জোরালোভাবে সাহায্য করার প্রস্তাব দেন তিনি।

সুইস ইন্টার-স্ট্র্যাটেজি গ্রুপের কমিউনিকেশন ডিরেক্টর মিঃ ক্রিস ব্ল্যাকবার্ন দাবি করেছেন যে দুর্ভাগ্যবশত বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের জেনোসাইড বহু বছর ধরে বিশ্বসম্প্রদায়ের অগোচরে ছিলো এবং তার ফলস্বরূপ এখনও তা জেনোসাইডের বৈশ্বিক স্বীকৃতী পায়নি। তিনি আশা করেন যে পাকিস্তানিরা ১৯৭১ সালে জেনোসাইড পরিচালনার জন্য তাদের দায় স্বীকার করবে এবং বাংলাদেশ বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছ থেকে সেই ভয়ংকর জেনোসাইডের স্বীকৃতি পাবে। আরেক গবেষক লেফটেন্যান্ট কর্নেল বীরপ্রতীক সাজ্জাদ জহির গণহত্যার শিকার পরিবারের সদস্যদের ইনভারভিউ নেওয়ার অভিজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। ডাচ রাজনীতিবিদ এবং মানবাধিকার কর্মী জনাব হ্যারি ভ্যান বোমেল বলেছেন, নেদারল্যান্ডস হলো সেই প্রথম সারির দেশ যারা ১৯৭১ সালে সংঘটিত বাংলাদেশ জেনোসাইডের স্বীকৃতি দিয়েছে এবং নেদারল্যান্ডস আশা করে বিশ্ব সম্প্রদায় শীঘ্রই ১৯৭১ সালের জেনোসাইডকে স্বীকৃতি দেবে।

আরও অন্যান্য বিশিষ্ট গবেষক, বক্তা ও ব্যক্তিবর্গ তাদের কথায় বর্ণনা করেন যে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী নিয়মতান্ত্রিক পূর্বপরিকল্পনা নিয়ে যে বর্বরতা ও গণহত্যা চালিয়েছিল তা গণহত্যা ছাড়া আর কিছুই নয়। আর বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও যে ১৯৭১ সালের গণহত্যা জাতিসংঘের স্বীকৃতি পায়নি তা জাতি হিসেবে আমাদের ব্যর্থতা এবং জাতিসংঘেরও ব্যর্থতা। একাত্তরের গণহত্যার স্বীকৃতি অর্জন এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রচেষ্টা, সমর্থন ও সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে, যাতে পৃথিবীর কোনো প্রান্তে আর কোনো গণহত্যার পুনরাবৃত্তি না ঘটে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মাননীয় বক্তারা এবং অন্যান্য সকল অংশগ্রহণকারীরা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App