আবারো শুরু ‘কারফিউ’

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২৪, ০৭:৩২ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
আবারো শুরু হয়েছে কারফিউ। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও নরসিংদীতে বুধবার (২৪ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সাত ঘণ্টা শিথিলের পর আবারো কারফিউ বহাল হয়েছে। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে । বিভিন্ন মোড়ে চলছে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশির পাশাপাশি নিয়মিত টহল।
কারফিউয়ের বিরতি বাড়ানোর পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান জানান, কারফিউয়ের মধ্যে সারাদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আবারো সারাদেশে কারফিউ শিথিল থাকছে। বাকি জেলাগুলোতে কারফিউ শিথিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত স্থানীয় প্রশাসনের।
কারফিউ কতদিন চলবে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারাই যখন বলবেন, আমরা স্বস্তি অনুভব করছি, তখনই কারফিউ প্রত্যাহার করা হবে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলন একটা সহিংস আন্দোলনে পরিণত হয়েছিল। আমাদের পুলিশ, বিজিবি, আনসারসহ সব বাহিনী ধৈর্যের সঙ্গে এ আন্দোলন মোকাবিলা করেছে। এ আন্দোলনে আমরা বর্বরতা দেখেছি।
অপরাধীদের একে একে চিহ্নিত করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি সামাল দিতে বাধ্য হয়েই কারফিউ দিয়েছি। এই জঙ্গি উত্থান ও সন্ত্রাসীদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। আগামী ৩-৪ দিনের মধ্যে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলে আশা করছি।
এদিকে তিন দিনের সাধারণ ছুটির পর খুলেছে অফিস-আদালত। সকাল ১০টা থেকে কারফিউ শিথিলের পর, চিরচেনা চেহারায় ফিরেছে রাজধানী। তবে বাইরে বেরিয়েই ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেকে। কিছু সড়কে চলাচল বন্ধ ও যানবাহন সংকটই ছিল এর বড় কারণ। কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতা, হামলা ও ভাঙচুর শুরু হলে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে সারাদেশে কারফিউ ঘোষণা করা হয়। এসময় সাধারণ ছুটির ঘোষণা দেয় সরকার। পরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে বুধবার থেকে অফিস খোলার ঘোষণা দেয় সরকার।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনের কর্মসূচি ঘিরে সহিংসতা শুরু হয় গত ১৫ জুলাই। ১৬ জুলাই ছয়জনের প্রাণহানিসহ ১৮ জুলাই থেকে ২১ জুলাই পাঁচ দিনে আন্দোলনের মধ্যে সংঘর্ষ, গুলি ও সংঘাতে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে দেড় শতাধিক মানুষের প্রাণ যায়।
গত বৃহস্পতিবার থেকে পরের দুই দিনে সেতু ভবন, বিআরটিএ ভবন, দুর্যোগ ভবন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়াম, মেট্রোরেলের দুটি স্টেশন, বিটিভি, হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজা, মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর স্টেশন, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের মহাখালী অংশ, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, পুলিশ স্টেশন, বনশ্রী পিবিআই অফিস, উত্তর সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ি, উত্তরা ও মোহাম্মদপুর কমিউনিটি, মহাখালীন ডিএনসিসি হাসপাতাল, নরসিংদী কারাগারসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এ অবস্থায় শুক্রবার মধ্যরাত থেকে কারফিউ জারি করে সরকার। সেইসঙ্গে মোতায়েন করা হয় সেনাবাহিনী। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে বলা হচ্ছে, ছাত্রদের আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে বিএনপি-জামায়াত এসব নাশকতা ঘটিয়েছে, তাদের উদ্দেশ্য ছিল সরকারের পতন ঘটানো।