পাচারকৃত অর্থ ফেরাতে সহযোগিতার আশ্বাস সুইজারল্যান্ডের

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৪, ০২:০৪ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেটো রেঙ্গলি। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দেখা করতে আসেন রাষ্ট্রদূত। পৌনে এক ঘণ্টা এই বৈঠক হয়।
বৈঠকে বর্তমান পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক অবস্থা, আওয়ামী লীগের সরকারের সময়ে সুইস ব্যাংকে পাচারকৃত অর্থ ফেরত দেয়া-আনাসহ সাংবিধানিক ও আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ আজকে সুইস অ্যাম্বাসেডর উনি এসেছেন দেখা করতে। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের রোড ম্যাপ… বাংলাদেশ কোন দিকে যাচ্ছে, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কি…. রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক সার্বিক বিবেচনায় আমাদের দেশ কোন দিকে যাচ্ছে সে বিষয়ে আমাদের মতামতটা জানতে চেয়েছেন। বিএনপির চিন্তা-ভাবনা কি ভবিষ্যতে।
মূলত বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতিসহ যে সব রাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে গেছে… যে জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে... এখান থেকে কি পথ? আমরা কি চিন্তা করছি? আর ওরা(সুইজারল্যান্ড) কি করতে পারে এই ব্যাপারে। উনারা জানতে চেয়েছে।
খসুর বলেন, যে প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনার জন্য ব্যবহার হয় সেটা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান…. এগুলো ভেঙে গেছে, খুব খারাপ অবস্থায় আছে… এগুলোকে আমরা কিভাবে রিস্টোর করতে পারি? সেখানে আমরা আলোচনা করেছি, আর্থিক খাত বলুন, রাজনীতি বলুন, নির্বাচনী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো আছে সেগুলোকে রিকভারি কিভাবে করা যায়, এগুলোর ক্যাপাসিটি বিল্ডিং কিভাবে করা যায়? প্রথমে এগুলোকে রিস্টোর করতে হবে, এগুলোকে ট্র্যাকে আনতে হবে, আনার পরে কিভাবে এগুলোকে একটা কার্যকর অবস্থানে নিয়ে আসা যায়? এগুলোর বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে আশ্বাস দিয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সাংবিধানিক যেসব প্রতিষ্ঠান আছে এগুলোর ক্যাপাসিটি বিল্ডিং করার জন্য তারা সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।
আরো পড়ুন: পরিকল্পিত ডাকাতিতে ব্যাংক খাতে বড় ক্ষতি হয়েছে
বাংলাদেশে ভবিষ্যতে রাজনীতি, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে, গণতন্ত্রকে সঠিক অর্ডারে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে যে কাজগুলো করা দরকার, যে প্রতিষ্ঠানগুলো দরকার সেগুলোতে তারা সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।
‘পাচারকৃত অর্থ ফেরাতে সহযোগিতার আশ্বাস’
আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশ থেকে আমরা বার বার বলেছি যে, ১০০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে পাচার হয়েছে। বাংলাদেশে আজকে অর্থনৈতিক অবস্থা, রিজার্ভের অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে সেটা আমরা জানি। একটা কঠিন অবস্থা… তারা(আওয়ামী লীগ সরকার) এতো টাকা পাচার করেছে যে, দেশের রিজার্ভ একেবারে তলানিতে। দৈনন্দিন জীবনে প্রত্যেকটি নাগরিক এটার অ্যাফেক্ট ফিল করতেছে… এরকম অবস্থায় চলে গেছে।
সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে যে টাকা পাচার হয়েছে তা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সুইজারল্যান্ড তাদের আগের অবস্থানে আছে… তারা বলেছে, এই টাকা ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের যেকোনো উদ্যোগতে তারা স্বাগত জানাবে এবং তারা সহযোগিতা করবে। এটা হচ্ছে একটা ভালো খবর।
তিনি বলেন, কারণ আমরা এই টাকাগুলো ফিরিয়ে আনতে হবে। বাংলাদেশের এতো সম্পদ লুণ্ঠন হয়েছে, এতো টাকা দেশের বাইরে গেছে যে, এগুলো যদি আমরা ফিরিয়ে আনতে না পারি এই অর্থনীতিকে রিকভার করা খুবই কঠিন হবে। সুতরাং এই দিকটা তাদের সহযোগিতার দিকটা আমি মনে করি, তাদের আশ্বাস আমরা পেয়েছি… নিশ্চিতভাবে তারা সহযোগিতা করবে।
এক প্রশ্নের জবাবে খসরু বলেন, বাংলাদেশের জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে… একথা আমরা ১৬/১৭ বছর ধরে বলে আসছি। অর্থাৎ জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিরা তাদের কাছে জবাবদিহি থাকবে… এটা হচ্ছে গণতন্ত্রের মূলমন্ত্র। এই জায়গায় কোনো দ্বিমত থাকার সুযোগ নাই।
আমরা বলতে চাই, এটা একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যারা এই কাজগুলো করবে। আমরা কোনো সময়সীমা তাদেরকে বেধে দেইনি… তবে একটা যৌক্তিক সময় দিয়েছি... এই যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন হবে। এটা সকলে প্রত্যাশা করে এবং যারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে আছে তারাও কিন্তু এটা বিশ্বাস করে। এখানে আমাদের সাথে তাদের কোনো দ্বিমত নেই। আমরা এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি এবং দিয়ে যাবো। কারণ দিনের শেষ তো আপনি জনগণের মালিকানা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে।