আশুলিয়ায় পুলিশের নিষ্ঠুরতা: ভ্যানে মরদেহ তুলে পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২৪, ০৬:৩৬ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভয়ংকর ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দেখা গেছে, পুলিশের একটি ভ্যানে কয়েকটি নিথর দেহ স্তূপ করে রাখা হচ্ছে। এই দৃশ্যটি সাভারের আশুলিয়ায় ঘটে যাওয়া ছাত্র-জনতার আন্দোলনের নির্মম বাস্তবতার প্রতিফলন বলে মনে করা হচ্ছে।
গতকাল (৩০ আগস্ট) শুক্রবার রাতে এই ভিডিওটি প্রথমবারের মতো ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে ঘটনাস্থল নিয়ে কিছুটা ধোঁয়াশা থাকলেও, পরে একটি নির্বাচনী পোস্টারের সূত্র ধরে সঠিক জায়গা চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, ঘটনাটি ৫ আগস্ট বিকেলের। ভিডিওতে ঢাকা উত্তরের গোয়েন্দা পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা আরাফাত হোসেনকে স্পষ্টই হেলমেট পরিহিত অবস্থায় দেখা গেছে।
এসময় ভিডিওটিতে দেখা যায়, ভ্যানে একের পর এক রক্তাক্ত মরদেহ তোলা হচ্ছে, যেগুলোর মধ্যে কয়েকটি আবার পুলিশ সদস্যরা ময়লা চাদর আর রাস্তার পাশে থাকা ব্যানারে দিয়ে ঢেকে দিচ্ছেন। চাদরের আড়াল থেকে মৃতদেহগুলোর হাত, পা এবং মাথা স্পষ্টই দেখা যাচ্ছিল। এ ঘটনায় দেশজুড়ে সারা দেশে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হাবিবুর রহমান জানান, সেই দিন পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি চালায়, যেখানে ঘটনাস্থলেই কয়েকজন মারা যান। পরে, সেই মৃতদেহগুলো একটি পুলিশ ভ্যানে তুলে তাতে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়।
জানা গেছে, মোট ৬টি মরদেহ ছিল ওই ভ্যানটিতে, যার মধ্যে ৪ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলেন, সাজ্জাদ হোসেন সজল, তানজিল আহমেদ সুজয়, বাইজিদ এবং সবরু হুমায়ুন। তবে বাকি ২ জনের পরিচয় এখনো নিশ্চিত করা যায়নি।
আশুলিয়া থানা সংলগ্ন বাইপাইল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মোফাজ্জল হোসেন জানান, ৫ আগস্ট দুপুরের পর থেকে মসজিদে কেউ আসেনি। তবে পরদিন সকালে পুড়ে যাওয়া ৬টি মরদেহের জানাজা পড়ানো হয় সেখানে।
আরো পড়ুন: জামায়েত ও বন্যার দায় নিয়ে যা জানাল ভারত
ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈন বলেন, আমি ভিডিওটি আজ সকালে দেখেছি এবং এটি এখন বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। মিডিয়ার সহযোগিতা পেলে আমরা এই ঘটনা সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব।
এই ভয়ংকর ঘটনায় পুরো দেশব্যাপী ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে, এবং মানুষ পুলিশের এই নিষ্ঠুর আচরণের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।