রাজস্বের পিয়ন মাহমুদুলের শতকোটি টাকার সম্পদ, আয়ের উৎস কী?

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৩:২০ পিএম
সাধারণ মানুষের সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পর্কে এতদিন ধারণা ছিল যে, এরা কাজ করার নামে দুর্নীতি করে। তাও এখন ভেঙে গেছে। মানুষ এখন ভাবতে শুরু করেছে, এরা আসলে কাজ করে না, শুধু দুর্নীতিই করে। ঢাকা কিংবা চট্টগ্রামে নয়, মফস্বল শহর সাতক্ষীরায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অফিস সহকারী বা পিয়ন পদে চাকরি করেই বনে গেছেন টাকার কুমির।
দিনমজুর পরিবারের সন্তানের তকমা মুছে হয়েছেন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী। এক সময়ে ভিটেবাড়ি ছাড়া তেমন কোনো সম্পদ না থাকলেও এখন সাতক্ষীরার সবচেয়ে বড় শপিং কমপ্লেক্স, চার তলা বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিশাল মাছের ঘেরসহ নামে-বেনামে শতকোটি টাকার সম্পদ গড়ে, এলাকার সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
আর এসব সম্পদের উৎস নিয়ে যখন কানাঘুষা শুরু করেন স্থানীয়রা, তখনই নিজেকে রক্ষায় স্বেচ্ছায় চাকরিতে ইস্তফা দেন। অতি ধূর্ত এই ব্যক্তির নাম মাহমুদুল ইসলাম। এলাকার লোকজন বলেছেন, অষ্টম শ্রেণি পাশ মাহমুদুল পিয়নের চাকরিতে যোগ দিয়েই যেন আলাদিনের চেরাগ হাতে পেয়েছিলেন।
সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি কর্মকর্তাদের অবৈধ সম্পদ নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে বিচলিত মাহমুদুল তার অন্তত ৩০ কোটি টাকার একটি শপিং কমপ্লেক্স বেচে দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন। এদিকে তার অবৈধ সম্পদের বিষয়ে দুদকে তিন দফা অভিযোগ জমা পড়লেও এখনো নেওয়া হয়নি কোনো ধরনের ব্যবস্থা।
জানতে চাইলে মাহমুদুল ইসলাম বলেন, আমার যেসব সম্পদ আছে সেগুলো আয়কর ফাইলে দেখানো আছে। শতকোটি টাকার সম্পদের তথ্য ঠিক নয়, আমার ৪০ লাখ টাকার মতো সম্পদ আছে। বাড়ি, শপিং কমপ্লেক্স, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ সব সম্পদের ফিরিস্তি তুলে ধরে এত সম্পদের দাম কীভাবে মাত্র ৪০ লাখ টাকা।
৪০ লাখ টাকার সম্পদ বন্ধক দিয়ে আপনি কীভাবে ৫ কোটি টাকা ঋণ নিলেন-এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। দুর্নীতি ঢাকতেই কি আপনি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছেন-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার স্ত্রীর নামে আগেই কিছু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ছিল। আর দুর্নীতি ঢাকতে স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়ার বিষয়টি ঠিক নয়।
জানা গেছে, সাতক্ষীরার তালা উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের দিনমজুর মৃত শেখ তমেজ উদ্দীনের ৩ ছেলে, ২ মেয়ের মধ্যে মাহমুদুল ইসলাম সবার ছোট। বাবার সঙ্গে এক সময় দিনমজুরির কাজ করতেন। ৯০-এর দশকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অধীনে পিয়ন পদে চাকরিতে যোগ দেন।