শেখ হাসিনা কি দালাই লামার মতো ভারতে ‘ট্রাভেল ডকুমেন্ট’ পেয়েছে?

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৪২ পিএম

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত ‘ট্রাভেল ডকুমেন্ট’ দিয়েছে বলে সম্প্রতি বেশ আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। এই বিষয়ে দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমে গুঞ্জন ছড়ালেও, ভারতের পক্ষ থেকে এখনো কোনো সরকারি ঘোষণা আসেনি। তবে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন দাবি করেছেন, ভারত থেকে ‘ট্রাভেল ডকুমেন্ট’ পাওয়ার ফলে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না।
আগামী ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শেখ হাসিনা ভারতে চলে যান। তার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল হওয়ায় এখন কীভাবে তিনি ভারতে অবস্থান করছেন, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। ব্রিটেনে বসবাসরত আওয়ামী লীগ নেতা জানিয়েছেন, ভারতের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে ‘ট্রাভেল ডকুমেন্ট’ দেয়া হয়েছে, যা দিয়ে বিশ্বের যেকোনো দেশে ভিসা নিয়ে যাত্রা করা সম্ভব।
ভারতে তিব্বতি শরণার্থীদের বিশেষ ‘ট্রাভেল ডকুমেন্ট’ দেয়া হয়, যার মাধ্যমে তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সফর করেন। শেখ হাসিনাও এই ধরনের ডকুমেন্ট পেয়েছেন কি না, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য নেই। তবে ভারতের সাবেক হাইকমিশনার গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, যদি ভারত সত্যিই শেখ হাসিনাকে ‘ট্রাভেল ডকুমেন্ট’ দেয়, তাহলে এটি একেবারেই অবাক হওয়ার মতো কিছু নয়। এমন পরিস্থিতিতে এটি খুবই সাধারণ পদক্ষেপ।
ডকুমেন্টের সুবিধা এবং তা কীভাবে কাজ করে
ভারতের পাসপোর্ট বিভাগের মতে, ‘আইডেন্টিটি সার্টিফিকেট’ (আইসি) বা ‘ট্রাভেল ডকুমেন্ট’ মূলত তিব্বতি শরণার্থীদের জন্য ব্যবহৃত হয়। এই ডকুমেন্ট দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সফর করা সম্ভব হয়। ভারতের সাধারণ পাসপোর্ট গাঢ় নীল রঙের হলেও ‘আইসি’ হলুদ রঙের বুকলেট আকারে প্রদান করা হয়। তেমনি, যদি শেখ হাসিনাকে এই ধরনের ডকুমেন্ট দেয়া হয়, তবে তিনি যে কোনো দেশের ভিসা সহজেই পেতে পারেন এবং বিভিন্ন দেশে সফর করতে পারেন।
ভারতের নিরাপত্তায় শেখ হাসিনা
ব্রিটেন থেকে আওয়ামী লীগ নেতা দাবি করেছেন, আপাতত শেখ হাসিনা এবং তার বোন শেখ রেহানা ভারতে আছেন এবং সেখানে তাদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে, ভারতের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো পরিষ্কার ঘোষণা আসেনি।
ভারত কি তবে রাজনৈতিক আশ্রয় দিল?
ভারত কি শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য নেই। তবে ভারতের সাবেক হাইকমিশনার দাবি করেছেন, ভারতের এই পদক্ষেপ নিতান্তই প্রত্যাশিত। তারা এমন পরিস্থিতিতে এটি কার্যকর ব্যবস্থা হিসেবে নিয়েছে।
এদিকে, ঢাকা এবং দিল্লির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, কোনো ধরনের ট্রাভেল ডকুমেন্ট বা বিশেষ সুবিধা দেয়ার কারণে বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের উপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে না।
আরো পড়ুন: জানা গেলো আওয়ামী লীগ নেতাদের সর্বশেষ অবস্থান!
এদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই গুঞ্জনের মধ্যে প্রকৃত সত্য বের করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও সংশ্লিষ্ট দেশের মধ্যে আরো আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।