কোটা আন্দোলন
নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৪, ০১:৫১ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
কোটা সংস্কারের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় নিহত ৩৪ জনের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা হিসেবে পারিবারিক সঞ্চয়পত্র ও নগদ অর্থ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার (২৮ জুলাই) সকালে গণভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
এসময় রংপুরে নিহত শিক্ষার্থী আবু সাঈদের পরিবারসহ ৩৪ জনের পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সরকারপ্রধান স্বজন হারানো পরিবারের সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, আমি আপনাদের মতোই একজন। বাবা-মা ভাই হারানো। তাই আপনাদের কষ্ট আমি বুঝি। আর আমি আপনাদের পাশে আছি। আমার চেষ্টা থাকবে এই খুনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করা।
তিনি আরো বলেন, আমাকেও প্রতিনিয়ত বাবা-মা-ভাই হারানোর বেদনা নিয়ে চলতে হয়। আমি লাশটাও দেখতে পারিনি, দেশে ফিরতে পারিনি। ৬ বছর পর দেশে এসেছি। তারপর যখন এসেছি সারাদেশ ঘুরেছি। কারণ আমার বাবা বলত দুঃখি মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে হবে। আমি সেই কাজটাই করার চেষ্টা করছি।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ১৬ জুলাই (মঙ্গলবার) সারাদেশে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে তা আরো ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ বেশি হয় ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোতে। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সহিংসতায় ২০১ জন নিহতের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে।
এ সহিংসতায় প্রথম নিহত হন রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। পরে আরো কয়েকজন শিক্ষার্থী নিহত হন। এছাড়া একাধিক পথচারী ও সাধারণ মানুষ মারা যান। এর মধ্যে রয়েছে শিশুও।
সংঘর্ষ চলাকালে তিনজন পুলিশ সদস্য এবং একজন আনসার সদস্য নিহত হয়েছেন। এসময় ১ হাজার ১১৭ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর আহত ১৩২ জন। তিনজন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রয়েছেন।
উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলনকেকেন্দ্র করে গত ১৬ জুলাই সারাদেশে বিক্ষোভ, সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। বিটিভিসহ রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি বিজিবি নামানো হয়।
এছাড়া গত ১৯ জুলাই (শুক্রবার) দিবাগত রাত ১২টা থেকে রবিবার (২১ জুলাই) সকাল ১০টা পর্যন্ত সারাদেশে কারফিউ জারি করে সরকার। এরপর অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়। যদিও প্রতিদিন এর মধ্যে কয়েক ঘণ্টা করে শিথিল করা হয় কারফিউ। পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাওয়ায় ধীরে ধীরে কারফিউ শিথিলের সময় বাড়ানো হচ্ছে।
আরো পড়ুন: ফেসবুক-টিকটক খোলা নিয়ে যা জানা গেলো