কোটা আন্দোলনে ছাত্রলীগের ৩ নেতার ভূমিকা ছিল রহস্যময়

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৪, ১১:৪২ এএম
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগের শীর্ষ তিন নেতার ‘রহস্যময়’ ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন এবং সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত শুরু থেকেই ওই আন্দোলনকারীদের প্রতি ‘সহানুভূতিশীল’ ছিলেন বলে সংগঠনটির অনেক নেতাকর্মীরা জানান। আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে এই তিন নেতার বেশকিছু পদক্ষেপ পরিস্থিতিকে আরো ‘উসকে’ দিয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিশ্বস্ত সূত্র থেকে জানা গেছে, কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলমকে তাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখার পরামর্শও দিয়েছিলেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন।
অন্যদিকে, মাজহারুল কবির শয়ন এবং সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত দুইজনেই ২০১৮ সালের কোটা আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলেন। ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক নেতাদের অনেকেই বলছেন, স্বেচ্ছায় মাঠ ছেড়ে না দিলে প্রতিটি হল থেকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বের করে দেয়া প্রায় অসম্ভব। এ ক্ষেত্রে সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নিষ্ক্রিয়তা নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। শীর্ষ নেতারা রহস্যজনক ভূমিকা পালন করেছেন। ১৬ জুলাই রাত থেকে আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা শুরু করেন। ১৭ জুলাই দুপুরের মধ্যে ঢাবির জগন্নাথ হল ছাড়া সব হল থেকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বের করে দেয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছাত্রলীগের ওপর আন্দোলনকারীদের হামলা শুরু হয় অমর একুশে হল থেকে। এরপর হামলা হয় শহীদুল্লাহ হলে। পরে একে একে সব হলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন আন্দোলনকারীরা। তবে কোনো হলেই ছাত্রলীগ প্রতিবাদ বা প্রতিরোধের চেষ্টা করেনি। আন্দোলনকারীরা একপ্রকার বিনা বাধায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন।
জানা গেছে, আন্দোলনকারীরা যখন হলে হলে হামলা করছিল, তখন নেতাকর্মীদের কোনো ধরনের নির্দেশনাই দেননি ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক। উল্টো যেসব নেতাকর্মী প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেন, তাদের হল ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দেন। নিজেরাও রাতের মধ্যেই ক্যাম্পাস ছাড়েন। ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতা অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের মূল টার্গেট ডাকসুর ভিপি হওয়া। কোটাবিরোধী আন্দোলন ‘উসকে’ দিয়ে তিনি ডাকসু নির্বাচন আদায় করতে চেয়েছিলেন।
ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, ‘ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। তাদের সম্পৃক্ততা নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত।’ আরেক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘অমর একুশে হলে হামলার সময় আমি স্পটে ছিলাম। ঝামেলা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখি সাদ্দাম ভাই নাই। এরপর যখন শহীদুল্লাহ হলে ঝামেলা হয়, তখন আমরা মধুর ক্যান্টিনে ছিলাম। ঝামেলা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখি সাদ্দাম ভাই গাড়ি নিয়ে উধাও। তিনি কোনো ঝামেলায় ছিলেন না, ছাত্রলীগকে কোনো ধরনের নির্দেশনা দেননি। প্রতিরোধের কোনো ব্যবস্থা নেননি। পুরো ছাত্রলীগকে তারা অকার্যকর করে রেখেছেন।’