যে কারণে রূপপুর প্রকল্পকে সাদা হাতি বললেন ড. মইনুল ইসলাম

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৪৫ পিএম

গোলটেবিল বৈঠকে অর্থনীতিবিদ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম। ছবি: ভোরের কাগজ
অর্থনীতিবিদ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেছেন, রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র আওয়ামী লীগ সরকারের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক ব্যর্থতা হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। তিনি এ প্রকল্পকে ‘সাদা হাতি’ আখ্যা দিয়ে বলেন, আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি দেশের অর্থনীতিতে মারাত্মক ক্ষতি বয়ে এনেছে।
শনিবার (৫ অক্টোবর) চট্টগ্রামের হোটেল আগ্রাবাদে সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত ‘গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংলাপ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। সিজিএস দেশের প্রতিটি বিভাগে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংস্কারের অগ্রাধিকার ক্ষেত্রগুলো নিয়ে ধারাবাহিক সংলাপ পরিচালনা করছে।
ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকার দেশকে লুটপাটের আখড়ায় পরিণত করেছে। যার ফলে রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ঢুকে গেছে। তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) সংস্কার করতে হবে এবং একে একটি স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এছাড়াও নারীদের জন্য সংসদে এক তৃতীয়াংশ আসন সংরক্ষণ, স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন, এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সরাসরি ভোটের মাধ্যমে সম্পন্ন করার দাবি জানান।
সংসদ বিষয়ক গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক প্রফেসর নিজাম উদ্দিন আহমদ সংবিধান সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, নির্বাহী বিভাগের মধ্যে ভারসাম্য সৃষ্টি করতে হলে সংবিধান সংস্কার অত্যাবশ্যক। নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারের মাধ্যমেই অন্যান্য ব্যবস্থারও সংস্কার সম্ভব হবে।
সিজিএস’র নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। শেষ সরকার ব্যর্থ হলেও এটি জাতির সামগ্রিক ব্যর্থতা নয়। জনগণকে গণতান্ত্রিক দেশ গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকতে হবে এবং সকল সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
সংলাপে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন পেশাজীবী, শিক্ষার্থী, আইনজীবী, রাজনীতিবিদ ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি দূর করার এবং সংবিধানের সুষ্ঠু প্রতিফলন নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা শিক্ষার মানোন্নয়ন, গবেষণা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করা এবং কারিগরি শিক্ষার প্রসার বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামের একজন আদিবাসী প্রতিনিধি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নিষ্ক্রিয়তার সমালোচনা করেন।
আরো পড়ুন: ড. ইউনূস ও জামায়াতকে ভয়ংকর হুমকি শেখ হাসিনার
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক, শিল্প উদ্যোক্তা, অধিকারকর্মী, নারী সংগঠক ও বিভিন্ন ক্ষেত্রের পেশাজীবীরা। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সিজিএস’র নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।