বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ৫ জনের মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৬ পিএম

ফাইল ছবি
বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ঘটে যাওয়া সহিংসতায় নিহত পাঁচজনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গত ৪ আগস্ট জেলা বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত এই সহিংসতায় গুলি, ককটেল বিস্ফোরণ এবং ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহতদের বিষয়ে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুকান্ত সাহা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে এই নির্দেশ দেন।
নিহতদের মধ্যে রয়েছেন— বগুড়া সদর উপজেলার চক আকাশতারা গ্রামের রিকশাচালক কমর উদ্দিন খান বাঙ্গি, শিবগঞ্জ উপজেলার পীরব ইউনিয়নের স্কুলশিক্ষক সেলিম হোসেন, সদর উপজেলার এরুলিয়া ইউনিয়নের রিকশাচালক আবদুল মান্নান, কসাই রিপন ফকির এবং গাবতলী উপজেলার শ্রমিক দল নেতা জিল্লুর সরদার।
মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ধারণের জন্য সদর থানায় দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা কবর থেকে মরদেহ উত্তোলনের অনুমতি চান। পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৪ আগস্ট বগুড়া শহরের নবাববাড়ি সড়কে ডায়াবেটিস হাসপাতালের সামনে আসামিদের গুলিতে গুরুতর আহত হন কমর উদ্দিন বাঙ্গি, যিনি পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
একই দিন শহরের সাতমাথায় সেলিম হোসেনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়, এবং কাঁঠালতলা এলাকায় আবদুল মান্নান গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এছাড়া ঝাউতলা এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে কসাই রিপন ফকির এবং জিল্লুর সরদারও আহত হয়ে পরে মারা যান।
নিহতদের স্বজনরা তাদের লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করেন। পরে, ঘটনার পর পৃথক হত্যা মামলা দায়ের করে নিহতদের পরিবার, যেখানে আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এসব মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ কয়েকজন স্থানীয় নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
বগুড়া কোর্ট ইন্সপেক্টর মোসাদ্দেক হোসেন নিশ্চিত করেছেন যে, হত্যার প্রকৃত কারণ নির্ধারণে লাশ উত্তোলনের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মরদেহ উত্তোলন এবং ময়নাতদন্তের পর যথাযথ মর্যাদায় পুনরায় দাফনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর একটি আনন্দ মিছিলে অংশগ্রহণকারী নবম শ্রেণির ছাত্র সাব্বির হোসেনের মরদেহও ৭১ দিন পর উত্তোলন করা হয়। নিহত হওয়ার পর ময়নাতদন্ত ছাড়া তার মরদেহ দাফন করা হয়েছিল।
সদর থানার ওসি এসএম মঈনুদ্দীন জানিয়েছেন, ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের পর দ্রুত সময়ে মরদেহগুলো উত্তোলন করা হবে এবং ময়নাতদন্তের পর পুনরায় দাফন করা হবে।