অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার বক্তব্যে আরো অবাক হলাম: সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৩৫ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
২০১১ সালে জাতীয় সংসদের সামনে এক মিছিলে তখনকার বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবেদীন ফারুককে মারধরের ঘটনায় প্রথম আলোচনায় আসেন মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ। এরপর থেকে বিভিন্ন নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে তার নাম আসে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ২ মাস পার হলেও তাকে নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে।
বিক্ষোভ দমনে পুলিশ সদস্যদের গুলি ছুঁড়তে নির্দেশ দেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সমালোচনায় আছেন হারুন। কারণ, তিনি এখনো গ্রেপ্তার হননি। এছাড়া তার অবস্থান নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা। গত ২৯ আগস্ট খবর পাওয়া যায়, রাজধানী উত্তরার একটি বাসায় আছেন হারুন। এমন সংবাদের ভিত্তিতে ওই বাসা ঘিরে রাখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে পরে তাকে সেখানে পাওয়া যায়নি। বর্তমানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে। তবে এ বিষয়টিও নিশ্চিত নয়।
এর মধ্যেই অজ্ঞাত স্থান থেকেই একটি বেসরকারি টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে কথা বলেছেন বহুল আলোচিত-সমালোচিত পুলিশ কর্মকর্তা। তাতে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান, আন্দোলন দমনে নিজের ভূমিকাসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। হারুন দাবি করেছেন-তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তাকে মোয়া বানানো হচ্ছে।
ওই সাক্ষাৎকারে সাবেক ডিবি হারুন বলেন, আমাকে ঘিরে নানা ধরনের গুজব ছড়ানো হচ্ছিল। তখনো আমি চুপ ছিলাম। অন্তর্বর্তী সরকার যখন বলল, সবাইকে কাজে যোগ দিতে। তখন আমি গত ৮ আগস্ট ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আমাকে তখনই যোগ দিতে নিষেধ করেন। আমাকে নিরাপদ স্থানে থাকতে বলেন। আমি যোগদান করতে গেছি। কিন্তু যোগ দিতে পারিনি।
তিনি বলেন, ২ দিন পর দেখি আমার নামে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি, কমিশনার ও আমাকে হুকুমের আসামি করা হয়। তখন আমি অবাক হলাম। আমি তো ডিবিতে কাজ করি। ডিবির কাজ হলো মামলা তদন্ত করা। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নির্দেশ দিলে আমরা গ্রেপ্তার করি। মোহাম্মদপুরে তো আমি গিয়ে মারামারি করিনি, এটা তো আমার কাজ না। অতিরিক্ত কমিশনার কি মারামারি করতে যায়? আর ডিএমপিতে কমিশনারের পরে ছয়জন অতিরিক্ত কমিশনার। আমি হলাম ৬ নম্বর কমিশনার। সেখানে আমার নামে যখন মামলা হলো তখন তো একটু…।
পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আবার বলা হলো মামলা হলেও সমস্যা নেই। ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকলে গ্রেপ্তার করা হবে না। আমি মনে করলাম ভালো কথা। ভাবলাম জয়েন করব। পরের দিন দেখলাম একজন উপদেষ্টা বললেন, যেসব পুলিশ কর্মকর্তা জয়েন করেননি আপনারা তাদের ধরে নিয়ে আসেন। আমি তখন আরো অবাক হলাম। আমি যদি চাকরিতে জয়েন না করি তাহলে প্রসিডিং করবে। আর যোগ দিলে আমাকে দিয়ে জোর করে চাকরি করাবেন। এটা শোনার পরে আমার মনে হলো রিস্ক। মানে আমার লাইফ ঝুঁকির মধ্যে। এখন মানুষকে ধরে যেভাবে পেটানো, ডিম মারা হচ্ছে। যদি আমাকে…। আগে তো বাঁচতে হবে। আমি ইচ্ছাকৃতভাবে একটু চুপ আছি।