মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক, যেসব আলোচনা হলো

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:২০ পিএম

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক হয়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সফররত মার্কিন প্রতিনিধিদল। রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বৈঠক হয়। বৈঠকে প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন মার্কিন ট্রেজারি বিভাগের ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যান।
বৈঠকের পর ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বৈঠকের ছবি পোস্ট করে বলা হয়, ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, প্রতিষ্ঠান গঠন ও উন্নয়ন সহযোগিতার বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন আমাদের প্রতিনিধিদল। যেহেতু বাংলাদেশ আরো ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে চাইছে, যুক্তরাষ্ট্র সেই প্রচেষ্টায় সহায়তা করতে প্রস্তুত। এসময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে আজ রবিবার সকালে মার্কিন প্রতিনিধিদল অর্থ উপদেষ্টা ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, কর ব্যবস্থাপনাসহ পাচার করা অর্থ ফেরত আনার ব্যাপারে মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া আর্থিক খাত সংস্কারে নতুন করে ২০ কোটি ডলার সহায়তা চুক্তি করা হয়েছে। এছাড়া সকাল সাড়ে ৯টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করে মার্কিন প্রতিনিধিদলটি।
ইউএসএআইডির ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অঞ্জলি কৌর বলেন, বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের সময় প্রথমবারের মত যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধিদলের অংশ হয়ে আসতে পেরে ভালো লাগছে। আমরা সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। এই চুক্তির আওতায় সরকারের অগ্রাধিকার খাতে ২০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেয়া হবে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চাই। আমরা এখন চুক্তি অনুযায়ী কাজ করব। এ চুক্তি মূলত সরকারের অগ্রাধিকারমূলক কাজগুলো এগিয়ে নেয়ার জন্য।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার এবং ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) এর মধ্যে ‘ডেভেলপমেন্ট অবজেক্টিভ গ্রান্ট এগ্রিমেন্ট (ডিওএজি)’ এর ষষ্ঠ সংশোধনী স্বাক্ষরিত হয়েছে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম শাহাবুদ্দিন এবং ইউএসএআইডির মিশন পরিচালক রিড এশলিম্যান চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ২০২১-২০২৬ মেয়াদের জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং ইউএসএইডের মধ্যে ডিওএজি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এর আওতায় ইউএসএইড এর মোট ৯৫৪ মিলিয়ন ডলার দেয়ার কথা ছিল। পঞ্চম সংশোধনী পর্যন্ত ইউএসএইড ৪২৫ মিলিয়ন ডলার দিয়েছিল। এবার ষষ্ঠ সংশোধনীর অধীনে ইউএসএইড আরও ২০২.২৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে, যা সুশাসন, সামাজিক, মানবিক ও অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি এবং স্থিতিশীলতা খাতে খরচ হবে।
এর আগে, শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব ও অর্থ দপ্তরের আন্তর্জাতিক অর্থায়নবিষয়ক সহকারী আন্ডারসেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকা আসে। এই প্রতিনিধিদলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু। দিল্লি সফর শেষে তিনি একই দিন বিকেলে ঢাকায় পৌঁছেন।