ইউনূস-মোদি সাক্ষাৎ নভেম্বরে!

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি। ছবি : সংগৃহীত
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাক্ষাৎ হতে পারে নভেম্বরে, বিমসটেক সম্মেলনে। আগামী ৭ নভেম্বর সাত দেশের আঞ্চলিক জোট বিমসটেকের শীর্ষ সম্মেলন থাইল্যান্ডে হওয়ার কথা। জাতিসংঘ অধিবেশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ও সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন সম্ভাবনার কথা জানান পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নিউইয়র্কে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আমার বৈঠক হয়েছে। সর্বোচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। কারণ, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা যেদিন নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন তার আগের দিন চলে গেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। কমনওয়েলথ সম্মেলনেও তাদের সাক্ষাৎ হবে না। কারণ, ওখানে যাবেন না ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তিনি যাবেন ব্রিকসে। ব্রিকস তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্য আমাদের প্রধান উপদেষ্টাও কমনওয়েলথ সম্মেলনে যাবেন না (২১-২৬ অক্টোবর দ্বীপরাষ্ট্র সামোয়ার রাজধানীর আপিয়ায় কমনওয়েলথ সম্মেলন)।
তৌহিদ হোসেন জানান, আগামী মাসে হয়ত একটা সম্ভাবনা আছে। সে সময় বিসমটেকের সম্মেলন হবে। এখনো তারিখ চূড়ান্ত হয়নি। সম্ভাবনা আছে নভেম্বর হবে, সেখানে হয়ত দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ হবে। এছাড়া, আমরা বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করে পারস্পরিক যে উদ্বেগ আছে সেটা সমাধানের চেষ্টা করব।
নির্বাচনের রোডম্যাপ ছয় সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের পর : জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ছয় সংস্কার
কমিশনের রিপোর্টের পরে দেয়া যাবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে এবং তাদের তিন মাস সময় দেয়া হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে তারা ডিসেম্বরের শেষে অথবা জানুয়ারির শুরুতে তাদের সুপারিশগুলো দেবে। আরো কিছু স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন আছে। তখনই কিন্তু রোডম্যাপ ঠিক করা যাবে। তার আগে রোডম্যাপ ঠিক করা যাবে না।
নির্বাচন কবে হবে- এ বিষয়ে বিদেশিরা জানতে চেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবার সঙ্গে আমরা বিষয়গুলো এমনভাবে উপস্থাপন করেছি যে তাদের বেশি কিছু বলার ছিল না। আমরা তাদের প্রেক্ষাপট বলেছি। এ সরকার আসতে চায়নি এবং নিজে থেকে আসেনি।
একাত্তর ইস্যুতে পাকিস্তান দুঃখ প্রকাশ করলে সম্পর্ক আরো এগিয়ে যাবে : ১৯৭১ সালের ইস্যুতে পাকিস্তান দুঃখ প্রকাশ করলে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরো এগিয়ে যাবে বলে মনে করছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। বর্তমান সরকারের কোনো রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ নেই উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ডিসেম্বর কিংবা জানুয়ারিতে সরকারের গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর প্রস্তাব পেলে আগামী নির্বাচনের রোডম্যাপ দেয়া যাবে।
বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের রাজনৈতিক নেতাদের বিতর্কিত বক্তব্য অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, নিজেদের স্বার্থে সুসম্পর্ক রাখতে চায় বাংলাদেশ-ভারত। আগামী মাসে বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশনের (বিমসটেক) সামিটে দুই সরকার প্রধানের দেখা হতে পারে। মেডিকেল ভিসা ছাড়া আপাতত ভারত কোনো ভিসা দিচ্ছে না। শিগগিরই দেশটি সব ধরনের ভিসা চালু করবে বলেও জানান তৌহিদ হোসেন।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ অধিবেশনের সাইড লাইনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে শেখ হাসিনাকে ফেরত দেয়ার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা- এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তাকে ফেরত দেয়ার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। কেননা আরো গুরুত্বপূর্ণ অনেক আলোচনা আছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের দুই দেশের সুসম্পর্ক থাকা প্রয়োজন। এ বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি।
এ সময় পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়েও কথা বলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করলে ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্ক এগিয়ে নেয়া যাবে।