ছাগল নিয়ে হট্টগোলের মধ্যে ব্যাংক থেকে টাকা সরিয়ে ফেলেন মতিউর

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:৩৭ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
ছাগলকাণ্ডে দেশজুড়ে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদ্য সাবেক সদস্য মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে তাদের অবৈধ সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মতিউর ও তার সদস্যদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব, মুঠোফোনে আর্থিক সেবার হিসাব এবং শেয়ারবাজারের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব জব্দের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি এই কর্মকর্তার বেতন-ভাতা, গৃহসম্পত্তি, ব্যবসার তথ্য চেয়ে এনবিআরের কাছে চিঠি দিয়েছে দুদক।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) নির্দেশের পর মতিউর, তার দুই স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানের ব্যাংক হিসাব, এমএফএস হিসাব এবং বিও হিসাবে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত আর কোনো লেনদেন করা যাবে না। এসব থেকে কেউ অর্থ তুলতে পারবেন না।
দুদক সূত্র জানায়, অবৈধ সম্পদ এবং ব্যাংক হিসাবের টাকার অনুসন্ধানে রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউরের ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা সরানোর তথ্য মিলেছে। ১১৫টি হিসাব পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সেখানে মাত্র ৪ কোটি টাকা রয়েছে। আর ছাগলকাণ্ড নিয়ে হট্টগোলের মধ্যেই এসব থেকে ৮ কেটি টাকা তুলে নেন মতিউর। এ প্রসঙ্গে দুদক আইনজীবী বলছেন, টাকা যেখানেই সরানো হোক খুঁজে বের করা অসম্ভব নয়।
আরো পড়ুন: মতিউর ও তার বান্ধবী আরজিনার স্পর্শকাতর ফোনালাপ ফাঁস
এর আগে মতিউরের বিরুদ্ধে চারবার দুর্নীতির অভিযোগ পায় দুদক। তবে প্রতিবারই নানা কৌশলে প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে ক্লিন চিট পেয়েছিলেন তিনি। মতিউরের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম অভিযোগ ওঠে ২০০৪ সালে। সেসময় হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করা টাকা প্রবাসী কোনো এক আত্মীয়র মাধ্যমে দেশে এনে তা ট্যাক্স ফাইলে রেমিট্যান্স বাবদ দেখিয়েছিলেন তিনি।
২০০৮ সালে আবারো দুদকে অভিযোগ জমা পড়ে মতিউরের বিরুদ্ধে। সেবার বিলাসবহুল পণ্যের শুল্ক মাফ করিয়ে দেয়ার মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করেন তিনি। কিন্তু তদন্ত শুরু না হতেই প্রভাবশালীদের চাপে তা চাপা পড়ে যায়। ফলে ক্লিন চিট পান মতিউর। এরপর ২০১৩ ও ২০২১ সালে আরো দুবার দুদকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়া হয়। এই দুই দফায়ও অবৈধ সম্পদ ও সম্পত্তির অর্জন করেন তিনি বলে গুঞ্জন ওঠে। তবে কৌশলী মতিউর অবৈধ সম্পদকে পারিবারিক ব্যবসা ও ঋণ দেখিয়ে প্রস্তুত করেন ট্যাক্স ফাইল। ফলে আবারো ক্লিন চিট পান তিনি।
কিন্তু পঞ্চমবারের মতো তদন্তে নেমে দুদক আগের চারবারের প্রতিটি বিষয়ে পর্যালোচনার আশ্বাস দিয়েছে। একইসঙ্গে যে বা যাদের মাধ্যমে বারবার দায়মুক্তি পেয়েছেন মতিউর, তাও খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানানো হয়েছে।