কবে বিচার কার্যকর হবে মঈন-আশরাফের

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:৪৪ পিএম

ছবি: আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীন
একাত্তরে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যাযজ্ঞের মূল হোতা ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আলবদর নেতা চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খানকে এখনও ফিরিয়ে আনা হয়নি। বর্তমানে তারা দুজনেই দেশের বাইরে পালিয়ে রয়েছেন। সে কারণে তাদের দেশে ফিরিয়ে বিচার কার্যকর করা হয়নি।
বিভিন্ন সূত্রের খবরে জানা যায়, চৌধুরী মুঈনুদ্দীন বর্তমানে ব্রিটেনে অবস্থান করছেন। সেখানকার ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের মুসলিম স্পিরিচুয়াল কেয়ার প্রভিশনের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আর আশরাফুজ্জামান খান পালিয়ে অবস্থান নিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ইসলামিক সার্কেল অব নর্থ আমেরিকার (আইসিএনএ) শুরা সদস্য।
সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে বলে আসা হচ্ছে, দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আল বদর নেতাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো হচ্ছে। তবে গত কয়েক বছর সে রকম কোনো তোড়জোর দেখা যায়নি। মুক্তিযোদ্ধাসহ দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বুদ্ধিজীবী হত্যা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন।
স্বাধীনতার প্রায় আড়াই দশক পর ১৯৯৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনায় রমনা থানায় প্রথম মামলা করা হয়। বাদী শহীদ বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিনের বোন ফরিদা বানু। মামলায় বুদ্ধিজীবী হত্যাযজ্ঞের মূল হোতা আলবদর বাহিনীর নেতা চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানকে আসামি করা হয়।
প্রায় দেড়যুগ ধরে নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে অবশেষে ২০১৩ সালের ৩ নভেম্বর মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। বুদ্ধিজীবী হত্যা মামলায় চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে ১৮ জন বুদ্ধিজীবীকে হত্যায় আনা হয়েছিল ১১টি অভিযোগ। যার সবগুলোই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। রায়ে চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানকে ফাঁসির আদেশ দেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
বুদ্ধিজীবী হত্যার প্রধান ঘাতক বদর বাহিনীর নেতা চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খান। ১৬ ডিসেম্বরের পর আশরাফুজ্জামান খান ওরফে নায়েব আলী খানের নাখালপাড়ার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া তার ব্যক্তিগত ডায়েরির দুটি পৃষ্ঠায় ২০ জন বুদ্ধিজীবীর নাম ও বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের কোয়ার্টার নম্বর লেখা ছিল। মুক্তিযুদ্ধের পরপরই দুই ঘাতক দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।