সবকটি জাতীয় নির্বাচন পর্যালোচনা করছে ইইউ

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৩, ০৭:৪৩ পিএম

ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আসা প্রতিনিধিরা।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থাসহ বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছে সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নির্বাচনী পরিবেশ অনুসন্ধান মিশন।
রবিবার (১৬ জুলাই) রাজধানীর গুলশানে ইইউ অফিসে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) গবেষণা পরিচালক ডা. মাহফুজ কবিরের সঙ্গে ইইউ প্রতিনিধিদলের প্রথম দফায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফায় প্রতিনিধিদল মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট আদিলুর রহমান খানের সঙ্গে বৈঠক করে। এরপর দেশীয় পর্যবেক্ষকদের সঙ্গেও বৈঠক করে।
ইইউ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পর ড. মাহফুজ কবির সাংবাদিকদের বলেন, ইইউ প্রতিনিধিদল বর্তমান নির্বাচনের পরিবেশ সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছে। আমি তাদের বলেছি, এখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্তি ও সহিংসতামুক্ত। নির্বাচনের আগে ইইউ’র উচিত একটি পর্যবেক্ষকদল পাঠানো। তিনি আরও বলেন, তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি পর্যবেক্ষকদল পাঠানোর বিষয়েও আমাকে জিজ্ঞাসা করেছে। আমি বলেছি, তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে এ অঞ্চলের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে অল্প সংখ্যক সদস্য নিয়ে একটি দল পাঠাতে পারে। বৈঠকের পর অ্যাডভোকেট আদিলুর রহমান খান বলেন, মানবাধিকারকর্মীদের নামে মামলা দিয়ে, মানবাধিকার সংগঠনের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, এটাই আমি প্রতিনিধিদলকে জানিয়েছি।
এদিকে, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থাসহ বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছে সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নির্বাচনী পরিবেশ অনুসন্ধান মিশন। আলোচনার অংশ হিসেবে রবিবার জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর সঙ্গে বৈঠক হয় প্রতিনিধি দলের। বৈঠক শেষে কলিমুল্লাহ বলেন, ইইউ অনুসন্ধান দলটি বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং নির্বাচন-পূর্ব পরিবেশ মূল্যায়ন করতে চাইছে। তারা বিগত সবকটি জাতীয় নির্বাচনের পর্যালোচনা করেছে। তিনি আরও বলেন, অনুসন্ধানী দল নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করার পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। তবে ‘১৪ ও ‘১৮ সালের মতো নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের দুই বড় দলের প্রতিনিধিদের অসন্তোষ রয়েছে। তবে বর্তমানে সেই ধারার নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা কম। অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন আয়োজন করাও চ্যালেঞ্জ। কলিমুল্লাহ বলেন, দেশীয় পর্যবেক্ষকদের অভিজ্ঞতাও তারা জানতে চেয়েছে। আমি বলেছি গত ৫টি সিটি নির্বাচন ও বাই ইলেকশন সুষ্ঠু করার অভিজ্ঞতা আছে নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচন সুষ্ঠু করার সক্ষমতা রয়েছে বলে জানিয়েছি।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে গত ৮ জুলাই থেকে ঢাকা সফরে রয়েছে ইইউ প্রাক-নির্বাচনী পর্যবেক্ষক প্রতিনিধিদল। আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ঢাকায় অবস্থান করবেন। ঢাকায় সফরকালে সরকারি-বেসরকারি প্রতিনিধি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। তারা নির্বাচনী পরিবেশ যাচাই করছেন। একইসঙ্গে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইইউ কোনো পর্যবেক্ষক পাঠাবে কিনা প্রতিনিধিদল সে বিষয়ে সুপারিশ করবে। তাদের সুপারিশের ওপর ভিত্তি করেই ইইউ এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।