জাহাজ ব্যবসায় বাংলাদেশ এখন বিলিয়ন ডলারের ঘরে

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৪, ০৬:২৬ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
বাংলাদেশের সমুদ্র পরিবহন বাণিজ্যের হাতেখড়ি হয়েছিল রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের মালিকানাধীন এমভি বাংলার দূত নামের জাহাজ নিয়ে। স্বাধীনতার ৫১ বছর পর এসে বাংলাদেশ এখন ১০১টি সমুদ্রগামী জাহাজের মালিক। বেসরকারি মালিকানায় এটলাস শিপিং ১৯৭৮ সালে এমভি আল সালমা নামের নামের জাহাজ দিয়ে সমুদ্র পরিবহন বাণিজ্য শুরু করে। বেসরকারি খাতের জাহাজের সংখ্যা এখন ৯৪টি। এর মধ্যে ২০১৯ সালের পর বাংলাদেশের শিল্প গ্রুপগুলো অন্তত ৮০টি জাহাজ কিনেছে।
কবির স্টিল রোলিং মিলসের (কেএসআরএম) উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত বলেন, ৬ বিলিয়ন ডলার এখন দেশের জাহাজ বাণিজ্যের আয় আছে। এটাকে ১০ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যেতে পারলে আর কোনো প্রকার বৈদেশিক মুদ্রা এই খাতের জন্য আলাদা করে খরচ করার প্রয়োজন পড়বে না। আগে প্রতি বছর শুধু পণ্য আনা-নেয়ার কাজে জাহাজ ভাড়া হিসাবে লাখ লাখ ডলার চলে যেত বিদেশি জাহাজ মালিকদের কাছে। এখন দেশি জাহাজের সংখ্যা বাড়ায় এই খাতেই বছরে সাশ্রয় হচ্ছে ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি।
চট্টগ্রামের নৌ বাণিজ্য অধিদপ্তরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন সাব্বির মাহমুদ বলেন, জাহাজের ক্ষেত্রে এখনো বাংলাদেশের অনেক ভালো করার সুযোগ রয়েছে। যত বেশি জাহাজ বাড়বে, তত দেশের জাহাজ শিল্পের সক্ষমতা, দক্ষতা ও বৈদেশিক মুদ্রা বাড়বে।
আরো পড়ুন : চামড়া শিল্পের উন্নয়নে সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হচ্ছে
বাংলাদেশি মালিকানাধীন অধিকাংশ জাহাজেই বর্তমানে বাংলাদেশি নাবিক এবং অন্যান্য ক্রুরা কাজের সুযোগ পাওয়ায় এ খাতে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিটি জাহাজে ন্যূনতম ৭০ শতাংশ জনবল রাখার নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এ অবস্থায় প্রতিটি জাহাজে একেক যাত্রায় সর্বনিম্ন ২২ জন থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৪৫ জন পর্যন্ত বাংলাদেশি নাবিক কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন। তবে এই চাহিদা ক্রমে বাড়তে থাকায় প্রয়োজন হয়ে পড়েছে দক্ষ নাবিক তৈরির প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের।
কেএসআরম গ্রুপের সুপারিনটেনডেন্ট ক্যাপ্টেন আনোয়ারুল হক বলেন, দেশের জাহাজের সংখ্যা বাড়লে দেশের কর্মসংস্থানের সুযোগ আরো বাড়বে। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পাশাপাশি এই খাতের নাবিক, ইঞ্জিনিয়ার ও অন্যান্য সবাই এই খাতে আরো আগ্রহী হয়ে উঠবে।
এ ব্যাপারে এমভি জাহান-ওয়ানের মাস্টার ক্যাপ্টেন মশিউর রহমান বলেন, বহির্বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে দেশের নাবিকদের জন্য অনেক বেশি প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণশালা তৈরি করা প্রয়োজন।
বাংলাদেশি মালিকানাধীন জাহাজের মধ্যে সিমেন্ট ক্লিংকার, কয়লা, স্ক্র্যাপ লোহা, খাদ্যপণ্য বহনকারী বাল্ক জাহাজের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। যার সংখ্যা বর্তমানে ৭৮টি। এছাড়া কন্টেইনারবাহী জাহাজ রয়েছে ৮টি। বাকি জাহাজগুলোর মধ্যে ৭টি অয়েল ট্যাংকার, ৫টি কেমিকেল ট্যাংকার এবং ৩টি এলপিজি বহনকারী জাহাজ।