প্রধানমন্ত্রী
ইউনূস এমডি পদে না থাকলে পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধের হুমকি দেন রাষ্ট্রদূতরা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৮:০১ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি পদে থাকতে তদবিরের জন্য হিলারি ক্লিনটন দুইবার ফোন করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আরো বলেছেন, তদবির করতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের প্রতিনিধি দলও এসেছিলো। আমি তাদের শুধু একটা প্রশ্ন করেছিলাম যে, আপনারা আমাকে একটা কথা বলেন, এই এমডি পদে কি মধু আছে? প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘যে বড় দেশ ইউনূসকে প্রমোট করে, সে দেশের রাষ্ট্রদূত আমার অফিসে এসে অফিসারদের ধমকান। তারা বলেন, ইউনূসের এমডির পদ না থাকলে পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধ হয়ে যাবে।’
শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকেলে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে সেতু প্রকল্পের সমাপনী উপলক্ষে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেয়ার সময় এসব কথা বলেন তিনি ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্ম সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের পর অনেকেই এগিয়ে এলো। বিশ্বব্যাংক, জাইকা, দাতা সংস্থা এলো। তখন একটা সমস্যা দেখা দিল। একটা পদ, সেটা হচ্ছে ব্যাংকের এমডি পদ। একটা ব্যাংকে যদি আইন থাকে যে একজন ২০ বছর পর্যন্ত থাকতে পারবে। ইতোমধ্যে তার বয়স ৭০ হয়ে গেছে। অতিরিক্ত সময় থেকে ফেলেছে। তাহলে তিনি সেখানে এমডি থাকে কি করে? এত নামীদামী, একেবারে নোবেল লরিয়েট সামান্য একটা ব্যাংকের এমডি পদের জন্য লালায়িত কেন?
আরো পড়ুন: নেত্রীর পাশের চেয়ারে বসেই বলেছিলেন পাগল: ওবায়দুল কাদের
এই প্রশ্নের উত্তর কখনো পেলাম না। একটা বড় দেশ থাকে প্রমোট করে। সেই দেশের এম্বাসেডর অ্যাম্বাসেডর আমার অফিসে আছে। আমার অফিসের কর্মকর্তাকে ধমক দিয়ে বলে, এমডি পদ না থাকলে সেতুর অর্থ বন্ধ হয়ে যাবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ইউনূস কেন এমডি পদে থাকতে পারলো না এ জন্য হিলারির নির্দেশে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন বন্ধ করলো। একে একে অনেকে বন্ধ করে দেয়। আমি অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছে, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক না থাকলে পদ্মা সেতু করা যাবে না। আমি বললাম, কেন পারবো না। একমাত্র মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আমি করে দেব। আমাদের দেশের কেউই পাশে ছিল না। একমাত্র বাংলাদেশের মানুষ ছিল। জ্ঞানীগুণী সবাই বলেছিল, পারবে না। টাকা কোথায় থেকে আসবে। আমি বলেছিলাম, নিজের টাকায় করবো।
সরকার প্রধান বলেন, বলা হলো দুর্নীতির ষড়যন্ত্র হয়েছে। আমি বললাম, প্রমাণ দেন। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট এলেন। আমরা প্রমাণ চাইলাম। বলল, প্রমাণ আছে। কিন্তু দিতে পারলো না।
শেখ হাসিনা বলেন, একটা সিদ্ধান্ত (নিজের টাকায় পদ্মা সেতু) বাংলাদেশের মর্যাদা এনে দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ এই গর্বের সেতুর জন্য এখন বুক উঁচু করে চলতে পারে। সুতরাং এটাকে টাকায় বিচার করার নয়।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সভাপতিত্ব করেন। এসময় আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মনজুর হোসেন। প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরেন পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম।
এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতেই পদ্মা সেতুর থিম সং প্রচার করা হয়। এছাড়া পদ্মা সেতুর ওপর একটি প্রামাণ্য চিত্র দেখানো হয়। সুধী সমাবেশে সেতুমন্ত্রীর ও সেতু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করা হয়।