মেয়র শেখ তাপস
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে অংশীজন সংস্থাগুলো যথার্থ দায়িত্ব পালন করছে না

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৪, ০৬:০৯ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে অংশীজন সংস্থাগুলো যথার্থ দায়িত্ব পালন করছে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার (১০ জুরাই) দুপুরে রাজধানীর টিকাটুলির শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ে ‘বিশেষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম’ পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ঢাদসিক মেয়র বলেন, নিয়মিতভাবে সকাল-বিকাল আমাদের কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়া এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসের মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণে আমরা গত মে মাসে সব সংশ্লিষ্ট সংস্থা, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। দিক-নির্দেশনা দিয়েছি। মন্ত্রণালয় থেকেও সভা করে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কিন্তু এখানে পরিদর্শনে এসে দেখলাম, আমরা সংশ্লিষ্ট অংশীজন, কর্তৃপক্ষ, সংস্থার সঙ্গে মতবিনিময় করে যে দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নিই, সে অনুযায়ী তারা কাজ করছে না। যে নির্দেশনা দেয়া হয় তা সঠিকভাবে পরিপালন হচ্ছে না।
মেয়র বলেন, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে নির্মাণাধীন যে শিক্ষা ভবন রয়েছে, তার বেহাল দশা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, কর্তৃপক্ষের কোনো কর্মকর্তা এখানে নেই। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট অংশীজন কর্তৃপক্ষ-সংস্থা যথার্থ দায়িত্ব পালন করছে না। যার ফলে আমাদের জন্য কাজ করা দুরূহ হয়ে পড়ছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বশীলতার সঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমি আশা করি, গণমাধ্যমের মাধ্যমে তারা বিষয়টি অনুধাবন করবে। তাদের স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন করবে, নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান নিজেরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখবে। পানি জমতে দেবে না। নিয়মিত জমা পানি ফেলে দেবে। এজন্য ব্লিচিং পাউডার, কেরোসিন, লার্ভিসাইডিং, এডাল্টিসাইডিং... যা যা দরকার তা আমরা দিতে প্রস্তুত। আমাদের জানানোর সঙ্গে সঙ্গে কর্মীবাহিনীর মাধ্যমে সহযোগিতা করা হবে। কিন্তু তাদের সে দায়িত্ব অবশ্যই নিতে হবে।
আরো পড়ুন: সাপের কামড়ে আহত ৬১০, মৃত্যু ৩৮ জনের
এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে সিটি করপোরেশনের সামষ্টিক কার্যক্রমের সুফল ঢাকাবাসী পাচ্ছে জানিয়ে শেখ তাপস বলেন, বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা আমলে নিয়ে মশক নিধন কার্যক্রমকে আমরা আরো জোরদার করেছি। ইতোমধ্যে আমরা সব হাসপাতাল, পুলিশ ফাঁড়ি-থানায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। এখন সব প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মহাবিদ্যালয়ের স্থাপনা ও এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছি। ফলে, গত বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত রোগীর যে সংখ্যা ছিল, এবার তার চেয়ে অনেক কম রাখতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের এসব কার্যক্রমের সুফল ঢাকাবাসী পাচ্ছে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাদসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, অঞ্চল-৫ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার, ভারপ্রাপ্ত প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির, কাউন্সিলরদের মধ্যে ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের রোকন উদ্দিন আহমেদ, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের সারোয়ার হোসেন আলো, সংরক্ষিত আসনের লাভলী চৌধুরীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
প্রসঙ্গত, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সমন্বয়ে গত ৮ জুলাই থেকে ঢাদসিক আওতাধীন সব প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মহাবিদ্যালয় এবং মাদ্রাসায় বিশেষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম শুরু করে। বুধবার দ্বিতীয় দিনের মতো করপোরেশনের ১০ অঞ্চলে এই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আগামী ১৫ ও ২২ জুলাইও এই অভিযান পরিচালনা করা হবে।